লা লিগার শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ অবনমন অঞ্চলে থাকা এস্পানিওলের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে শিরোপা দৌড়ে নিজেদের অবস্থান কঠিন করে তুলেছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে আরসিডিই স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে পরাজিত হয় লস ব্লাঙ্কোসরা। এই হারে রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে ৪৯, যা তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের চেয়ে মাত্র ১ পয়েন্ট বেশি (৪৮)। ফলে লিগ শিরোপার লড়াই আরও জমে উঠেছে।  

শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। তবে ১৫ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় রিয়াল, ইনজুরিতে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার আন্টোনিও রুডিগার। ২১ মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের গোল বাতিল হয় কিলিয়ান এমবাপ্পের ফাউলের কারণে। এরপর একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি রিয়াল। ৭৬ মিনিটে রদ্রিগোর শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে। এক মিনিট পর এমবাপ্পের শট রুখে দেন এস্পানিওলের গোলরক্ষক। 

এরপরই ৮৫ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে রিয়ালকে স্তব্ধ করে দেয় এস্পানিওল। সতীর্থের ক্রসে ছয় গজ বক্স থেকে দুর্দান্ত ভলিতে জয়সূচক গোল করেন রোমেরো। শেষ মুহূর্তের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সমতা ফেরাতে ব্যর্থ হয় আনচেলত্তির দল। এই জয়ের ফলে অবনমন অঞ্চল থেকে বেরিয়ে এসে ২২ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ১৭তম স্থানে উঠে এসেছে এস্পানিওল।  

ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি ক্ষোভ প্রকাশ করেন রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে। ম্যাচের ৬১ মিনিটে এমবাপ্পেকে বিপজ্জনকভাবে ফাউল করেন রোমেরো, তবে তাকে কেবল হলুদ কার্ড দেওয়া হয়। ২৪ মিনিট পর সেই রোমেরোই দলের জয়সূচক গোল করেন।  

আনচেলত্তি বলেন, ‘রেফারির এই সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যার বাইরে। ফাউলটি খুবই কুৎসিত ছিল, এটা লাল কার্ড পাওয়ার মতো অপরাধ। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিও ছিল, কিন্তু কেন লাল কার্ড দেওয়া হলো না, তা বোধগম্য নয়।’

শেষ বাঁশি বাজার পর রোমেরো অবশ্য নিজের কৃতকর্মের জন্য এমবাপ্পের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানান, ‘আমি জানতাম এভাবে দৌড়ের সময় এমবাপ্পেকে আটকানো অসম্ভব। ফলে তাকে আটকাতে আমার পক্ষে যা সম্ভব হয়েছে সেটাই করেছি। হ্যাঁ, চ্যালেঞ্জটা খুব কুৎসিত ছিল। নিজেরও পছন্দ হয়নি। আমি তার কাছে সেজন্য ক্ষমা চেয়েছি।’

ম্যাচ নিয়ে আনচেলত্তির মন্তব্য, ‘আমরা নিয়ন্ত্রণ রেখেছিলাম, বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে। প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছি। এক গোল বাতিল হয়েছে, পোস্টে লেগেছে একাধিক শট। আমাদের ২০টি শট ছিল গোল বরাবর। তবে এস্পানিওলও দুর্দান্ত ডিফেন্স করেছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এমব প প

এছাড়াও পড়ুন:

আদালত প্রাঙ্গণে পলক বললেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ

দুদকের মামলায় আদালতে হাজিরা শেষে প্রিজন ভ্যানে নেওয়ার সময় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ‘অগ্নিঝরা মার্চে ধর্ষণের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ। জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো। জেগে ওঠো আবারও।’

আজ সোমবার দুর্নীতি দমন কমিশনের করা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় হাজিরা দিতে এসে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন কারাগারে থেকে রোজা রাখতে কষ্ট হচ্ছে কিনা? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না। রোজা রাখতে কষ্ট হচ্ছে না। রিমান্ডেই রোজা শুরু হলো এবার।’

এ দিন দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে আদালতে আনা হয়। এ সময় পলক বলেন, ‘কথা বললেই মামলার সংখ্যা বাড়ে। পেছনে হ্যান্ডকাফ দিয়ে রাখে। কথা বলে কী লাভ?’

এ দিন দুদকের করা মামলায় পলকের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন। 

পলকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম বলেন, জুনাইদ আহমেদ পলককে নিয়মিতই বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে আনা হচ্ছে। এতে তিনি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন। এছাড়াও তার দুই হাত পিছমোড়া করে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে আনা হচ্ছে। এগুলো সাধারণত দাগী আসামিদের ক্ষেত্রে করা হয়। 

পলকের বিরুদ্ধে হওয়া দুদকের মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন।  

মামলায় বলা হয়, অভিযুক্ত জুনাইদ আহমেদ পলক অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৮ কোটি ৭৩ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪২ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে তা ভোগদখলে রেখেছেন। একইসঙ্গে নিজ নামে ২৫টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা এবং ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেন করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ সংঘটন করেছেন। 

মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। 

গত ১৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জুনায়েদ আহমেদ পলককে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এরপর থেকে বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দফায় দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ