ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক, ফিক্সিংসহ নানা বিতর্কে জর্জরিত চলমান বিপিএল। অথচ ৫ আগস্টের পর দায়িত্ব নেওয়া বোর্ডের নেতারা নতুন এক বিপিএলের জোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন নানা বিতর্কে লজ্জায় পড়তে হচ্ছে দেশের ক্রিকেটকে। বিতর্কের মাত্রাটা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, গতকাল সন্ধ্যায় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকসহ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
এর পর রাতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক নিয়ে যা হচ্ছে, তাতে তারা বিব্রত। আর বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ স্বীকারই করে নিয়েছেন, এবারের বিপিএল পারফেক্ট হচ্ছে না।
ফিক্সিং তদন্তে সরকারি সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এনএসসি থেকে একটি সত্যানুসন্ধান কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ফিক্সিংয়ের যে অভিযোগ এসেছে, সেটির অনুসন্ধানে বিসিবি একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি করবে। সরকারের পক্ষ থেকে যা সহযোগিতা করা যায়, আমরা বিসিবিকে করব। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো চিহ্নিত করেছি।’
এবারের বিপিএল যে ঠিকঠাক হচ্ছে না, সেটা স্বীকার করেছেন বিসিবি সভাপতিও, ‘এবারের বিপিএল পিকচার পারফেক্ট না। আমার দুঃখ হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার জন্য, তিনি আমাদের থিম সংয়ের লাইন পর্যন্ত দিয়েছিলেন। আমরা যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, যদি আপনি একটি দল, কেবল রাজশাহীকে বাইরে রাখেন, তাহলে কিন্তু ইতিবাচক বলতে হবে। অভিযোগ হলো বিদেশি খেলোয়াড়ের সংকট। এটা মনে রাখতে হবে, অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট চলছে এখন।’
আগামী বছর ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে বিপিএল আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। ১১ বছরের মাথায়ও বিপিএল একটি টুর্নামেন্ট হিসেবে দাঁড়াতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ জন্য অডিট করা হচ্ছে। ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বিপিএল অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলেও জানান ফারুক।
খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ইস্যুতেও কথা বলেছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘পারিশ্রমিক ইস্যু নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। তবে আমি বলব, এটা একটা শিক্ষা। আগামীতে অবশ্যই এসব কাজে লাগবে। আমরা আজ রাজশাহীর মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, খেলোয়াড়দের পাওয়া দিয়ে দেবেন। যদি তিনি না করেন, তাহলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। আমরা এটা তাঁকে পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছি।’
পারিশ্রমিক নিয়ে চিটাগং কিংসের মালিক একজন দেশি ক্রিকেটার সম্পর্কে বাজে কথা বলেছিলেন। এ ব্যাপারে চিটাগং কিংসের মালিক ক্ষমা চেয়েছেন বলেও জানান তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল য ব ও ক র ড় উপদ ষ ট ফ র ক আহম দ উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
শাইনপুকুর ব্যাটারদের আউটের ধরনে বিস্মিত কোচ সুজনও
গুলশান ক্লাবের বিপক্ষে শাইনপুকুরের দুই ব্যাটার ‘স্বেচ্ছা আউট’ হয়েছেন এমন অভিযোগ উঠেছে। দুটি ক্লাবই বেক্সিমকো গ্রুপের। গুলশানকে বাড়তি সুবিধা দিতে শাইনপুকুর ইচ্ছাকৃত ম্যাচ হেরেছে বলেও অভিযোগ এসেছে।
তীর গেছে শাইনপুকুরের টিম ম্যানেজমেন্ট ও দলটির কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের দিকেও। বিয়ষটি নিয়ে সুজন জানিয়েছেন, সাব্বির, মিনহাজুলের আউট দেখে বিস্মিত হয়েছেন তিনিও। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে আউট হওয়া বা ম্যাচ হারের বিষয়ে কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন সাবেক এই ক্রিকেটার ও বিসিবির পরিচালক সুজন।
তিনি বলেন, ‘রহিম আমার একাডেমির খেলোয়াড়। ওদেরকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোরা মেরে আউট হচ্ছিস কেন? ওরা বলেছে, বল মিস করে গেছে। সাব্বির আমার একাডেমির খেলোয়াড়রা না, তবে ওকে ভালোভাবেই চিনি। কেন ওই সময়ে ওইভাবে আউট হয়েছে, আমি তো বলতে পারব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই যেভাবে চিন্তা করছে দুটো দলই আমাদের। বিষয়টি মিউচুয়ালি হলে আমি ওই দলের কোচকে বলে দিতাম তিনশ রান করার সুযোগ দিতে। তাদেরকে ১০০ রানে অলআউট হতে বলতাম। যাতে রানরেট ভালো থাকে। সাব্বির ওইভাবে আউট হয়েছে, সেখানে আমাদের ভূমিকা কী? জানি না কেন এসব প্রশ্ন তুলছে। আসলে চোখে দেখে খারাপ লেগেছে, আমারও খারাপ লেগেছে।’
বিষয়টি নিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজনকে এসিইউ জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনবে কিনা জানতে চাওয়া হলে সংশ্লিষ্ট কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। ফোন না ধরায় এ ব্যাপারে মিনহাজুল বা রহিমের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এসিইউ ও বিসিবি কর্মকর্তাদের অভিমত, অনৈতিকভাবে সুবিধা নিলেও ম্যাচে আর্থিক লেনদেন ছিল না। তাই শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলাজনিত ইস্যু ব্যবহার করার ধারা খতিয়ে দেখছে বিসিবি।