আইএস সদস্যদের কড়া হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
Published: 2nd, February 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে সোমালিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হামলা সংক্রান্ত একজন জ্যেষ্ঠ পরিকল্পনারী ও অন্যান্যদের ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। গতকাল শনিবার এই হামলা চালানো হয়।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্ট করে এই খবর জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে আলোচনার পর ছয় মার্কিন নাগরিক মুক্ত
যুক্তরাষ্ট্রে জনবহুল এলাকায় বিমান বিধ্বস্ত, হতাহতের শঙ্কা
ট্রাম্প তার নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্টে বলেন, “এসব হত্যাকারীরা গুহায় লুকিয়ে থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের মিত্রদের হুমকি দিচ্ছে। মার্কিন বিমান হামলা লুকিয়ে থাকার গুহাগুলোকে ধ্বংস করেছে, সেই সঙ্গে বেসামরিক মানুষদের ক্ষয়ক্ষতি না করেই লুকিয়ে থাকা অনেক সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।”
পোস্টে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প আরো বলেন, “আইএসআইএস এবং অন্য যারা আমেরিকানদের আক্রমণ করবে তাদের প্রতি বার্তা হলো যে, আমরা তোমাদের খুঁজে বের করব এবং হত্যা করব!”
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ একটি পোস্টে, সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহাম্মদের কার্যালয় জানিয়েছে, তারা দেশের উত্তরাঞ্চলে সিনিয়র আইএস নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে মার্কিন হামলার বিষয়ে অবহিত হয়েছে।
পোস্টে সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অটল সমর্থনকে স্বীকার করেন এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচারক্ষমতাসম্পন্ন নেতৃত্বে স্বাগত জানান।
পোস্টটিতে আরো বলা হয়েছে, সর্বশেষ মার্কিন অভিযানটি চরমপন্থি হুমকি মোকাবেলায় সোমালিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শক্তিশালী নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করবে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, “আমাদের প্রাথমিক মূল্যায়নে মনে করা হচ্ছে, সোমালিয়ায় বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন চিহ্নিত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তবে বেসামরিক কারো কোনো ক্ষতি হয়নি।
সোমালিয়ার উত্তরাঞ্চলের গোলিস পার্বত্য এলাকায় এসব হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানান পিট হেগসেথ।
মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষত ইরাক ও সিরিয়ায় গত দশকে আইএসের উত্থান হয়। তবে এখন আফ্রিকার কিছু অংশে নিষিদ্ধ এ সংগঠনের বিস্তার ঘটেছে।
আইএসের সোমালিয়া শাখা গঠিত হয় ২০১৫ সালে। আল–কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত আল–শাবাব গোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে এসে কয়েকজন আইএসের সোমালিয়া শাখা গড়ে তোলেন। আল–শাবাব সোমালিয়ার সবচেয়ে বড় জিহাদি গোষ্ঠী।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির ‘নামধারী সন্ত্রাসীদের’ হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় বিএনপি নেতা
রাজশাহীর রাজপাড়া থানা বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও মহানগর যুবদলের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন ও তাঁর পরিবার বিএনপির নামধারী সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নগরের লক্ষ্মীপুর বাকির মোড় এলাকায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে রুহুল আমিন এ অভিযোগ করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে রুহুল আমিন বলেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবনে তিনি বিএনপির আদর্শ ছাড়া অন্য কোনো আদর্শে কখনোই জড়িত ছিলেন না। এ কারণে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ৯টির বেশি মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ১০ বারের বেশি কারাবরণ করেছেন। এখনো নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। দল করতে গিয়ে পারিবারিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হলেও দমে যাননি।
তিনি বলেন, এত কিছুর পরও দলের বিপথগামী কিছু সদস্য, আওয়ামী লীগের এজেন্ট ও পতিত সরকারের সুবিধাভোগী অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি রাতে তাঁর বাসভবনে হামলার শিকার হয়েছেন।
রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, হামলায় নেতৃত্ব দেন রাজপাড়া বিএনপির বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ তৎকালীন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন আহমেদ ও তাঁর ভাই তুহিন, কাশিয়াডাঙ্গা থানা বিএনপির সদস্য মুরাদ পারভেজ, আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী ক্যাডার খিচ্চু, নাইম, সবুজ ও হৃদয়সহ তাঁদের সহযোগীরা। তাঁরা তাঁর বাসভবনে ভাঙচুর করে পরিবারসহ তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন দেন। এলোপাতাড়ি গুলি করে লুটতরাজ করেন। পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনার আলামত হিসেবে গুলির খোসাও উদ্ধার করেছে। কোনোমতে প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় বর্তমানে আতঙ্কিত ও চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছেন।
যুবদলের এই নেতা বলেন, মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি, মহানগরের আওতাধীন রাজপাড়া থানা কমিটিসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের কমিটিগুলোতে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও সুবিধাভোগীদের সরাসরি সদস্য করা হয়েছে। এরপরও বিগত রমজানে ইফতার মাহফিল আয়োজন করে রাজপাড়া থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে একই ব্যক্তিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অর্থাৎ অভিযুক্ত সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমানকে সভাপতি ও সাবেক সদস্যসচিব আমিনুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে কাউন্সিল ও মতামত ছাড়াই কমিটি ঘোষণা করা হয়, যা প্রহসনের নামান্তর মাত্র বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এত অভিযোগ ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের আবার নতুন করে পদায়ন করা আর অপরাধীদের পুরস্কৃত করা একই কথা। এই কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে অপরাধীদের বিভিন্ন কমিটিতে পদায়ন করে পুনর্বাসন করার কারণে স্থানীয়ভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং পরীক্ষিত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা দল থেকে বিমুখ হয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
রুহুল আমিন বলেন, শুধু দুর্নীতি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণেই পরিবারসহ তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছে দলে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীরা। তিনি এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরও দৃশ্যমান কোনো ফলাফল এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি। প্রতিনিয়ত বিতর্কিত ব্যক্তি ও বিএনপির কথিত নেতাদের থেকে পরোক্ষভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি পাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে তাঁর স্ত্রী নাদিরা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে রাজপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘রুহুল আমিন আমার ঘনিষ্ঠ মানুষ। আমি তাঁর হেফাজতকারী। তাঁকে হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে হয়তো আমার বিরুদ্ধে এসব কথা বলেছেন। তাঁর যে ক্ষতি করা হয়েছে, সে ব্যাপারে আমি নিজেই তদন্তের দাবি করেছি।’ আওয়ামী লীগের লোকজনকে কমিটিতে রাখার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এ রকম যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে কেন্দ্র তাঁদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’