‘উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিরাপদ খাদ্য অপরিহার্য’
Published: 2nd, February 2025 GMT
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিরাপদ খাদ্য অপরিহার্য বলে একটি ওয়েবিনার থেকে বক্তারা বলছেন।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি মোকাবিলায় নিরাপদ খাদ্য’ শীর্ষক এ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজনটির সহযোগিতায় ছিল গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘খাদ্য হোক নিরাপদ, সুস্থ থাকুক জনগণ’।
এতে বলা হয়, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অভাবে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়ছে। বিশ্বে প্রতি বছর এক কোটিরও বেশি মানুষ উচ্চ রক্তচাপের কারণে মারা যায় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এসব মৃত্যুর অধিকাংশই স্বাস্থ্যকর খাদ্যবিষয়ক নীতির মতো বিভিন্ন ধরনের নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাবারে লবণের পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি আঁশযুক্ত খাবার ও পরিমিত পরিমাণে শাকসবজি গ্রহণ করা আবশ্যক।
ওয়েবিনারে জানানো হয়, সর্বশেষ ‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে, ২০২২' এর তথ্যানুযায়ী ৩৭ শতাংশ মানুষ খাবারের সাথে লবণ গ্রহণ করে এবং ১৩ শতাংশ মানুষ মাত্রাতিরিক্ত লবণযুক্ত ফাস্ট ফুড খেয়ে থাকে। এতে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ক্রমাগত বাড়ছে।
ওয়েবিনারে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) ড.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন বলেন, “উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী সবজি ও বাদামসহ অন্যান্য অপ্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি করে খেতে হবে। একই সাথে লবণ, চিনি এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট পরিহার করতে হবে।”
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, “অতিরিক্ত লবণ, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও রেড মিট পরিহার করার পাশাপাশি জীবনাচরণে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।”
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, “নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে জনসচেতনতার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইন বা নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।”
প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞার কো-অর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ ওয়েবিনারে অংশ নেন।
ঢাকা/হাসান/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র পদ খ দ য পর হ র
এছাড়াও পড়ুন:
ন্যূনতম সংস্কারের জন্য ধৈর্য ধরে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমরা চাই নির্বাচনের জন্য একটি সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হোক। পাশাপাশি নূন্যতম যে সংস্কারগুলো না হলে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত।”
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফেনীর পরশুরামের বল্লামুখা বাঁধ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “নির্বাচনের ব্যাপারে চিন্তার ভিন্নতা থাকতেই পারে। আমরা মনে করি, এমন একটি নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন যে নির্বাচনে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে প্রত্যেক ভোটার তার ভোট দিতে পারবেন। পাশাপাশি প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ভোটও নিশ্চিত করতে হবে। সেটি দেশে এবং প্রবাসে।
আরো পড়ুন:
ধোঁকাবাজ রাজনীতিকদের দিয়ে দেশের পরিবর্তন সম্ভব নয়: শফিকুর রহমান
নির্বাচনের আগেই বিচার করতে হবে: সাদ্দাম
সরকার পতনের আন্দোলনে প্রবাসীদের বড় অবদান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই আন্দোলনে ও দেশ গড়ায় প্রবাসী ভাইদের অবদান অস্বীকার করতে পারব না। তাদের বিশাল অবদান রয়েছে। এজন্য আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন বা পঙ্গু হয়েছেন তাদের ন্যায় আমরা প্রবাসীদের কাছেও ঋণী। সবমিলিয়ে পুরো জাতির কাছেই আমরা ঋণী।”
বিভিন্ন দাবিতে অভ্যুত্থানে আহতদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, “যাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার জন্য আজকে আমরা এমন একটি পরিবেশ পেয়েছি, তাদের প্রতি সম্মান রেখে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। তার মধ্যে শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সরকার ও জনগণ মিলে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।”
ফেনীর বন্যায় দলের কর্মতৎপরতা উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা তখনও এসেছিলাম। একটি দল হিসেবে আমাদেরও সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারপরও যতটুকু পেরেছি আমরা করেছি। এখনো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।”
তিনি বলেন, “শুধু এই বেড়িবাঁধ নয়, এখানে পুরো নদীজুড়ো যে ব্লকগুলো দেওয়া হয়েছিল সেগুলো পড়ে গেছে। সেখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। যদি দুর্নীতি না হতো, বছর বছর যে বাজেট হয়েছে তা কাজে লাগতো তাহলে মানুষের দুঃখ দূর হয়ে যেতো। অতীতে যারা এ অপকর্ম করেছে তারাও ফল ভোগ করবে।”
জামায়াতের আমির বলেন, “ভবিষ্যতে আমরা এমন সরকার চাই, যাদের গ্রাম থেকে শুরু করে পার্লামেন্টে দায়বদ্ধতা থাকবে। তাদের হাতগুলো দুর্নীতি থেকে মুক্ত থাকবে এবং জনগণের আমানতের খেয়ানত হবে না। তাহলেই উন্নয়নের জন্য দেশের যে সম্পদ ব্যয় হবে, তা কাজে লাগবে। দেশের চেহারাও বদলে যাবে। দেশ মাথা উঁচু করে করে দাঁড়াবে।”
এর আগে ফুলগাজীর আনন্দপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ শ্রাবণের কবর জিয়ারত করেন জামায়াতের আমির। পরে ফেনী পৌরসভার সুলতানপুর এলাকার এক হিন্দু পরিবারকে বসতঘর উপহার দেন তিনি।
এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম, কুমিল্লা মহানগরীর আমির কাজী দীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও সাবেক ফেনী জেলা আমির অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নানসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/সাহাব/মাসুদ