ঝালকাঠির রাজাপুরে ফাঁকা গুলি ছুড়ে সুপ্তি জুয়েলার্সের মালিক গোপাল কর্মকারসহ দুজনকে কুপিয়ে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার  ছিনতাইচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা সদরের দক্ষিণ মাথা এলাকার কামার পট্টিতে এ ঘটনা ঘটে। 

গোপাল কর্মকার রাজাপুর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। 

ভুক্তভোগী গোপাল কর্মকার জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে মোটরসাইকেল করে বাসায় ফিরছিলেন। তার সঙ্গে রতন নামে আত্মীয় ছিলেন। তারা সদরের বাজারের দক্ষিণ মাথা এলাকার কামার পট্টিতে পৌঁছালে হেলমেট ও কালো জ্যাকেট পরা কয়েকজন যুবক তাদের মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। তাদের বাধা দিতে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান গোপাল ও রতন। তাদের গায়ে মোটা সোয়েটার থাকায় আঘাত গুরুতর হয়নি। আশপাশের লোকজন চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে সঙ্গে থাকা দুটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যাতে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিল। দ্রুত লোকজন চলে আসায় পকেটে থাকা টাকা ও স্বর্ণ ভর্তি ব্যাগ নিতে পারেনি। 

জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপজেলা সভাপতি সঞ্জয় কর্মকার জানান, গোপালের ওপরে আগেও একবার আক্রমণ হয়েছিল। এ ঘটনায় উপজেলার স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্কে বিরাজ করছে। 

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিটিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রাজস্ব আহরণে আমাদের ওপর চাপ বাড়ছে: এনবিআর চেয়ারম্যান

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আহরণে আমাদের ওপর চাপ বাড়ছে। রাজস্ব বাড়াতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের যৌক্তিকভাবে কর বাড়াতে হবে। বাজেট লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, এবার তেমনটি হবে না। সিগনিফিকেন্ট বাজেট হবে। দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব বাড়ানোর বিকল্প নেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সম্মেলন কক্ষে প্রাক বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম চেম্বারের পক্ষ থেকে এনবিআরকে আয়কর বিষয়ে ১৯টি, ভ্যাটের ওপর ৪০টি এবং শুল্ক সংক্রান্ত ৫৫টি প্রস্তাব দেওয়া হয়। 

তিনি বলেন, ‘এবারের বাজেট হবে ব্যবসাবান্ধব বাজেট। বাজেটকে জনবান্ধব করতে ব্যবসায়ীসহ সকলের মতামত নেওয়া হচ্ছে, যার প্রতিফলন পাওয়া যাবে বাজেটে। আগামী বাজেটে ঘাটতি থাকবে কিন্তু যাতে মূল্যস্ফীতি না হয় সেই দিকেও লক্ষ্য রাখা হবে। আর রাজস্ব আদায়ে যৌক্তিকভাবে বাড়ানো হবে করহারও। মার্কিন শুল্ক আরোপের ফলে দেশের পোশাকখাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। ব্যবসায়ীরা যাতে এনবিআর অফিসে ঘুরতে না হয় সেজন্য সবকিছু অটোমেশন করা হচ্ছে। এখন সিঙ্গেল উইন্ডোর মাধ্যমে এক লাখ ৬০ হাজার সার্টিফিকেট অনলাইনে প্রদান করা হয়েছে। আয়করের মতো ভ্যাটও যেন ঘরে বসে দেয়া যায় সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। আগামী বাজেটে ভ্যাট হার যৌক্তিকীকরণ, ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ট্যাক্স রেট কমানো, ট্যাক্সনেট বৃদ্ধি ও রিফান্ড ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হবে।’ 

মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘প্রশাসনিক জটিলতা সহজীকরণ করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য অটোমেশনে জোর দেওয়া হচ্ছে বেশি। কোনো কাজ করতে কোথাও যাতে যেতে না হয় সে লক্ষ্যেই কাজ করছি আমরা। আমি চাই ব্যবসায়ীরা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকবে। অনলাইনেই প্রয়োজনীয় কাজ হয়ে যাবে। এর ফলে এবার অনলাইনে ১৫ লাখ ৩০ হাজার অনলাইন রিটার্ন পেয়েছি। ব্যবসাবান্ধব করতে এনবিআরকে অটোমেশন করা হচ্ছে।’  

তিনি বলেন, ‘কর প্রদানে আমরা এরইমধ্যে অনেকদূর এগিয়ে গেছি। এখন কর দিতে কোনো ব্যাংকে যেতে হবে না। এর ফলে কমিশন খরচ হবে না। সরকারি কোষাগারে টাকা জমানো হবে সরাসরি। ভ্যাট ও আয়করে অডিট সিলেকশনে ব্যক্তি জড়িত থাকবে না এমন কাজ করছি আমরা। এর ফলে মাঝখানে কেউ প্রতারণা করার সুযোগ পাবে না। যারা ব্যবসা বাণিজ্য করছেন, দেশের জন্য কর্মসংস্থান করছেন তারাই রিয়েল হিরো। সরকার ১৫ লাখ মানুষকে চাকরি দিয়েছে। বাকি অনেক বড় অংশের চাকরি কিন্তু বেসরকারি খাতে।’ 

চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি সরওয়ার জামাল নিজাম, চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু তাহের, রাঙামাটি চেম্বারের মামুনুর রশিদ, উইম্যান চেম্বার সভাপতি আবিদা মোস্তফা, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহসভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী প্রমুখ।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, এবার বাজেটে আমাদের প্রত্যাশা বেশি। রপ্তানিবান্ধব বাজেট চাই আমরা। আমরা রপ্তানি করে দেশ সমৃদ্ধ করতে চাই, কর্মসংস্থান করতে চাই। এ সময় তারা অন্যান্য দেশের তুলনায় পণ্য রপ্তানিতে বিমান ভাড়া কয়েকগুণ বেশি, বিভিন্ন খাতে এখনও ভ্যাটের পরিমাণ বেশিসহ নানা ব্যাপারে অভিযোগ তথ্য তুলে ধরেন। ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণ ও রপ্তানি বাড়াতে গ্রহণযোগ্য উদ্যোগ নেওয়া দাবিও জানান ব্যবসায়ীরা। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ