বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন,  গত ১৫ বছরে পণ্যের উৎপাদন, চাহিদা, জিডিপিসহ সব ক্ষেত্রে মিথ্যা পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে। যার প্রভাব মোকাবিলা করতে হচ্ছে বর্তমান সরকারকে।

আজ রোববার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁয়ে বণিক বার্তা আয়োজিত পলিসি কনক্লেভে তিনি এ কথা বলেন। এ আলোচনার মূল বিষয় ছিল ‘খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারে বিভিন্ন পণ্যের যে দাম রয়েছে তাতে দেশেও দাম কমার কথা। দেশে পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত আছে। দাম বাড়ার কারণ নেই। আশা করি, সামনেও দাম বাড়বে না।

বিগত সময়ে বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে প্রতিযোগিতা কমিশন ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, কমিশনকে পুরোপুরি স্বাধীন করে দেওয়া হবে। যাতে বাজারে কেউ একচেটিয়া ব্যবসা করতে না পারে, প্রতিযোগিতা বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড না ঘটে। তাদের কাজে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।

বাজার ব্যবস্থা ঠিক করতে স্বল্প নয়, দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন উল্লেখ করে শেখ বশুর উদ্দিন বলেন, ধান সংগ্রহে সরকারি সংগ্রহ সীমিত করা দরকার। অভ্যন্তরীণ মজুদ যাতে ভালো থাকে। সেজন্য সরকারি সংগ্রহ আমদানি নির্ভর হওয়া উচিত। তাহলে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এবং দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

দেশের সব খাতে অনিয়ম হয়েছে অভিযোগ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয় শেখ হাসিনার নামে একটা পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া দরকার। কারণ, বায়তুল মোকাররমের খতিবের যদি পালিয়ে যাওয়া লাগে, তাহলে বুঝতে হবে কী পরিমাণ ধ্বংস করা হয়েছে সবগুলো খাত।

তিনি বলেন, বিগত সময়ের নীতিমালাগুলো ধনী শ্রেণিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য হয়েছে। ভোক্তা বা সাধারণ মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য নীতি গ্রহণ হয়নি। বিগত ১৫ বছর দেশে উল্লেখযোগ্য কোনো বিনিয়োগ হয়নি। বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান কীভাবে হবে? তাহলে কার কাছ থেকে কর আদায় করব?

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ব্যাংকগুলোকে গত ১৫ বছরে ক্রিমিনাল ইনস্টিটিউট হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংককে ধ্বংস করা হয়েছে। এই ব্যাংকে দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। এক ব্যাংকে এক পরিবার থেকে দু-তিনজন পরিচালক হয়েছেন।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) ধ্বংস করা হয়েছে ১৫ বছর ধরে। টিসিবির ভর্তুকি পণ্যের উপকারভোগীদের সংখ্যা ১ কোটি। শুনতে ভালোই লাগছে। কিন্তু যখন প্রাথমিকভাবে যাচাই করা হয়েছে, দেখা গেছে, ৪৩ লাখ কার্ডধারী ভুয়া। দেখা গেছে, অনেকের বিল্ডিং আছে। তারাও কার্ড নিয়েছে। এক ঘরে ২-৩ জন নিয়েছে। এখন মনে হয় এই ৪৩ লাখ কার্ড যাচাই করলে আরও ২০-২৫ লাখ ভুয়া পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা টিসিবির টেন্ডারে অংশ নেন না। আমি অনুরোধ করছি আপনারা অংশ নিন। টিসিবির ব্যবসায় যুক্ত হোন, সওয়াব কামান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট ব ণ জ য উপদ ষ ট ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট বিশ্বমঞ্চে দেশের সম্ভাবনা তুলে ধরার অসামান্য উদ্যোগ

দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ঢাকায় গত সোমবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু হয়েছে। ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট–২০২৫’ শীর্ষক এ বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এ সম্মেলন আজ বুধবার শেষ হবে।

এ সম্মেলন নিয়ে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন (বিহা)–এর সভাপতি খালেদ উর রেহেমান বলেছেন, এ সম্মেলন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ইনভেস্টমেন্ট সামিট। ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট–২০২৫’ বিশ্বমঞ্চে দেশের সম্ভাবনা তুলে ধরার এক অসামান্য উদ্যোগ, যা নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের হসপিটালিটি ও ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকা শক্তি। এ খাত শুধু বিদেশি পর্যটক বা ব্যবসায়ীদের স্বাগত জানাচ্ছে না; বরং দেশের বেসরকারি খাত থেকে উন্নয়নে সরাসরি অবদান রাখছে। বিআইএইচএর আওতাধীন সব হোটেল সদস্য বর্তমানে বাংলাদেশে আসা সব বিদেশি অতিথি, বিনিয়োগকারী ও পর্যটকদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। এ হোটেলগুলো দেশের সম্মান ও আস্থা বৃদ্ধি করছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিবেশকে আরও দৃঢ় করছে। তবে এই খাতে টেকসই ও ব্যাপক অগ্রগতির জন্য সরকারের সহানুভূতিশীল সহযোগিতা, বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালা ও প্রণোদনা প্রয়োজন। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে হলে এই খাতের প্রতি সরকারের দৃষ্টি ও সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। এই সম্মেলন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। বিশ্বকে এখনই আমন্ত্রণ জানাতে হবে—বাংলাদেশে আসুন, আমাদের সম্ভাবনা দেখুন, আমাদের অংশীদার হোন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ