সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামে দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মিমি আক্তার। কিন্তু অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা। 

বাবা আফসার উদ্দিন সরকার একজন দিনমজুর। মিমি আক্তারের পরিবারে খেয়ে না খেয়ে দিন চলে। এই অবস্থায় মেডিকেল কলেজে ভর্তির খরচ বহন ও পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া অসম্ভব। তাই দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে পরিবারের সবাই। 

তিন ভাই বোনের মধ্যে মিমি আক্তার সবার বড়। মিমি স্থানীয় নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি ও দিঘলিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে ছিলেন। আর এবার মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। মেধা তালিকায় ২ হাজার ১১৬তম স্থান পেয়েছেন মিমি আক্তার। 

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট এক খণ্ড জমিতে তাদের পৌত্রিক বসত বাড়ি। সেখানে দুটি ছোট ছোট টিনের ঘর রয়েছে। রাতে খোলা বারান্দায় থাকেন বাবা ও মা। ঘরে থাকেন দুই বোন।

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামে নিজ বাড়িতে মা–বাবা, ভাই–বোনের সঙ্গে মিমি আক্তার

মিমি আক্তার বলেন, “ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হব; কিন্তু সাইন্সে পড়লে অনেক খরচ, অসচ্ছলতার কারণে সাইন্সে পড়তে চাইনি। তারপরও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে স্কুল-কলেজের স্যারদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় পড়েছি। মা বলতেন পড়াশোনাই তোমাদের প্রধান হাতিয়ার। মা-বাবার বড় সন্তান আমি। তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে পড়েছি। এখন মেডিকেলে ভর্তি হওয়া ও পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নেওয়া পরিবারের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই ভর্তি হতে পারব কি না, সেই দুশ্চিন্তায় আছি।”

বাবা আফসার উদ্দিন সরদার বলেন, “মেডিকেলে ভর্তি করতে ২৫ হাজার টাকা লাগবে। ছোট দুটি কাঠের গাছ ছিল তা বিক্রি করে ১২ হাজার টাকা জোগাড় করেছি। ভর্তিতে তো আরো ১৩ হাজার লাগবে। ভর্তি করেও বা কীভাবে খরচ চালাব? তাই ভর্তি করতে পারব কি না, মেয়েকে পড়াতে পারব কি না, তাই ভাবছি।”

নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোল্যা মোশারেফ হোসেন বলেন, “মিমি আক্তার খুব মেধাবী একজন ছাত্রী। স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের সহযোগিতায় তার পড়াশোনা চলেছে। কিন্তু মেডিকেলে তো অনেক খরচ। সব মিলে ওই পরিবারের পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। সুযোগ পেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার মতো মেধাবী মেয়ে মিমি। তার পড়াশোনার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ।”

ঢাকা/শরিফুল/ইমন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ড ক ল কল জ পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

সামরিক বিমানে করে ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে ফেরার পর থেকেই অবৈধ অভিবাসন ও অনুপ্রবেশের মতো ইস্যু নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারই অংশ হিসেবে এবার সামরিক বিমানে করে ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।  

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক পরিবহনে করে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসী ফেরত পাঠানোর মধ্যে সবচেয়ে দূরত্ব গন্তব্য হলো ভারত।

সোমবার একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, “সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে করে ভারতীয় অভিবাসীদেরকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।”

এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণার মধ্যে অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল অবৈধ অভিবাসী সমস্যা সমাধান। নির্বাচনে জয়লাভের পর সেই প্রতিশ্রতি রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। 

এরইমধ্যে, কিউবার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত মার্কিন নৌঘাঁটির অধীনের পরিচালিত কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে বন্দিশালা সম্প্রসারণে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন এ বন্দিশালায় অবৈধ অভিবাসীদের রাখার কথা জানান। 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে সহায়তা নিচ্ছে সামরিক বাহিনীর। আটক অবৈধ অভিবাসীদের রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে সামরিক ঘাঁটি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “সামরিক বাহিনীর সি-১৭ বিমানে করে অভিবাসীদের একটি ফ্লাইট ভারত রওনা দিয়েছে। যেটি পৌঁছাতে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগবে।”

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনও টেক্সাসের এল পাসো এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়াগোতে আটক ৫ হাজারের বেশি অভিবাসীকে বহিষ্কারের জন্য ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত সামরিক বিমানে করে অভিবাসীদের গুয়াতেমালা, পেরু এবং হন্ডুরাসে ফেরত পাঠানো হয়েছে। 

সামরিক বিমানে করে অভিবাসী ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া যদিও ব্যয়বহুল। রয়টার্স জানিয়েছে, গত সপ্তাহে গুয়াতেমালায় একটি সামরিক বিমানে করে অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে জনপ্রতি কমপক্ষে ৪ হাজার ৬৭৫ ডলার খরচ হয়েছে। 

গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ট্রাম্প। অভিষেক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণেই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ বন্ধ করে দেবেন। তাদেরকে ‘অপরাধী’ হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প বলেছিলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এমন লাখো অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে।”

একই সঙ্গে ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান নিয়মকানুনে পরিবর্তন আনার কথা জানান। নতুন নিয়মের আওতায় নথিবিহীন অর্থাৎ অবৈধ কোনো অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান প্রসব করলে সেই শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশেও সই করেছেন তিনি।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুবকের সৎ কাজ এবং পাথর সরে যাওয়া
  • কুমুদিনী হাজং একজন বিজয়ী আন্দোলনকারী
  • কুমুদিনী একটি প্রতীক, যার মধ্য দিয়ে হাজং বিদ্রোহ
  • কুমুদিনী একটি প্রতীক, যার মাধ্যমে হাজং বিদ্রোহ শুরু
  • সিদ্ধিরগঞ্জে সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগ নেতা ইব্রাহিম গ্রেপ্তার
  • বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কর্মকর্তার লকার ফ্রিজ করতে গভর্নরকে চিঠি
  • হবিগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে একজনের মৃত্যু
  • আমি একজন ব্লাডি স্টার: শাহরুখ
  • রাঙামাটিতে তৃতীয় লিঙ্গের একজনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার
  • সামরিক বিমানে করে ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র