বর্তমান সময়ে একটানা বসা কাজের জন্য অনেকেই  পিঠে ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। এর ফলে কাজের ক্ষমতাও কমতে থাকে। তখন সোজা হয়ে দাঁড়ানো খুব সমস্যার হয়ে যায়। তবে পিঠে ব্যথা খুব সহজেই ঘরোয়া  কিছু প্রতিকার দিয়ে কমাতে পারেন। যেমন-

বরফ ব্যবহার : পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা হলে, পিঠ ফুলে গেলে দ্রুত একটা বরফের প্যাক লাগাতে পারেন। একটি তোয়ালেতে বরফ মুড়ে পিঠে লাগাতে পারেন। এতে খুব সহজেই ব্যথা কমবে। 

বসা: পিঠের ব্যথা কমাতে সঠিকভাবে বসতে হবে। অনেক সময় বসার ভুলের কারণেও এমন সমস্যা হয় অনেকের। পিঠে চাপ পড়ার কারণে পিঠে ব্যথা হয়। এ কারণে সোজা হয়ে বসুন।

ম্যাসেজ : পিঠে নিয়মিত ম্যাসেজ করবেন। তাহলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। পিঠে ব্যথা সহজে হয় না। এমনকি গায়ে, হাত, পায়ের ব্যথাও দূর হবে। 

রসুন: পিঠে ব্যথা দূর করতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই থেকে তিন কোয়া রসুন খাবেন। 

ব্যায়াম : নিয়মিত ব্যায়াম করলে পিঠে ব্যথা হবে না। এমনকি পেটেরও ব্যায়াম করলে পিঠে ব্যথা হয় না। তাই যখন ব্যায়াম করবেন পিঠ, পেট দুটোরই ব্যায়াম একসঙ্গে করবেন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে মানসিকভাবেও আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন। তবে হার্টের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। 

হলুদ ও মধু : প্রতিদিন দুধে হলুদ ও মধু দিয়ে খেতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা খেলে বড় রোগের ঝুঁকি কমবে। ব্যথা কমবে। বাতের ব্যথা থাকলে তা কমবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমস য করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

যেদিকে তাকাই, শুধু অবিশ্বাস: ভারতের বিভিন্ন শহরে ভয়ে ঘরবন্দী কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা

ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের জলন্ধরের সরু ও লোকজনে ঠাসা গলিপথ ধরে হাঁটছিলেন আসিফ দার (নামের প্রথম অংশ পরিবর্তিত)। হঠাৎই তাঁর মনে হলো সব চোখ যেন তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছে। সে তাকানোটা বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না।

আসিফ বলেন, ‘আমার মনে হলো ভিড়ের মধ্যে থাকা প্রত্যেকের চোখে যেন প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে।’

আসিফ ও তাঁর এক বন্ধু একটি এটিএম বুথের সামনে দাঁড়ানোর পর দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাঁদের কাছে এসে পরিচয় জানতে চান। তাঁরা ভয় পেয়ে সেখান থেকে দৌড়ে পালান।

ঘটনাটি ২২ এপ্রিলের। ওই দিনই (গত মঙ্গলবার) বিকেলে কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন।

কাশ্মীরের ঘন জঙ্গল ও পাহাড়ে হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। আর এর মধ্যে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত কাশ্মীরিরা বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁরা কট্টর ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলোর হয়রানি ও হুমকি-ধমকির শিকার হচ্ছেন। এমনকি সহপাঠীদের হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন তাঁরা।

পরদিন ২৩ এপ্রিল বুধবার সকালে দুধ কেনার জন্য আবারও বাড়ি থেকে বের হন আসিফ। তিনি বলেন, ‘তিনজন আমাকে দেখে ইসলামবিদ্বেষী কথাবার্তা ও গালিগালাজ করতে শুরু করলেন। তাঁদের একজন চিৎকার করে বললেন, “ও কাশ্মীরি, সবকিছু ওদের কারণেই হয়েছে।”’

পেহেলগামে হামলার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়। তবে হামলার কিছু সময় পর দায় স্বীকার করেছে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাকামী অখ্যাত সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। এ ঘটনায় ভারতের ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন আরও উন্মোচিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে এবং আগের দাবির জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করেছে।

কাশ্মীরের ঘন জঙ্গল ও পাহাড়ে হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। আর এর মধ্যে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত কাশ্মীরিরা বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁরা কট্টর ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলোর হয়রানি ও হুমকি-ধমকির শিকার হচ্ছেন। এমনকি সহপাঠীদের হয়রানিরও শিকার হচ্ছেন তাঁরা।

কে না কে হামলা চালিয়েছে, আর সে জন্য আমাদের মূল্য চুকাতে হচ্ছে।আসিফ দার, কাশ্মীরি শিক্ষার্থী

উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব থেকে শুরু করে উত্তর প্রদেশ—দেশজুড়ে বিভিন্ন বাড়ির মালিকেরা কাশ্মীরি ভাড়াটিয়াদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বাধ্য করছেন। দোকানিরা কাশ্মীরের মানুষদের সঙ্গে লেনদেন করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। বাড়িতে ফেরার জন্য চেষ্টারত বেশ কয়েকজন কাশ্মীরি শিক্ষার্থীকে বিমানবন্দরেই ঘুমাতে হচ্ছে।

আসিফ বলেন, ‘কে না কে হামলা চালিয়েছে, আর সে জন্য আমাদের মূল্য চুকাতে হচ্ছে।’

‘যেদিকেই তাকাই, শুধু অবিশ্বাস’

কাশ্মীর—একটি বিরোধপূর্ণ ভূখণ্ড। ভারত ও পাকিস্তান—দুই দেশই এর অংশবিশেষ শাসন করে। তবে উভয় দেশ এর পূর্ণাঙ্গ মালিকানা দাবি করে থাকে।

পেহেলগামের ভয়ানক হামলার পর ভারত দাবি করেছে, পাকিস্তান ‘পরোক্ষভাবে’ এর সঙ্গে জড়িত। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা শুধু কাশ্মীরি জাতীয়তাবাদকে নৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন দিয়ে থাকে। তাদের দাবি, পাকিস্তানের জড়িত থাকার ব্যাপারে ভারত এখনো কোনো প্রমাণ হাজির করেনি।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক মারাত্মক রকমের খারাপ হয়েছে। ভারত ইতিমধ্যে সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে। দুই দেশই পরস্পরের নাগরিকদের বহিষ্কার করছে, একে অপরের রাজধানী থেকে কূটনৈতিক কর্মীর সংখ্যা কমাচ্ছে।

মঙ্গলবারের হামলার পর ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কাশ্মীরিরা অন্যদের ক্ষুব্ধ আচরণের শিকার হচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কাশ্মীরি আল–জাজিরাকে বলেছেন, ভারতের অন্তত সাতটি শহরে তাঁরা নিজেরাই নিজেদের ঘরবন্দী করে রেখেছেন। এমনকি অনলাইনে অর্ডার বা ক্যাব বুকিং দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন; যেন কারও সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ না হয়।

পেহেলগামে হামলার পর সতর্ক পাহারায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • প্রত্যন্ত গ্রামে ক্লিনিক খুলে ‘এমবিবিএস ডাক্তার’ পরিচয়ে চিকিৎসা, এক বছরের কারাদণ্ড
  • ‘শি জিনপিং ফোন করেছিলেন’ ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • শি জিনপিং ফোন করেছিলেন, ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • ভুলে সীমানায় পা, বিএসএফ সদস্যকে আটক করল পাকিস্তান
  • বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি বাতিলের দাবি বিজেপি নেতার
  • যেদিকে তাকাই, শুধু অবিশ্বাস: ভারতের বিভিন্ন শহরে ভয়ে ঘরবন্দী কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা