দীর্ঘদিনেও খালের ওপর নির্মাণ হয়নি সেতু। এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছেন ৯ গ্রামের মানুষ। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সরকার বদল হলেও এখানকার মানুষের ভাগ্য বদলায়নি।
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সরস্বতীর চরের খালের ওপর নির্মিত কাঠেরপুল এলাকার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। এই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন তিতাস ও মেঘনা উপজেলার ৯ গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। 
সাঁকো পার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিতাস উপজেলার সাতানী ইউনিয়নের প্রথম সরস্বতীর চরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে প্রবাহিত কাঠালিয়া নদী। সেখান থেকে একটি খাল উৎপন্ন হয়ে দ্বিতীয় সরস্বতী চরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সাতানী গ্রাম এলাকায় গিয়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খালটি আবার মিলিত হয়েছে কাঠালিয়া নদীতে। এই খাল মূলত প্রথম সরস্বতীর চর ও দ্বিতীয় সরস্বতীর চরকে দুই ভাগ করেছে। এই খালের ওপর নির্মিত সাঁকো দিয়ে প্রথম সরস্বতীর চর, দ্বিতীয় সরস্বতীর চর ও মেঘনা উপজেলার কাশিপুর, কাঠালিয়া, লক্ষণখোলা, সেনের চর, রাধানগর, পাড়ারবন্ধ, ব্রাহ্মণচরের ২৫ হাজার লোক কুমিল্লা শহর ও তিতাসের বাতাকান্দি বাজারে যাতায়াত করেন।
জানা গেছে, সরস্বতীর চরের খালের ওপর ১৫ বছর আগে বাঁশের সাঁকোর বদলে কাঠের সাঁকোটি নির্মাণ করা হয় গ্রামবাসীর টাকায়। এই সাঁকোর অবস্থা এখন জরাজীর্ণ। পার হতে গেলে দোল খায়, যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিকল্প উপায় না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই সাঁকো পারপার হতে হচ্ছে গ্রামবাসীর। এই সাঁকো পারাপার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ বৃদ্ধরাও।
দ্বিতীয় সরস্বতীর চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়ম খাতুন জানায়, স্কুলে যাওয়ার পথে সাঁকো পার হওয়ার 
সময় ভয় লাগে। মনে হয়, কখন যেন সাঁকো থেকে পড়ে যেতে হয়। সাঁকো দিয়ে যাওয়ার সময় নড়বড় করে। গ্রামের অনেকে সাঁকো পার হওয়ার ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না।
প্রথম সরস্বতীর চরের ৭০ বছর বয়সী মজিবুর রহমান জানান, এই গ্রাম প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২০০ বছরেও আগে। কিন্তু উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। সরকার বদল হয়েছে অনেকবার, তাদের ভাগ্য বদলায়নি। এই স্থানে নির্মাণ হয়নি সেতু। জীবদ্দশায় সেতু দেখে যেতে পারবেন কিনা সংশয় তাঁর।
দ্বিতীয় সরস্বতীর চরের কৃষক মোবারক হোসেন বলেন, ‘এ বছর ২০ বিঘা জমিতে ভুট্টা, আলু চাষ করেছি প্রথম সরস্বতীর চরে। জমিতে সার নিতে অনেক কষ্ট হয়। শ্রমিক দিয়ে সার নিতে হয়, ঠিকমতো শ্রমিকও পাওয়া যায় না।’ তাঁর ভাষ্য, যখন ফসল আনার সময় হয়, তখন কষ্ট আরও বেড়ে যায়। শ্রমিক দিয়ে পরিবহনের কারণে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যায়। এই খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ অনেক কমে যাবে।
কথা হয় দ্বিতীয় সরস্বতীর চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, খালের ওপর কাঠের সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা রয়েছে। সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থীরা আসতে ভয় পায়। প্রায়ই তারা নিজেরা গিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে যান। অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের দিয়ে যান। এই সাঁকো পার হতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই আহত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
তিতাস উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের ভাষ্য, সরস্বতীর চরের খালের ওপর সাঁকোর স্থানে ৩০ মিটার একটি সেতু নির্মাণের জন্য 
প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বরাদ্দ পাবেন বলে আশা তাঁর। বরাদ্দ পেলেই সেতু নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: খ ল র ওপর উপজ ল র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করাসহ ১২ প্রস্তাব

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করাসহ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে ১২টি প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) মন্ত্রীপরিষদ বিভাগকে লিখিতভাবে আশু বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ইসি জানায়, আশু বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে লিখিত মতামত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করাসহ ১২টির বেশি সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন সম্ভব (দুই একটা কম বেশি) বলে জানিয়েছে ইসি।

বুধবার নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আশু বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার সুপারিশ চূড়ান্ত করেছি।”

তিনি বলেন, “এখানে তিন ধরনের ক্যাটাগরি ছিল। যেটা আশু বাস্তবায়নযোগ্য কিন্তু রাজনৈতিক কোনো বিতর্ক নেই, সেগুলো আমরা দিয়েছি। যেগুলো ঐকমত্যের বিষয় আছে, সেগুলো নিয়ে আমরা কোনো মন্তব্য করিনি।”

ঢাকা/হাসান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ