তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি সরকার মানবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা
Published: 2nd, February 2025 GMT
শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, রাজধানী ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি অযৌক্তিক। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের এ দাবি সরকার মেনে নেবে না।
রোববার পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
ড.
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমি মনে করি এই মুহূর্তে রাজশাহী কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা উচিত। কারণ এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো কলেজ।’
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘তিতুমীর কলেজের অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে ফিরে যেতে চায়। তারা জনদুর্ভোগ চায় না।’ জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রাখতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধও করেন তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষ উপদ ষ ট ত ত ম র কল জ ত ত ম র কল জ উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঘটা করে অভিযান, দু’দিন পর ফের চালু অবৈধ ইটভাটা
ভাটাগুলো অবৈধ। এর পরও চলছে ইট প্রস্তুতকরণের সব আয়োজন। শ্রমিকদের কেউ মাটি ভাঙছে, কেউ ইট তৈরি করছে। আবার কেউ ব্যস্ত চুল্লির আগুন জ্বালাতে। এ চিত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের সাথী ও খান ব্রিকসে। দেখে বোঝার উপায় নেই; সাত দিন আগেই এই ইটভাটায় অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
১৬ এপ্রিল নাচোলে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় তিনটি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। বায়ুদূষণ করার অপরাধে সাথী ব্রিকসকে ৩ লাখ টাকা, খান ভাটাকে ২ লাখ, আলিম ব্রিকসের মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানাসহ ভাটার কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। অভিযানের দু’দিন পরই সাথী ও খান ব্রিকস চালু করা হয়েছে।
ভাটা দুটির শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রশাসন কৌশলী অভিযান চালিয়েছে। অভিযানের সময় দুটি ভাটার মূল অংশ অক্ষত রাখা হয়। শুধু চিমনির পাশের সারি সারি সাজানো ইটগুলো ক্রেন দিয়ে এলোমেলো করা হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় পানি দিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। প্রশাসনের এ সহায়তায় মালিকরা আবারও ভাটা সচল করতে পারছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সাথী ব্রিকসের ম্যানেজার জানান, অভিযানের সময় কোনো রকমে চিমনিগুলো রক্ষা করতে পেরেছি। চুল্লিতে কোনো রকমে আগুন দিয়ে মজুত রাখা ইট পোড়ানো হচ্ছে। এগুলো শেষ হলেই ভাটা বন্ধ রাখা হবে। একই কথা বলেন খান ভাটার মালিক।
এ উপজেলার কাজলা গ্রামের মতিউর রহমান ও একরামুল বলেন, তিনটি ইটভাটায় ম্যাজিস্ট্রেট ও র্যা বের সহায়তায় পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালান। তারা যাওয়ার পরদিনই সাথী ও খান ব্রিকস চালু হয়েছে। অবৈধ ভাটাগুলো আমাদের ফসল ও আমবাগানের ক্ষতি করছে। কাঠ পোড়ানোর ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে বাড়িতে ভাত পর্যন্ত খেতে পারি না।
কৌশলী অভিযানের এ চিত্র শুধু নাচোলে নয়; চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, ভোলাহাট ও শিবগঞ্জ উপজেলারও। নাচোলে আটটি ইটভাটা রয়েছে। কোনোটিরই পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। শিবগঞ্জে ৩০টির বেশি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। গত ছয় মাসে সদর উপজেলায় ছয়টি, শিবগঞ্জে চারটি; ১৭ এপ্রিল ভোলাহাটে পাঁচটি ও নাচোলে তিনটি ভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানার পর বন্ধের নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয় মালিকপক্ষকে।
অভিযানের কিছুদিন পরই শিবগঞ্জে তিনটি, সদরে চারটি এবং নাচোলে দুটি ইটভাটা ফের সচল হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে– সম্পূর্ণ ধ্বংসের পর কীভাবে এত অল্প সময়ে ভাটাগুলো সচল হয়।
কাগজ-কলমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১১৩টি ভাটার মধ্যে ৯৩টিই অবৈধ। গত ৮ মাসে অভিযান চালানো হয়েছে মাত্র ১৮টিতে। কাগজ-কলমের বাইরেও ২০টির বেশি ইটভাটা রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে এসব ভাটা চালু করা হয়েছে। গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে এ বছরের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১৭টি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এসব ভাটা থেকে জরিমানা আদায় হয়েছে ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। অভিযানের পর এসব ভাটা তদারকিতে দেখা যায়নি প্রশাসনের লোকজনকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর উপজেলার এক ভাটার মালিক জানান, তাদের এলাকার চারটি ভাটায় এক দিনেই অভিযান চালায়। জরিমানা করা হয় ২ লাখ টাকা। পরে প্রশাসনের পাঠানো তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে প্রত্যেক মালিক আরও ২ লাখ টাকা দেওয়ার পর ভাটা চালুতে মৌন সম্মতি মেলে। অনেক মালিক অভিযানের ভয়ে আগেই ওই ব্যক্তিকে টাকা দিয়েছেন। তবে কোন অফিসের লোক এসে টাকা নিয়ে গেছেন– জানতে চাইলে জবাব দেননি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবু সাঈদ বলেন, অভিযানে কোনো কৌশল অবলম্বন করা হয়নি। ১৭টি ভাটাই সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আবার কার্যক্রম চলছে, শুনলাম। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হবে। প্রশাসনের কেউ টাকা নিয়ে ভাটা চালুতে সহায়তা করেছেন– এমন অভিযোগও সত্য নয়।
শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর রোড বাজার গ্রামের শাহিন আলি জানান, ঘটা করে দাদনচক এলাকার দুটি ভাটায় অভিযান চালানোর এক সপ্তাহ পর ভাটাগুলো আবার সচল হয়েছে। বিকল্পভাবে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের শিবগঞ্জ শাখার যুগ্ম সম্পাদক মামুন অর রশিদ জানান, জেলার সিংহভাগ ভাটা অবৈধভাবে চলছে। অভিযানও চলছে। অভিযানের ক’দিনের মাথায় আবার চালু হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, শুষ্ক মৌসুমে ভাটাগুলো কাঠ পুড়িয়ে ইট প্রস্তুত করল দেদার। বর্ষা মৌসুমে এমনিতেই ভাটাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে লোক দেখানো এসব অভিযানের মানে কী?