Samakal:
2025-03-09@23:35:06 GMT

নির্বাচকের পদ ছাড়লেন হান্নান

Published: 2nd, February 2025 GMT

নির্বাচকের পদ ছাড়লেন হান্নান

জাতীয় দলের নির্বাচক হিসেবে কাজ করার খুব ইচ্ছা ছিল হান্নান সরকারের। বয়সভিত্তিক দলের সঙ্গে ভালো কাজ করার পুরস্কারস্বরূপ প্রমোশন পেয়ে জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলের সদস্য হয়েছিলেন ২০২৪ সালে। গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর কমিটিতে দুই বছর মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই নির্বাচকের পদ ছাড়লেন হান্নান। বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কাছে গতকাল পদত্যাগপত্র দিয়েছেন তিনি। 

বিসিবির একটি সূত্র জানায়, এক মাসের নোটিশে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে হান্নান সরকার নিজেও বিসিবির চাকরি ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মূলত কোচিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার পরিকল্পনা থেকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক এ ব্যাটার। খেলা ছাড়ার পর কোচিংকে পেশা হিসেবে নিয়েছিলেন তিনি। যদিও পরবর্তী সময়ে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের নির্বাচক হিসেবে বিসিবির চাকরিতে যোগ দেন হান্নান।

বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৬ সাল পর্যন্ত চুক্তি ছিল হান্নানের। ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। প্রথম থেকেই এই বেতন আকর্ষণীয় মনে হয়নি তাঁর কাছে। নির্বাচক প্যানেল থেকে বাদ পড়ে গেলে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়তে হতে পারে বলে মনে হয়েছে ১৭ টেস্ট আর ২০ ওয়ানডে খেলা এ ব্যাটারের কাছে। যে কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই নিজেই নির্বাচকের চাকরি ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। 

বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের খেলা চলাকালে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে একান্তে কথাও বলেছেন তিনি। নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কাছের অনেকের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন হান্নান। নির্বাচকের চাকরি ছাড়ার পেছনে হান্নানের যুক্তি হলো, ‘আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচকের পদটি খুবই সম্মানজনক। কিন্তু বাস্তবতা হলো আর্থিকভাবে স্বচ্ছল থাকার মতো না। প্রথমত বেতন কম, দ্বিতীয়ত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ। এ ধরনের চাকরিতে বেতন বেশি হলে ঠিক ছিল। দুই বা তিন মেয়াদে চাকরি করলে সঞ্চয় থাকত। এখন দিন এনে দিন খাওয়ার মতো। এরচেয়ে কোচিং করালে ভবিষ্যৎ আছে। মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ভাই আমাদের পথপ্রদর্শক। আশা করি, তিনি জাতীয় দলের প্রধান কোচ হবেন। ভালো কাজ করলে আমরাও একদিন জাতীয় দলে কাজ করার সুযোগ পেতে পারি। বিসিবিতে সম্মানজনক বেতন পেলে কোচ হিসেবে থাকতে চাই।’

বিপিএল, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কাজ করা বড় দলের কোচরা ভালো সম্মানী পান। বিসিবিতে চাকরি করেও লিগে কাজ করার সুযোগ আছে। মিজানুর রহমান বাবুল ফরচুন বরিশাল এবং তালহা জুবায়ের খুলনা টাইগার্সের প্রধান কোচ। লেভেল টু কোচেস কোর্স করা হান্নানের বিশ্বাস সুযোগ পেলে ভালো করবেন তিনিও।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হ ন ন ন সরক র জ ত য় দল র ক জ কর র র চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ তিন কারণে হত্যাকাণ্ড

পুরোনো শত্রুতা, নদী থেকে বালু তোলার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ ও হাটবাজারের দখল নিয়ে বিরোধের কারণে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুরে দুই ভাইসহ তিনজনকে খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছে পুলিশ ও এলাকাবাসী। এ ঘটনায় মামলা হলে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

নিহত দুই ভাইয়ের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে রোববার সকালে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৪৯ জনকে এজাহারভুক্ত ও ৮০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। 
সরেজমিন জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে খোয়াজপুরে কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। এলাকায় তিনি হিটার সাইফুল হিসেবে বেশি পরিচিত ছিলেন। বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও স্থানীয় হাটবাজারের ইজারা নিয়েছিলেন তিনি। বালু তোলার সিন্ডিকেট ও খোয়াজপুর-টেকেরহাট বাজারের ইজারা দখল নিয়ে হোসেন সরদার (৬০) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সাইফুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। এর জেরে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্যে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হোসেনের দুই পা ভেঙে দেন সাইফুল ও তাঁর সহযোগীরা। এ ঘটনা ছাড়া আরও কিছু  ঘটনায় সাইফুলের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা হয়েছিল। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হলে পরে জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করতেন সাইফুল। এ নিয়ে এলাকার মানুষ তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। 

এ ছাড়া জেলার রাজনৈতিক বিরোধেও জড়িয়ে পড়েছিলেন হোসেন সরদার (৬০) ও সাইফুল (৩৫)। দীর্ঘদিন ধরে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগে দুটি বলয় তৈরি হয়েছিল। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিতেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এবং অপর পক্ষের নেতা ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সাইফুল বাহাউদ্দিন নাছিম সমর্থিত খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তাঁর প্রতিপক্ষ হোসেন সরদার ছিলেন শাজাহান খান সমর্থিত আওয়ামী লীগ নেতা। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাইফুল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয় স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইফুলের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় জানান, এক সময় এলাকায় খুব প্রভাব ছিল সাইফুলের। বিভিন্ন বিচার-সালিশও করতেন তিনি। মানুষ তাঁর কথা মানত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন। হোসেন সরদারও তখন আওয়ামী লীগে ছিলেন। সম্প্রতি সাইফুল তাঁর লোকজন নিয়ে হোসেনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে তাঁর লোকজনকে মারধর করে। হোসেনের লোকজন আবার সাইফুলের এক মামাকে তুলে নিয়ে মারধর করে। সেই ঘটনার মাসখানেক আগে মীমাংসাও হয়ে গেছে। তারপর বালু তোলার ড্রেজার ব্যবসা দখলে নিতে যান সাইফুল ও তাঁর লোকজন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। এর জেরে গত শনিবার সাইফুল ও তাঁর ভাই আতাউর সরদার (৪০) এবং চাচাতো ভাই পলাশ সরদারকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহত সাইফুলের স্ত্রী সতি বেগম (২৬) অভিযোগ করেন, গত বছর তাঁর স্বামীর সঙ্গে হোসেন সরদারের একটা বিরোধ হয়েছিল। সেই ক্ষোভ ধরেই হোসেন ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তিন দিক থেকে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা পালানোর চেষ্টা করেন। হামলাকারীরা তাদের বাড়িঘরে লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি বলেন, হামলার সময় তাঁর স্বামী ও ভাশুর মসজিদে গিয়ে আত্মগোপনের চেষ্টা করেন। সেখান থেকে তাদের ধরে এনে মেরে ফেলা হয়। এ সময় পলাশ নামে তাদের এক আত্মীয়কেও মেরে ফেলা হয়।  
সাইফুলের মা সুফিয়া বেগম বলেন, তাঁর দুই ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সরকারের কাছে ঘটনার বিচার ও হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেন তিনি। 
তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি বালু ব্যবসা ও পূর্বশত্রুতার জের ধরেই ঘটেছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে তাদের অভিযান অব্যাহত আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ তিন কারণে হত্যাকাণ্ড
  • মাদারীপুরে ‘তিন কারণে’ তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
  • চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটুনি