নেদারল্যান্ডসের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল আগামী ১০ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফর করবে। এই সফরের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের সাথে ব্যবসায়িক সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা।

প্রতিনিধিদলে থাকবে নেদারল্যান্ডস সার্কুলার টেক্সটাইল ট্রেড মিশনে ১৮টি ডাচ কোম্পানিসহ নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, পোশাক ব্র্যান্ড, বিনিয়োগকারী এবং সার্কুলার ফ্যাশন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা।

নেদারল্যান্ডস সার্কুলার টেক্সটাইল প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে আয়োজিত এটি বাংলাদেশে প্রথম বাণিজ্য মিশন। বাংলাদেশি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে এই বাণিজ্য মিশন প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, এই বাণিজ্যিক সফরের আয়োজক বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাস এবং নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি (আরভিও)। তাছাড়া সহযোগী হিসাবে রয়েছে এক্সপোর্ট পার্টনার, ক্লিন অ্যান্ড ইউনিক, বিজিএমইএ এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই)।

বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন বলেন, ‘‘বিশ্বব্যাপী পোশাক বাজারে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে স্বীকৃত। টেক্সটাইল খাতটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিকশিত হয়েছে। সার্কুলারিটিতে বিনিয়োগ এবং সবুজ কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্প টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নেদারল্যান্ডস মনে করে, বাংলাদেশে এই খাতের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে এবং সেজন্য সার্কুলার টেক্সটাইল প্রোগ্রাম চালু করেছে। বাংলাদেশের পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত ব্যবধান কমাতে এবং শক্তিশালী ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে এই বাণিজ্য মিশন একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘এই প্রোগ্রামের লক্ষ্য হলো ব্যবসায়িক সহযোগিতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, উদ্ভাবনী অনুশীলনের পাইলট করা এবং আন্তঃসীমান্ত সংলাপের মাধ্যমে টেক্সটাইল ভ্যালু চেইনে সার্কুলার অনুশীলনগুলোকে প্রতিষ্ঠায় সক্ষমতা তৈরি করা। যাতে টেক্সটাইল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি হয়। রিসাইক্লিং, ট্রেসেবিলিটি প্রযুক্তি এবং সার্কুলার ডিজাইনে ডাচ উদ্ভাবনগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রয়োগ করা যেতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের রয়েছে বৃহৎ আকারে উৎপাদন সক্ষমতা এবং স্থানীয় রিসাইক্লিং মডেলসমূহ, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’

সফরকালে প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) দ্বারা আয়োজিত ৬ষ্ঠ সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম (এসএএফ) ২০২৫-এ অংশগ্রহণ করবে। সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম আয়োজনের লক্ষ্য বাংলাদেশকে দায়িত্বশীল সোর্সিংয়ে নেতৃস্থানীয় হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় উদ্ভাবনকে উৎসাহিত ও প্রসারিত করা।

বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্য নিয়ে প্রতিনিধিদলটি বিজিএমইএ এবং সাভার, গাজীপুর এলাকায় অবস্থিত পোশাক ও টেক্সটাইল কারখানাসমূহ পরিদর্শন করবে।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

সাড়ে ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলো আমদানিকৃত ৭৪ গাড়ি

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বিদেশ থেকে আমদানি করা ৭৪টি মূল্যবান গাড়ির ঠিকানা হলো রি-রোলিং মিল। ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ভাঙারি হিসেবে গাড়িগুলো কেটে প্রতি কেজি ২৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি করে দিলো চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমতি সাপেক্ষে উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে  বিক্রি করা হয়েছে স্ক্র্যাপ করা গাড়িগুলো।

জানা গেছে, নিলামে অংশ নেয় চট্টগ্রামের ১৫টিরও বেশি রি-রোলিং মিল। ৫৮টি লটে ৭৪টি গাড়ি নিলামে বিক্রির জন্য প্রতি টনের ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছিল ৫৩ হাজার টাকা। কিন্তু নিলামে দর ওঠে ২৪ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত। অবশ্য, ১৩ হাজার টাকা থেকেই শুরু হয়েছিল ডাক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে  চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ৭৪টি গাড়ির কাটা টুকরো বিক্রি হয়েছে। প্রতি টনের ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছিল ৫৩ হাজার টাকা।

সূত্রমতে, গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরেই স্ক্র্যাপ করতে কাটা হয়েছিল এই ৭৪টি গাড়ি। মামলাসহ বিভিন্ন জটিলতায় গাড়িগুলো আগেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল বলে দাবি চট্টগ্রাম কাস্টমসের।

চট্টগ্রাম কাস্টমস জানায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিলাম না হওয়ার কারণে বন্দর ইয়ার্ডে পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। চুরি হয়ে যায় গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ। চট্টগ্রাম বন্দরে ১৫ বছর ধরে পড়ে ছিল আমদানি করা ১২১টি দামি গাড়ি। দীর্ঘ সময় পড়ে থাকায় সেসব গাড়ির আয়ু শেষ হয়ে গেছে। অনেকগুলোর মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি অনুযায়ী, এত পুরনো গাড়ি নিলামে বিক্রির সুযোগ নেই। এ অবস্থায় বিআরটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কাস্টমস নিলাম কমিটি ২০২২ সালে ১২১টি গাড়ি ধ্বংসের সুপারিশ করে।

বিকল্প কোনো পথ না থাকায় আমদানি করা গাড়িগুলো কেটে স্ক্র্যাপ হিসেবে কেজি দরে নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় কাস্টমস। কারণ শেডে থাকা ওই গাড়িগুলোতে বিস্ফোরণ বা দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি রয়েছে। প্রথম দফায় ৭৪টি গাড়ি কেটে স্ক্র্যাপ হিসেবে নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি হলে বাকি ৪৬টি গাড়িও কাটা হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার (নিলাম) মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, মামলাসহ বিভিন্ন জটিলতায় গাড়িগুলো আগেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। এজন্য এনবিআরের অনুমতি নিয়ে গাড়িগুলো স্ক্র্যাপ আকারে বিক্রি করা হয়েছে।

এদিকে, মূল্যবান ৭৪টি গাড়ি ভাঙারি হিসেবে বিক্রি করা নিয়ে বিডারদের অভিযোগের শেষ নেই। তারা বলেন, শর্তারোপের মাধ্যমে শুধুমাত্র রি-রোলিং মিলগুলোকেই উন্মুক্ত নিলামে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।

বিএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ