লালনসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীন শ্বাসকষ্ট নিয়ে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ  হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল শনিবার ভোরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বামী যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম।

তিনি বলেন , ফরিদা পারভীনের শারিরীক অবস্থা ভালো খুব একটা ভালো নয়। তাকে এখন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। তাঁর ফুসফুসে পানি জমেছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি জটিলতা রয়েছে। 

ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার বলেন, ‘তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে বরেণ্য সংগীতশিল্পী  ভোরে ভর্তি হয়েছেন। শরীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তাঁর ডায়াবেটিস রয়েছে।  উচ্চ রক্তচাপ এবং থাইরয়েডের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত কিছু সমস্যায়ও ভুগছিলেন। বক্ষব্যাধি, কিডনি এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞের তত্ত্ববাবধানে আছেন তিনি। তাঁর অবস্থা কিছুটা জটিল। তাকে ডায়ালাইসিস করতে হবে।’ 

১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত গাইতে শুরু করেন ফরিদা। ১৯৭৩ সালের দিকে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। ১৯৮৭ সালে সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক পান এই শিল্পী। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ একাধিক সম্মাননা।  ‘অচিন পাখি স্কুল’ নামে একটি গানের স্কুলও রয়েছে তাঁর। ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের পক্ষ থেকে ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কারও পেয়েছেন এই কন্ঠশিল্পী।  

 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোনায় বন্ধুর হবু স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদকে (২৪) দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি শামসুল হুদা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সারোয়ার আলম ও সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী (২০) নেত্রকোনা শহরের বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে কলমাকান্দা উপজেলার এক ছাত্রের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি উভয়ের পরিবারের সিদ্ধান্তে তাঁদের বিয়ের দিনতারিখ ঠিক হয়। তাঁরা দুজন গত সোমবার দুর্গাপুরে ঘুরতে যান। ওই ছাত্রের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদের বন্ধুত্ব ছিল। তাঁর কথামতো তাঁরা সেখানে একটি হোটেলে ওঠেন। গতকাল বিকেলে ওই ছাত্র হোটেল থেকে বের হয়ে খাবার কিনতে যান। এ সময় তাঁর হবু স্ত্রী হোটেলে অবস্থান করছিলেন। এ সুযোগে ফয়সাল তাঁর বন্ধু ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশকে জানিয়ে দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তার করতে অনুরোধ জানান। পরে ফয়সাল ওই ছাত্রীর কক্ষে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। মেয়েটি বাধা দিলে তাঁকে মারধর করা হয়। পুলিশ ওই ছাত্রকে আটক করলে তিনি জানান, তাঁর হবু স্ত্রী হোটেলে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন। পরে পুলিশ তাঁকে নিয়ে হোটেলের কক্ষে যায়। সেখান থেকে ওই মেয়েকে উদ্ধার এবং ফয়সালকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় সন্ধ্যায় মেয়েটি বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে ফয়সালের বিরুদ্ধে মামলা করেন বলে জানান দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান।

ওসি মাহমুদুল হাসান আজ বুধবার সকালে বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রদল নেতা ফয়সালকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে। মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এদিকে এ ঘটনার পর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে ফয়সালকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের তাঁর সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক না রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

এর আগে গত ২৯ মার্চ দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পারভেজ মোশারফ এবং পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল রহমানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় দলীয় পদ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ