বিশ্ব ইজতেমার কথা বিবেচনা করে ‘ব্লকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি শিথিল করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনরত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার দুপুর ১২টায় ক্যাম্পাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে থাকা ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আলি আহমদ। 

তিনি বলেন, আজ বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত ছিল। এতে সারা দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন। তাই তাদের কথা চিন্তা করে আমরা শুধু আজকের জন্য আমরা রেলপথ ও ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ের ব্লকেড কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। কিন্তু নর্থ সিটির ভেতরে অন্য সড়কগুলোতে ব্লকেড কর্মসূচি চলমান থাকবে। 

আলি আহমদ বলেন, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি গত ২৮ বছরের। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে গঠিত সরকারের কাছে নতুন করে দাবি পূরণের আবদার করেছি। এজন্য যতগুলো মাধ্যম ছিল সবগুলো মাধ্যমেই আমরা দাবি জানিয়েছি। সেখান থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে সর্বশেষ আমরা অনশন কর্মসূচি দেই। আজ অনশনের পঞ্চম দিনে এসেই রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়া দেয়নি। এখন আমাদের ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী দেখছে তাদের ভাইয়েরা এখানে অনশন করে মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে কিন্তু রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ সাড়া দিচ্ছে না। তাই তারা আল্টিমেটাম দিয়েছে ব্লকেড টু ঢাকা নর্থ সিটি।

তিতুমীর কলেজে কেন আন্দোলন-অনশন
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েকমাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়। তবে সম্প্রতি এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

যদিও পরদিন বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিগুলো হচ্ছে—
১.

তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।
৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় আইন এবং জার্নালিজম বিষয় সংযোজন করতে হবে।
৫. একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।
৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ ব ইজত ম ত ত ম র কল জ ত ত ম র কল জ

এছাড়াও পড়ুন:

মার্চে কিছুটা বেড়েছে মূল্যস্ফীতি, উঠেছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ

মার্চে দেশে মূল্যস্ফীতি আবার কিছুটা বেড়েছে। গত মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে। এই সময় দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার কমলেও বেড়েছে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন ৯ থেকে ৮ শতাংশের ঘরে নেমেছে। মার্চে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ চিত্র প্রকাশ করেছে। সেখানে মার্চের এই চিত্র পাওয়া গেছে।

গত মার্চে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ হওয়ার মানে হলো, ২০২৪ সালের মার্চে যদি বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবা কিনে আপনার সংসারের খরচ চালাতে ১০০ টাকা খরচ হয়, তাহলে এ বছরের মার্চে একই পণ্য ও সেবা কিনে সংসার চালাতে খরচ লাগল ১০৯ টাকা ৩৫ পয়সা। প্রতি ১০০ টাকায় খরচ বেড়েছে ৯ টাকা ৩৫ পয়সা।

বিবিএসের তথ্য–উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, মার্চে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। ফেব্রুয়ারিতে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ; মার্চে যা কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে। ফেব্রুয়ারিতে দেশে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ; মার্চে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ।

কোথায় কত মূল্যস্ফীতি

মার্চে দেশে গ্রামাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। মার্চে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ; ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের মার্চে যা ছিল শতকরা ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। মার্চে গ্রামাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ৮ দশমিক ৮১ ও ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ১৫ ও ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ২০২৪ সালের মার্চে যা ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ৮৬ ও ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।

মার্চে শহরাঞ্চলের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ; ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ২০২৪ সালের মার্চে যা ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। মার্চে শহরাঞ্চলের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ৯ দশমিক ১৮ ও ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে যা ছিল ৯ দশমিক ৪৭ ও ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। ২০২৪ সালের মার্চে যা ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ৯৮ ও ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ।

মজুরি বৃদ্ধির হার কম

মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না মজুরি। বিবিএসের হিসাবে, গত মার্চে জাতীয় মজুরি হার হয় ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। এর মানে হলো, মজুরি যত বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে জিনিসপত্রের দাম। গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে জাতীয় মজুরি হার কিছুটা বেড়েছে।

মজুরিনির্ভর বিশাল জনগোষ্ঠীর ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি পড়ে। গ্রাম–শহরনির্বিশেষে ১৪৫টি নিম্ন দক্ষতার পেশার মজুরির ওপর এই হিসাব করে থাকে বিবিএস। বিবিএস বলছে, দেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। এমন কর্মজীবী মানুষের সংখ্যা ছয় কোটির মতো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবারের শোভাযাত্রা সর্ববৃহৎ ও জাঁকজমকপূর্ণ হবে: চারুকলা
  • ঢাবিতে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত
  • শহীদ অধ্যাপক ডা. শামসুদ্দিন আহমদ: আমাদের ঐতিহ্যে
  • শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কি শুল্ক কমাতে পারবে বাংলাদেশ
  • আগামী শনিবার ঢাকার সড়কে ‘মার্চ ফর গাজা’
  • প্রথমবারের মতো স্প্রিং স্কুলের আয়োজন করেছে ঢাবি
  • মার্চে কিছুটা বেড়েছে মূল্যস্ফীতি, উঠেছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ
  • ভাঙচুর-লুটপাটে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা লক্ষণীয়: সালাহ উদ্দিন
  • বিপন্ন কাছিম রক্ষায় বন্ধ্যা করা হচ্ছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ৩ হাজার কুকুরকে
  • ইন্টারনেট বন্ধ ঠেকাতে চারটি পর্যায়ে কাজ করছে সরকার: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব