আজীবন সম্মানান পেয়ে শচীন বললেন:কখনো অ্যালকোহল বা তামাকের বিজ্ঞাপন
Published: 2nd, February 2025 GMT
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) আজীবন সম্মানান প্রদান করেছে মাস্টার ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকারকে। মুম্বাইয়ে বিসিসিআইয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এই কিংবদন্তিকে সিকে নাইডু আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। এই পুরস্কার তুলে দেন বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সচিব এবং বর্তমানে আইসিসির চেয়ারম্যান জয় শাহ।
এদিন বক্তৃতা দিতে গিয়ে গিয়ে শচীন তরুণ ক্রিকেটারদের পরামর্শদেন। সব রকম প্রলোভন থেকে নিজেকে দূরে রেখে একাগ্রচিত্তে ক্রিকেটের প্রতি নিবেদিত হওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
শচীন এদিন তার বক্তব্যে তরুণ ক্রিকেটারদের মূল্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দেন, “নব্বইয়ের দশকে দুই বছর আমার ব্যাটের কোনও স্পনসর ছিল না। তার পরেও অ্যালকোহল বা তামাকের বিজ্ঞাপন করিনি। কারণ, আমার জীবনে মূল্যবোধের বড় ভূমিকা রয়েছে।” পরিবারের শিক্ষা সবসময় আমাকে সামনে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
তরুণদের পরামর্শ দিতে গিয়ে শচীন জানান দেশ সবার আগে, “আমি শুধু বলব, মনঃসংযোগ ধরে রেখে এক লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। অনেক প্রলোভন আসবে। তাতে পা দিলে হবে না। সকলের আগে দেশ। দেশের জন্যই খেলতে হবে।”
১৯৯৪ সাল থেকে ভারতের প্রথম অধিনায়ক সিকে নাইডুর নামে বিসিসিআই এই পুরস্কার প্রদান করে আসছে। ৩১তম ক্রিকেটার হিসেবে শচীন এই পুরস্কার পেলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘১০০ সেঞ্চুরির’ একমাত্র এই মালিক মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৮৯ সালে অভিষিক্ত হন এবং ২০১৩ সালে অবসর নেন
শচীন ২০০ টেস্ট এবং ৪৬৩ ওয়ানডেতে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, যা দু’টি সংস্করণেই সর্বোচ্চ। দুই সংস্করণে ৫১ বছর বয়সী সাবেক এই ক্রিকেটারের রানও সর্বোচ্চ; ওয়ানডেতে করেছেন ১৮,৪২৬ রান এবং টেস্টে ১৫,৯২১ রান।
২০২৩-২৪ মৌসুমে সেরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে পেসার যাশপ্রীত বুমরা পলি উমরিগড় পুরস্কার লাভ করেছেন। মেয়েদের ক্রিকেটে একই ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন স্মৃতি মান্ধানা।
গত ডিসেম্বরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়েন ভারতীয় অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্টে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৩৭ উইকেট শিকারি এই স্পিনারকে একটি বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট ইনিংসে ফিফটি করা সরফরাজ খান পেয়েছেন সেরা আন্তর্জাতিক অভিষেকের পুরস্কার।
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দু’পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটির জেরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আশরাফুল আলম সোহান আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে চলছিল ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহতদের যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম। এই যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদস্য সচিব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন প্রতিনিধিসহ আরও তিনজন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন কমিটিতে। ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্য থেকে জুলকার নাইন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি এই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। পদত্যাগের পরও জুলকার নাইন কমিটিতে থাকায় অন্য প্রতিনিধিরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শেষে বেশ কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। এ সময় বাগবিতণ্ডা সৃষ্টি হলে জুলকার নাইন কমিটিতে থাকা নিয়ে ব্যাখ্যা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীনূর খান। সেই সঙ্গে বিষয়টি অন্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে দেন। পরে ছাত্র প্রতিনিধিরা নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষ থেকে বের হয়ে চলে যাওয়ার সময় সিঁড়ির নিচে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুল ইসলামের সঙ্গে আরেক প্রতিনিধি আশরাফুল আলম সোহানের বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় দু’পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েন প্রতিনিধিরা। পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আশরাফুল আলম সোহানকে থাপ্পড় মারেন আশিকুল ইসলাম। এতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। পরে সোহানকে উপজেলা স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জুলকার নাইন বলেন, ‘যাচাই-বাছাই কমিটির একটি বোর্ড সভা হয়। সভা শেষে তারা জানতে চান আমি এখানে কেন? এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। আমি শুরু থেকেই এই আন্দোলনে জড়িত। তাদের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন ধরে রেষারেষি চলছে। তারা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে আমার নামে। আজ (বুধবার) নতুন যাচাই তালিকা তৈরি এবং কমিটিতে আমার থাকা নিয়ে তাদের সমস্যা থেকে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।’
আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে নিয়ে তিন-চার মাস ধরে আজেবাজে মন্তব্য করছে। আজ ইউএনও অফিসে সবার সামনে বলে আমি নাকি আওয়ামী লীগের দালাল। তারপর মনের ক্ষোভে আমি তাকে একটা থাপ্পড় মারি, পরে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’
আশরাফুল আলম সোহানের ভাষ্য, আশিকুল ইসলামের সঙ্গে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তার (সোহান) বাম সাইডে কানের নিচে দুইটা থাপ্পড় মারে। এতে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। এ ব্যাপারে মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল চিকিৎসা নিয়ে পরে চিন্তা করব।’
চিকিৎসক প্রাণেশ চন্দ্র পণ্ডিতের ভাষ্য, আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল উন্নত চিকিৎসার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীনূর খান জানান, আগেও কমিটিতে ছিলেন জুলকার। এই কমিটিও আগের করা। কয়েকজন প্রতিনিধি এসে অভিযোগ করলেন জুলকার কমিটিতে থাকার ব্যাপারে। তারা জুলকারকে চায় না এ নিয়ে তাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা। পরে বিষটি সবার সঙ্গে কথা বলে সমন্বয় করে শান্ত করার চেষ্টা করা হয়। তারা কক্ষ থেকে চলে যাওয়ার পরে সিঁড়ির নিচে হাতাহাতি থেকে মারামারির ঘটনা ঘটে।