দুর্বার রাজশাহীকে আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি ক্রীড়া উপদেষ্টার
Published: 2nd, February 2025 GMT
বিপিএল শেষ হলেও পারিশ্রমিক বিতর্কে এখনও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দুর্বার রাজশাহী। বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও খেলোয়াড়দের বেতন পরিশোধ করেনি ফ্র্যাঞ্চাইজিটি, এমনকি তাদের দেওয়া চেক দুবার বাউন্স হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাজশাহীর স্বত্বাধিকারীর সঙ্গে বৈঠক করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। সেখানে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, 'কথা বলার সময় শেষ, এবার যদি পারিশ্রমিক পরিশোধ না করা হয়, তাহলে রাজশাহীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
বিপিএল শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজশাহীর পারিশ্রমিক বিতর্ক চলছিল। দেশি ক্রিকেটাররা ২৫ শতাংশ বেতন পেলেও বাকি টাকা আটকে ছিল। ফ্র্যাঞ্চাইজির দেওয়া চেক জমা দেওয়ার পর বাউন্স হয়, ফলে ক্রিকেটাররা এখনও তাদের প্রাপ্য বুঝে পাননি। এমনকি বিদেশি ক্রিকেটাররাও পুরো পারিশ্রমিক পাননি। এরই মধ্যে পারিশ্রমিক না পেয়ে এক ম্যাচে অংশ নেননি রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা।
রাজশাহীর মালিকের সঙ্গে আলোচনার পর ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছি, পারিশ্রমিক পরিশোধ না করলে আর কোনো আলোচনা হবে না। তখন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
বিসিবির সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন স্বীকার করেছেন, রাজশাহীকে ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে নেওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ যাচাই-বাছাই হয়নি। তিনি বলেন, 'আমরা সম্ভবত রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজিকে অন্তর্ভুক্ত করার সময় তাদের আর্থিক সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতা যথাযথভাবে পর্যালোচনা করিনি। যার ফলে এখন এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে।'
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ রাজশাহীর কার্যক্রমকে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, 'রাজশাহী যা করেছে, তা একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।'
বিপিএলের জন্য পর্যাপ্ত ফ্র্যাঞ্চাইজির অভাব থাকায় রাজশাহীকে নেওয়া হয়েছিল বলে জানান বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, 'আমাদের হাতে খুব বেশি অপশন ছিল না। তিনটি দল গত বছর ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি দেয়নি, ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বাকি ছিল। এটা কোনো নতুন সমস্যা নয়, ১১ বছর ধরেই এমন হচ্ছে। আমরা স্বীকার করছি, পারিশ্রমিক ইস্যুতে ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আগে বিপিএলের ভাবমূর্তি খুব ভালো ছিল, তাও বলা যাবে না। আমরা এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর বিপিএলকে আরও ভালো করব।'
টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়ার দিনও রাজশাহী আবারো পারিশ্রমিক পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার যদি ফ্র্যাঞ্চাইজিটি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল ফ র য ঞ চ ইজ ব যবস থ উপদ ষ ট পর শ ধ ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু আলোচনা এখনও বহু দূর
পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা নতুন মোড় নিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই আবারও ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ‘বিশ্বের জন্য হুমকি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। অন্যদিকে ইরান বলছে, তারা পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে চুক্তিতে আগ্রহী, তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে। খবর বিবিসি ও এএফপির।
২০১৮ সালে ট্রাম্প এককভাবে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে পুনরায় ইরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর জবাবে ইরানও চুক্তির কিছু শর্ত লঙ্ঘন করে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখে।
মার্কিন রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম সম্প্রতি ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, ইরানের কাছে অন্তত ছয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরির মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুত রয়েছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও সমর্থন করেছে তাঁর দাবি। যুক্তরাষ্ট্র আশঙ্কা করছে, ইরান যদি এ কর্মসূচি চালিয়ে যায়, তবে তা পুরো মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আঞ্চলিক যুদ্ধের সূত্রপাত করতে পারে। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের প্রতি আবারও তাঁর পুরোনো সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি বেছে নিয়েছেন। নতুন নিষেধাজ্ঞায় অন্যান্য দেশকেও ইরানের সঙ্গে তেল বাণিজ্য বন্ধে চাপ দিচ্ছে তাঁর প্রশাসন। একই সঙ্গে কূটনৈতিক উদ্যোগ হিসেবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খোমেনির কাছে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠান ট্রাম্প। তবে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তেহরান যদি পরমাণু চুক্তি না করে, তবে দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর সামরিক ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির জবাবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানিয়েছেন, তারা আলোচনা করতে প্রস্তুত। তবে তিনি শর্ত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক হুমকি থেকে সরে এসে সম্মানের ভিত্তিতে চুক্তির পথে এগোতে হবে। আরাগচি বলেন, ‘আমরা সম্মান পেলে, সম্মান ফিরিয়ে দেব।’ ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, খুব শিগগির ওমানে মার্কিন ও ইরানি প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা শুরু হতে পারে। ইরান জানিয়েছে, এ বৈঠক হবে পরোক্ষ আলোচনা।
তবে ট্রাম্প তা সরাসরি আলোচনায় রূপ দিতে চাচ্ছেন। ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সম্পূর্ণ বিলুপ্তি, হিজবুল্লাহ ও হুতিদের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি জানানো হতে পারে। তবে সম্পূর্ণ বিষয়টিকে ঘিরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল।