অর্থাভাবে অনিশ্চয়তায় মিমির মেডিকেলে ভর্তি
Published: 2nd, February 2025 GMT
সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামে দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মিমি আক্তার। কিন্তু অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা।
বাবা আফসার উদ্দিন সরকার একজন দিনমজুর। মিমি আক্তারের পরিবারে খেয়ে না খেয়ে দিন চলে। এই অবস্থায় মেডিকেল কলেজে ভর্তির খরচ বহন ও পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া অসম্ভব। তাই দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে পরিবারের সবাই।
তিন ভাই বোনের মধ্যে মিমি আক্তার সবার বড়। মিমি স্থানীয় নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি ও দিঘলিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে ছিলেন। আর এবার মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। মেধা তালিকায় ২ হাজার ১১৬তম স্থান পেয়েছেন মিমি আক্তার।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট এক খণ্ড জমিতে তাদের পৌত্রিক বসত বাড়ি। সেখানে দুটি ছোট ছোট টিনের ঘর রয়েছে। রাতে খোলা বারান্দায় থাকেন বাবা ও মা। ঘরে থাকেন দুই বোন।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামে নিজ বাড়িতে মা–বাবা, ভাই–বোনের সঙ্গে মিমি আক্তার
মিমি আক্তার বলেন, “ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হব; কিন্তু সাইন্সে পড়লে অনেক খরচ, অসচ্ছলতার কারণে সাইন্সে পড়তে চাইনি। তারপরও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে স্কুল-কলেজের স্যারদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় পড়েছি। মা বলতেন পড়াশোনাই তোমাদের প্রধান হাতিয়ার। মা-বাবার বড় সন্তান আমি। তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে পড়েছি। এখন মেডিকেলে ভর্তি হওয়া ও পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নেওয়া পরিবারের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই ভর্তি হতে পারব কি না, সেই দুশ্চিন্তায় আছি।”
বাবা আফসার উদ্দিন সরদার বলেন, “মেডিকেলে ভর্তি করতে ২৫ হাজার টাকা লাগবে। ছোট দুটি কাঠের গাছ ছিল তা বিক্রি করে ১২ হাজার টাকা জোগাড় করেছি। ভর্তিতে তো আরো ১৩ হাজার লাগবে। ভর্তি করেও বা কীভাবে খরচ চালাব? তাই ভর্তি করতে পারব কি না, মেয়েকে পড়াতে পারব কি না, তাই ভাবছি।”
নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোল্যা মোশারেফ হোসেন বলেন, “মিমি আক্তার খুব মেধাবী একজন ছাত্রী। স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের সহযোগিতায় তার পড়াশোনা চলেছে। কিন্তু মেডিকেলে তো অনেক খরচ। সব মিলে ওই পরিবারের পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। সুযোগ পেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার মতো মেধাবী মেয়ে মিমি। তার পড়াশোনার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ।”
ঢাকা/শরিফুল/ইমন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ড ক ল কল জ পর ব র র
এছাড়াও পড়ুন:
ভাগ্য ফেরাতে কিনছেন ‘ব্যাংকের মাটি’
ভাগ্য ফেরাতে মানুষ কত কিছুই না করে। যদিও সফলতা পেতে কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই। তবু কেউ কেউ খোঁজেন সহজ কোনো পথ। দ্বিতীয় শ্রেণির এই মানুষদের কথা ভেবে চীনে ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন কিছু সুযোগসন্ধানী। দেশটির বড় ব্যাংকগুলোর বাইরে থেকে মাটি সংগ্রহ করে অনলাইনে বিক্রি করছেন তাঁরা। এই মাটি নাকি ফেরাতে পারে ভাগ্য, এনে দিতে পারে সম্পদ—এমন বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে।
‘সৌভাগ্যের’ এই মাটিরও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দাম। যেমন একজন অনলাইন বিক্রেতা চীনের পাঁচটি বড় ব্যাংক—ব্যাংক অব চায়না, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না, অ্যাগ্রিকালচার ব্যাংক অব চায়না, চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাংক ও ব্যাংক অব কমিউনিকেশনসের আশপাশের মাটি বিক্রি করেন। সবচেয়ে কমে ৩ ডলারে পাওয়া যায় এই মাটি, সর্বোচ্চ বিক্রি হয় ১২০ ডলারে।
একজন বিক্রেতা বলেন, বড় পাঁচটি ব্যাংকের বাইরে থেকে তাঁরা নিজেরা মাটি সংগ্রহ করেন। সাধারণত এ কাজ করা হয় রাতে। ওই বিক্রেতা বলেন, বিশ্বাস করা হয়, এই মাটি সম্পদ বাড়িয়ে দেয় এবং অশুভ শক্তিকে দূরে রাখে। তবে এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয় বলেও স্বীকার করেন তিনি।
মাটি যে ‘খাঁটি’, তা প্রমাণের জন্য অনেক অনলাইন বিক্রেতা মাটি খোঁড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। এমনই এক ভিডিওতে একটি ব্যাংকের প্রবেশমুখে মাটির কনটেইনার হাতে একজনকে দেখা যায়। আরেক ভিডিওতে একজন বিক্রেতাকে গ্রাহকদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আপনার জন্য মাটি খুঁড়ছি।’
এই মাটির একজন ক্রেতার সঙ্গেও কথা হয়েছে দেশটির একটি গণমাধ্যমের। পরিচয় প্রকাশ না করে ওই ব্যক্তি বলেন, তাঁর ব্যবসা রয়েছে। আশা করছেন এই মাটির মাধ্যমে ব্যবসার আরও আয়–উন্নতি হবে। তাঁর অনেক বন্ধুবান্ধবও ব্যাংকের মাটি কিনেছেন।
মাটি কিনে ভাগ্য বদলের বিষয়টি নিয়ে হাসিঠাট্টা করতেও ছাড়ছেন না অনেকে। যেমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন লিখেছেন, ‘আমার বাড়ি তো ব্যাংকের পাশেই। তাহলে আমার ভাগ্যটা বদলাচ্ছে না কেন?’