কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যু, প্রথম দিনেই পেছালো সাক্ষ্য
Published: 2nd, February 2025 GMT
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তেলাপোকার কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় দুই শিশু মৃত্যুর মামলায় প্রথম দিনেই সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিমের আদালতে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ছিলো। তবে আসামিপক্ষ চার্জগঠনের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে গেছেন। এজন্য তারা সাক্ষ্য পেছানোর জন্য সময় আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে ৫ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।
আসামিরা হলেন-পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান, এমডি ফরহাদুল আমিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মোসলেহ উদ্দিন শামীম ও স্প্রে ম্যান মো.
গত ১৪ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়।
মামলার তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২ জুন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মোবারক হোসেন তুষারের বাসায় তেলাপোকার কীটনাশক দেন ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেডের কর্মীরা। তারা জানান, ৩/৪ ঘণ্টা পর বাসায় প্রবেশ করা যাবে। কীটনাশক দেওয়ার ৯ ঘণ্টা পর মোবারক তার স্ত্রী শারমিন জাহান ও সন্তানদের নিয়ে বাসায় আসেন। এরপর তারা সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। ঘরে ঢোকার পর ৩ জুন সকাল ৭ টায় শারমিন ও তার দুই সন্তান বমি করেন।
তখন আসামি মোসলেহ উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি জানান, কীটনাশকে এলার্জি ছাড়া অন্য কোন সমস্যা হবে না। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ খাওয়ালে দুই সন্তান সাময়িক সুস্থবোধ করেন। ওইদিন রাতে তারা সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ৪ জুন ভোর ৪ টার দিকে ছোট ছেলে শাহির মোবারক জায়ান অসুস্থবোধ করেন। তখন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে বড় ছেলে শায়ান মোবারক জাহিন অসুস্থবোধ করলে তাকেও ওই হাসপাতাল নেওয়া হয়। তখন আইসিইউ নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তারও মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ওই বছরের ৫ জুন ‘দায়িত্বে অবহেলাজনিত’ মৃত্যুর অভিযোগে ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষার বাদী হয়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলা করেন। মোবারক হোসেন ঢাকা রয়েল ক্লাব লিমিটেডের (উত্তরা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। গত বছরের ৩১ জানুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সমীর চন্দ্র সূত্রধর চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
ঢাকা/মামুন/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে টিলা কাটার অভিযোগে বিএনপি নেতা, ইউপি সদস্যসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা
সিলেট সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর গ্রামে টিলা কাটার অভিযোগে বিএনপি নেতা, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট মহানগরের বিমানবন্দর থানায় মামলাটি করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মামুনুর রশিদ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে পরিবেশ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করবেন।
মামলার আসামিরা হলেন সিলেট সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর গ্রামের আবদুর রাজ্জাক খান (৩৫), পূর্ব পাঠানটুলা এলাকার আজিজ খান সজীব (৩৪), জাহাঙ্গীরনগরের মো. হাফিজুর রহমান (৪১), গিয়াস মিয়া (৪৫), মানিক মিয়া (৪৩) ও জুয়েল মিয়া (৩৫)। মামলায় আরও চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে আবদুর রাজ্জাক খান সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক। আজিজ খান সজীব সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং হাফিজুর রহমান টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল ব্রাহ্মণছড়া চা-বাগান মৌজার ৫৬ নম্বর খতিয়ানের ৩২ নম্বর দাগের একটি টিলা কাটার প্রমাণ পায়। টিলাটি আবদুর রাজ্জাক খানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বলে উল্লেখ করা হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে আনুমানিক ৭৫ ফুট দৈর্ঘ্য, ৩৩ ফুট প্রস্থ ও ২৩ ফুট উচ্চতার টিলা কেটেছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের না পাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। টিলা কাটার বিষয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আসামিরা রাতের বেলায় টিলা কেটে মাটি সরিয়ে আশপাশের প্লট ভরাট করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করলে মামলার প্রধান আসামি হিসেবে থাকা আবদুর রাজ্জাক টিলা কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তিনি তো ননই, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কেউ টিলা কাটায় জড়িত নন। টিলার জায়গা কিংবা দখল—কোনোটাই তাঁর নয়। সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।