বিগত সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত সকল পুলিশ সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় শিক্ষা অধিকার চত্বর থেকে চাকরিচ্যুত পুলিশের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। 

এ সময় প্রতিনিধি দলে ছিলেন- চাকরিচ্যুত ইন্সপেক্টর দুলাল সাগর, এস আই ফারহান সাগর, এস আই মামুন, সিরাজুল হক, এএসআই সাইফুল আলম, কনস্টেবল আরাফাত ও কনস্টেবল তানিয়া আক্তার। 

চাকরিচ্যুত পুলিশের দাবিগুলো হলো: 

১.

বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে অন্যায়ভাবে প্রায় ২২০০ পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের মনে চাকরি হারানোর আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এরই ফলস্বরূপ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে পুলিশ বাহিনীর কিছু সিনিয়র দানবদের অবৈধ আদেশ পালন করে চাকরি বাঁচাতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও গণহত্যার মতো অপরাধ করতে বাধ্য হয়। 

২. স্বৈরাচারী সরকারের আমলে পুলিশ বাহিনীর বেশিরভাগ সিনিয়র কর্মকর্তা পুলিশ বাহিনীকে ভয়ঙ্কর দানবে পরিণত করতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে চাকরিচ্যুত করেছে।

৩. বিভাগীয় মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে ন্যায় সঙ্গত কোনপ্রকার প্রসিডিউর অনুসরন করেনি। তদন্তকারী কর্মকর্তা, তদন্ত,

৪.মিথ্যা সাক্ষ্য গ্রহণ সহ সকল কিছুতেই তাদের পক্ষের একতরফা নীতি অনুসরণ করেছে।

তারা এমনভাবে মামলা সৃজন করেছে যেন, আদালত থেকেও কোনভাবে বিবাদী নিজেকে নির্দোষ প্রমান করতে না পারে।

৫.বিজ্ঞ আদালত হতে ০১ রায়, ০২ রায়, ০৩ রায় পাওয়ার পয়েও আমাদেরকে চাকরিতে পূণর্বহাল করেনি।

৬.স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল ও অন্যান্য অনুমোদনহীন হাসপাতাল থেকে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে নিরীহ পুলিশ সদস্যদেরকে চাকরিচ্যুত করেছে। বেশিরভাগ চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য ঐদিনই ঢাকা মেডিকেল ও পিজি হাসপাতাল থেকে ডোপ টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিলেও তা গ্রহণ করেনি।

৭. ডোপ টেস্টে যারা মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়েছে বা যারা স্বৈরাচারী সরকারের লোক ছিলেন তাদেরকে চাকরিতে বহাল রেখেছেন। আর যারা টাকা দিতে পারেনি তাদেরকে চাকরিচ্যুত করেছেন।

৮। যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে কমেন্ট করেছেন তাদেরকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করেছেন।

৯। বিগত স্বৈরাচারী দোসরদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে কিছু পুলিশ সদস্য কে চাকরিচ্যুত করতে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মাদক ও অস্ত্র দিয়ে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দিয়েছেন।

১০। পুলিশ বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তা নিজেদের পরিচিত লোকের মাধ্যমে মিথ্যা, ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে অসংখ্য পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করেছেন।

১১। ২০০৭ সালে সাবেক আইজিপি জনাব নূর মোহাম্মদ স্যার বিভাগীয় মামলার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন শাস্তি প্রদানের প্রজ্ঞাপন জারী করেন কিন্তু স্বৈরাচারী সরকারের দোসরার আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ছোট-খাটো অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি চাকরিচ্যুত করেছেন।

১২। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার অব. এম সাখাওয়াত হোসেন স্যার মানবিক বিবেচনায় সকল পুলিশ সদস্যকে পুনর্বহালের আদেশ প্রদান করার পরেও স্বৈরাচারী সরকারের নিয়োজিত দোসররা তা বাস্তবায়নে বাধা প্রদান করছেন।

১৩। অনেক পুলিশ সদস্যকে চাকরিচ্যুত করার পর যদি বিজ্ঞ আদালতে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চায়। তা হলে গুম খুনের হুমকি দিয়েছেন। এসবের ভয়ে অনেক পুলিশ সদস্য আদালতে মামলা দায়ের করতে পারেনি।

১৪ অনেক পুলিশ সদস্যকে জোর পূর্বক অথবা স্বাক্ষর জাল করে চাকরি হতে সেচ্ছায় অবসর বা বাধ্যতা মূলক অবসর।

ঢাকা/রায়হান/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ কর চ য ত কর ছ ন চ কর চ য ত প ল শ প ল শ সদস য সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

যে ৪ কারণে সালমানের ‘সিকান্দার’ ব্যর্থ

চলতি বছরের বলিউডের অন্যতম প্রত্যাশিত চলচ্চিত্র মনে করা হচ্ছিল সালমান খানের ‘সিকান্দার’। ঈদে ধুমধাম করে মুক্তি পায় সিনেমাটি। এ আর মুরুগাদস পরিচালিত অ্যাকশনধর্মী ছবিকে ঘিরে দর্শকের প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। অগ্রিম টিকিট বিক্রিতেও সে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু প্রথম দিনের বাজে শুরু সিনেমার ভাগ্য ভালো ফল বয়ে আনতে পারেনি। প্রথম দিনে ‘সিকান্দার’ আয় করেছিল মাত্র ২৬ কোটি রুপি। যা শুধু সালমানের নয়, বর্তমানে বলিউডের যেকোনো বড় ছবির ক্ষেত্রে বাজে শুরু। বক্স অফিসের এ ফল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে, কেউ কেউ মনে করছেন আয়োজনের ঘাটতি, আবার কেউ মনে করছেন পাইরেসির কারণেই সুবিধা করতে পারেননি বলিউড ভাইজান। ঠিক কী কারণে ‘সিকান্দার’ সুবিধা করতে পারেনি, তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বলিউড ভাইজানের ছবি, তা-ও আবার ঈদের সময়। ‘সিকান্দার’ নিয়ে তাই প্রত্যাশা বেশি হওয়া স্বাভাবিক। তবে তা যে এভাবে হোঁচট খাবে, কেউ তা ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করতে পারেনি। সিনেমাটি শুধু ভক্তদের পাশাপাশি হতাশ করেছে ভারতীয় চলচ্চিত্র বিশ্লেষকদেরও। বক্স অফিসে এ ভাটার নেপথ্যে কিছু কারণ জানিয়েছে চলচ্চিত্র বিশ্লেষকেরা।
দুর্বল চিত্রনাট্য ও বিষয়বস্তু
‘সিকান্দার’ সিনেমার বিষয়বস্তুতে সমস্যা ছিল মনে করছেন একাধিক চলচ্চিত্র বিশ্লেষক। তাই সালমান খানের উপস্থিতিও এটিকে বাঁচাতে পারেনি। চলচ্চিত্র–বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ তরণ আদর্শ বলেন, ‘আমার মনে হয়, ভরাডুবির মূল কারণটি ছিল চিত্রনাট্য ও বিষয়বস্তু। বিষয়বস্তু এতটাই দুর্বল ছিল যে প্রাথমিক কৌতূহলের পরেও সিনেমাটির ভাগ্যে ভালো কিছু আসেনি। প্রথম দিন ভালো ছিল, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন ছিল ঈদ, তাই এটি ব্যবসার যথেষ্ট সুবিধা পেয়েছিল, কিন্তু এরপরই তা হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। ছবিটির আয় ক্রমে নিম্নমুখী হচ্ছিল।’
হল–ফেরত দর্শকের খারাপ রিভিউ
সালমানের সিনেমা নিয়ে আমজনতার মধ্যে একটা উৎসব দেখা যায় সব সময়। অনেকেই মনে করেন এরাই সালমানের পাওয়ার হাউস। ভাইজানের সিনেমা মুক্তি মানেই গেইটি গ্যালাক্সিসহ সিঙ্গেল স্ক্রিনের সামনে উৎসব, দর্শকদের উচ্ছ্বাস। তবে এবারের চিত্র অবাক করেছে জি৭ মাল্টিপ্লেক্স (গেইটি গ্যালাক্সি) ও মারাঠা মন্দির সিনেমার নির্বাহী পরিচালক মনোজ দেশাইকে। ইটাইমসকে তিনি বলেন, ‘এটি অন্য কোনো ছবির অনুলিপি ছিল, আর মনে হয়েছে নায়িকাকে তাড়াতাড়ি হত্যা করা হয়েছিল। বিশ্বাস করেন, আমি ছবির একটিও ফ্রেম দেখিনি। কিন্তু দর্শকেরা হল থেকে বের হয়ে আমাকে এমনই বলেছেন, যা আমি আপনাকে বলছি।’
পাইরেসি
পাইরেসির কারণেও সিনেমাটির ব্যবসায় ভাটা পড়েছে বলে মনে করছেন মনোজ দেশাই। তিনি বলেন, ‘সালমানের জন্য মানুষ সিনেমা হলে আসে, কিন্তু পাইরেসির কারণে অনেকেই হলে আসেননি। এখন ওটিটির সময়, মানুষের মনে এই মনোভাব তৈরি হয়েছে যে আমরা ঘরে বসে ছবিটি দেখব।’
গানগুলো আলোচনা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে
সিনেমায় ‘সিকান্দার নাচে’, ‘জোহরা জাবিন’ ও ‘হাম আপকে বিনা’র মতো ভালো গান ছিল, যেগুলো ছবিটিকে হয়তো ব্যর্থতা থেকে কিছুটা বাঁচাতে পারত। তবে ভুলে যাওয়ার মতো গানের কথা, দুর্বল সংগীত আয়োজন আলোচনা তৈরি করতে পারেনি। তবে প্রয়োজনীয় প্রচারণা হলে এগুলোও তুরুপের তাস হতে পারত বলে মনে করছেন অনেকেই।
১০ দিনে ভারতীয় বাজার থেকে সিকান্দার আয় করেছে মাত্র ১০৬ কোটি রুপি। মুক্তির প্রথম দিন ২৬ কোটি রুপি আয় করেছিল সিনেমাটি। পরদিন ঈদের দিন আয় করেছিল ২৯ কোটি রুপি। তবে এপ্রিলের প্রথম দিন থেকেই আয় নিম্নমুখী হতে থাকে। এদিন সিনেমাটি আয় করেছিল ১৯ কোটি রুপি। এপ্রিলের ৪ তারিখ সিনেমার আয় নেমে আসে মাত্র ৩ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে। এ সিনেমার মধ্য দিয়ে  প্রথমবার সালমানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় তারকা রাশমিকা মান্দানা। ‘গজনি’খ্যাত নির্মাতা এ আর মুরুগাদসের সঙ্গেও এর মাধ্যমে প্রথমবার কাজ করেন সালমান। সিনেমাটি আরও অভিনয় করেছেন সত্যরাজ, শরমন যোশী, কাজল আগারওয়াল, প্রতীক বাব্বর, অঞ্জিনী ধাওয়ানসহ আরও অনেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ