গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারী) দুই ধাপের প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আজ তৃতীয় দিন। রোববার সকাল ৯ টার মধ্যেই আখেরি মোনাজাত শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ফজরের পর বয়ান করেছেন মাওলানা আব্দুর রহমান। আখেরি মোনাজাতের আগে নসিহতমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা। এরপর আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের।

রোববার ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিন ভোর থেকে ঢাকা, টঙ্গী ও গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে মোনাজাতে শরিক হতে হাজার হাজার মুসল্লিদের পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানের দিকে আসতে দেখা গেছে। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ ঢল অব্যাহত থাকবে।

ইজতেমা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়ার জন্য শত শত নারী-পুরুষ রাস্তা ও আশপাশের মিল-কারখানা ও বাসাবাড়ির ভেতর অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। নারীদের জন্য আলাদা কোনো জায়গার ব্যবস্থা না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে নিজ উদ্যোগে পর্দায় ঘেরা বিভিন্ন স্থানে বসার জায়গা করে নিচ্ছেন। বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের তাশকিল কামরার পাশে প্রতিবন্ধীদের ইজতেমায় অংশগ্রহণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যবস্থায় দুই শতাধিক প্রতিবন্ধী বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন।

মিলগেট এলাকায় গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে আসা আলী হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৬টায় মোনাজাতে অংশগ্রহণের জন্য ইজতেমার মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত বাসে আসছি। তারপর পায়ে হেঁটে মিলগেট পর্যন্ত আসতে পেরেছি। ইচ্ছা আছে যেখান থেকে মোনাজাত করা হবে সেখানে গিয়ে মোনাজাত ধরব।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা মমিনুল হক বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে আসছি মোনাজাত ধরার জন্য। ভোরবেলা বাসা থেকে রওনা দিয়ে এখানে এসে বসে আছি। মোনাজাত শেষ করে বাসায় ফিরে যাব।

সকাল সাড়ে ৭টায় কামারপাড়া রোডের মাথায় কথা হয় জয়নব বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, গাজীপুরা থেকে পায়ে হেঁটে এখানে আসছি মোনাজাতের জন্য। সঙ্গে ছেলের ঘরে নাতি রয়েছে। শুনেছি- মোনাজাত তাড়াতাড়ি শুরু হয়ে যাবে। লোকজনের কারণে সামনের দিকে যেতে পারিনি। তাই এখানে বসে মোনাজাতের জন্য অপেক্ষা করছি।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার ড.

মো. নাজমুল করিম খান বলেন, শনিবার রাত ১২টা থেকে টঙ্গী-কামারপাড়া রোড, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস পর্যন্ত এবং আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ ও গাজীপুরগামী যানবাহনগুলোকে গাবতলী দিয়ে কোনাবাড়ী হয়ে এবং ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে ভোগড়া বাইপাস দিয়ে ৩০০ ফিট রাস্তা ব্যবহার করে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এ সময় এসব সড়ক হয়ে কোনো পণ্যবাহী গাড়ি বা যান চলতে দেওয়া হবে না। তবে ইজতেমা সংশ্লিষ্ট সব ধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

শনিবার বাদ আসর ইজতেমা ময়দানের মূল বয়ানের মঞ্চে মোহরে ফাতেমি বা হজরত ফাতেমা (রা.) ও হজরত আলী (রা.)-এর বিয়ের দেনমোহর অনুসারে যৌতুকবিহীন গণবিয়ে সম্পন্ন হয়। প্রতিবারের মতো এবারও ৬৩ যুগলের যৌতুকবিহীন গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিয়ে পড়ান ভারতের মাওলানা যোহাইরুল হাসান।

৭২টি দেশ থেকে ২ হাজার ১৫০ জন এবারের ইজতেমায় বিদেশি মেহমান হিসেবে এসেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, কুয়েত, সৌদি আরব, আফগানিস্তান, জাপান, ওমান, কানাডা, মোজাম্বিক, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, কিরগিস্তান, সিঙ্গাপুর, ইতালি, জর্ডান ও যুক্তরাজ্য অন্যতম।

আজ আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হচ্ছে সুরায়ে নেজামের দুই ধাপের ইজতেমার প্রথম পর্ব। আবার ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে শুরায়ে নেজামের দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা। এর পর মাওলানা সাদ কান্দলভী অনুসারিদের ইজতেমা ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ ব ইজত ম ইজত ম র র ইজত ম র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদন নেই, প্রাণীর জোগানদাতা সাবেক মেয়র, পরিচালনায় সাবেক কাউন্সিলর

ভালুকের শরীরে পচন ধরার ঘটনায় আলোচনায় এসেছে ময়মনসিংহ নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের ভেতরে পরিচালিত মিনি চিড়িয়াখানাটি। এখানকার কর্মীরা চিড়িয়াখানাটির অনুমোদন ও প্রাণীগুলো আমদানির কাগজপত্র আছে দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বলছে, চিড়িয়াখানাটির কোনো অনুমোদন নেই।

সিটি করপোরেশন থেকে মেসার্স সেলিম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান চিড়িয়াখানার জমিটি বরাদ্দ নিয়েছিল। কর্মী ও আশপাশের লোকজনের ভাষ্য, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ইকরামুল হক (টিটু) এখানে প্রাণীর জোগান দিতেন। আর সামনে থেকে চিড়িয়াখানাটি পরিচালনা করতেন সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান।

২০১৩ সালে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মিনি চিড়িয়াখানাটি গড়ে তোলা হয়। ৩০ টাকায় টিকিট কেটে দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানাটিতে ঢুকতে পারেন। পরের বছর থেকে চিড়িয়াখানাটিতে প্রাণীর দেখাশোনা করছেন কামাল হোসেন। তিনি বলেন, কুমির, ভালুক, হরিণসহ ২৩ প্রজাতির প্রাণীর অনুমোদন আছে। তাঁর কাছে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি কিছু দেখাতে পারেননি।

কামাল হোসেন বলেন, সাবেক মেয়র (ইকরামুল হক) বেশির ভাগ সময় প্রাণীর ব্যবস্থা করতেন। বেশির ভাগ প্রাণী ঢাকা থেকে আনা হতো। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থাকলেও সাবেক মেয়র ও কাউন্সিলর কীভাবে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজনের নামে লাইসেন্স নিলেও চিড়িয়াখানাটি চালাতেন তাঁরাই (সাবেক মেয়র ও কাউন্সিলর)। অনেক লোক আছে ঢাকা থেকে এসে প্রাণী দিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি শুধু লাইসেন্স আছে। কিন্তু কত সালে লাইসেন্স নেওয়া হয়েছে, এসব জানি না।’

চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের প্রবেশমূল্য ৩০ টাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নওমুসলিমের বাড়ি ভেঙে ফেলায় সড়কে বিক্ষোভ-নামাজ আদায়
  • রাতে ৫ অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
  • ময়মনসিংহে চিড়িয়াখানাটির চুক্তি শেষ হয় ৯ মাস আগে, জানে না সিটি করপোরেশন
  • প্রথম আলোতে প্রতিবেদনের পর ময়মনসিংহ মিনি চিড়িয়াখানা সিলগালা, জব্দ ৪৮ প্রাণী
  • ভালুকের শরীরে পচন, বন্ধ হল ময়মনসিংহের মিনি চিড়িয়াখানা
  • সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরের আশঙ্কা নেই
  • জিভের জড়তা কাটাতে মুসা (আ.) যে প্রার্থনা করেছিলেন
  • অনুমোদন নেই, প্রাণীর জোগানদাতা সাবেক মেয়র, পরিচালনায় সাবেক কাউন্সিলর
  • ময়মনসিংহের মিনি চিড়িয়াখানায় ভালুকের শরীরে পচন
  • অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার