পাবনার মালিগাছায় চাঁদা না পেয়ে তামিম ট্রাভেলসের বাস পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বাসমালিক এনামুল হকের কাছে মাসে ২০ হাজার টাকা দাবি করে না পেয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মালিগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সদর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
শনিবার ভোরে শংকরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বাসটি পাবনা-ঈশ্বরদী রুটে চলত। ইপিজেডের শ্রমিকও বহন করত। ভুক্তভোগী এনামুল শংকরপুর গ্রামের নায়েব আলী প্রামাণিকের ছেলে। রানু রূপপুরের বাসিন্দা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে বাসের মালিক এনামুলের কাছে রানু বিশ্বাস মাসিক ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাস চলাচল বন্ধ ও পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। শনিবার ভোরে তিনটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন এসে শংকরপুর গ্রামে রাখা বাসে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়।
এ সময় স্থানীয় লোকজন আগুন নেভাতে এগিয়ে আসেন। এতে ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর থেকে রানু বিশ্বাসসহ কয়েকজন চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, মানুষকে জিম্মি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
তামিম ট্রাভেলসের মালিক এনামুল হক বলেন, ‘দুই দিন আগে রানু বিশ্বাস এসে আমার থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি বলি, কিসের জন্য চাঁদা দিতে হবে। সে আমাকে বলে, চাঁদা না দিলে বাস চলতে দেওয়া হবে না। পুড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর রাতে রানু বিশ্বাসের নেতৃত্বে আমার বাসটি পোড়ানো হয়েছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’
মালিগাছা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুন্তাজ আলী বলেন, বাসটি পেট্রোল ঢেলে এমনভাবে পোড়ানো হয়েছে, যা বলার ভাষা নেই। ওসি এবং ইউএনওকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যারা এ অপকর্মে জড়িত, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার। এ চক্র এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এর থেকে পরিত্রাণ চান মানুষ।
মালিগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানু বিশ্বাসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার বলেন, কারা আগুন ধরিয়েছে, এখনও সেভাবে নাম পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ইউএনও নাহারুল ইসলাম বলেন, আগে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর সহায়তা দেওয়া যায় কিনা দেখা হবে। 
বিষয়টি কোনো রাজনৈতিক ঘটনা নয় জানিয়ে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বলেন, পুলিশ তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে অস্তিত্বহীন দেশের নামে দূতাবাস, গ্রেপ্তার স্বঘোষিত রাষ্ট্রদূত

‘দেশের’ নাম ওয়েস্ট আর্কটিকা। সেই দেশটির ভারতীয় দূতাবাস রাজধানী নয়াদিল্লির প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি ভাড়া বাসায়। আর সেই ‘দেশের ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের’ নাম হর্ষবর্ধন জৈন (৪৭)।

সম্প্রতি এই ‘রাষ্ট্রদূত’ গ্রেপ্তার হয়েছেন। কারণ, আদতে ওয়েস্ট আর্কটিকা নামে কোনো দেশেরই অস্তিত্ব নেই। ফলে তাঁর কূটনীতিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শুধু এটাই নয়, পুলিশের ভাষ্যমতে হর্ষবর্ধন সাবোরগা, পোলভিয়া, লোডোনিয়ার মতো কল্পিত দেশের রাষ্ট্রদূত বলে নিজেকে পরিচয় দিতেন।

পুলিশ জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার জৈন রাজধানী নয়াদিল্লির প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি ভাড়া বাসায় ওয়েস্ট আর্কটিকা নামের একটি কল্পিত দেশের দূতাবাস চালাচ্ছিলেন, যা অবৈধ। এ রকম কোনো দেশের অস্তিত্বই নেই। তিনি জাল কূটনৈতিক নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতেন। নিজেকে প্রভাবশালী দেখানোর জন্য ভারতের নেতাদের সঙ্গে এডিট করা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করতেন।

গত সপ্তাহে জৈনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, জৈনের মূল কাজ ছিল বিদেশে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ নেওয়া। পাশাপাশি তিনি ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে হাওলা পদ্ধতিতে (অবৈধ অর্থ লেনদেন) অর্থ পাঠানোর একটি চক্রও চালাতেন।

পুলিশ আরও জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

জৈনের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ নগদ সাড়ে ৫৩ হাজার মার্কিন ডলার , জাল পাসপোর্ট এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নকল সিলসহ জাল নথিপত্র উদ্ধার করেছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে এএফপি হর্ষবর্ধন বা তাঁর কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।

পুলিশ যে ওয়েস্ট আর্কটিকার কথা বলেছে, সেটি আসলে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত একটি অলাভজনক সংগঠন। এটি আন্টার্কটিকার পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি বিশাল, নির্জন অঞ্চলের সংরক্ষণে কাজ করার পাশাপাশি গবেষণার কাজে নিয়োজিত। এটি কোনো দেশ নয়।

একটি বিবৃতিতে ওয়েস্ট আর্কটিকা জানিয়েছে, হর্ষবর্ধন জৈন তাদের একটি ‘বড় অঙ্কের অনুদান’ দিয়েছিল। এরপর তাঁকে ‘ভারতে সম্মানসূচক কনসাল’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছে, জৈনকে কখনোই রাষ্ট্রদূতের পদ বা কোনো কূটনৈতিক ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।

অনারারি বা সম্মানসূচক কনসাল বলতে বোঝায়, এমন একজন ব্যক্তি, যিনি কোনো দেশের হয়ে অন্য দেশে প্রতীকী বা সীমিত দায়িত্বে কূটনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তিনি সরকারি কূটনীতিক নন। তাঁকে সাধারণত বেতনও দেওয়া হয় না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লাইভ কনসার্টে পোশাক বিড়ম্বনায় জেনিফার লোপেজ (ভিডিও)
  • কুয়েট শিক্ষক সমিতির আন্দোলন স্থগিত, ১৬০ দিন পর মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে ক্লাস
  • ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থও দেখতে হবে
  • গিল-সুন্দর-জাদেজার সেঞ্চুরিতে ভারতের জয়ের সমান এক ড্র
  • নতুন উপাচার্যের যোগদানে কুয়েটে অচলাবস্থা নিরসনের প্রত্যাশা
  • ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদাবাজি: গ্রেপ্তার ৪ জনের ৭ দিনের রিমান্ড
  • জনতা ব্যাংকের ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ: দুদকে অধ্যাপক বারকাতকে জিজ্ঞাসাবাদ
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজের অদ্ভুত রেকর্ড, আবার হারল অস্ট্রেলিয়ার কাছে
  • চাকরি ছেড়ে মুরগির খামারে বাজিমাত, আকরামের মাসে আয় অর্ধলাখ টাকা
  • ভারতে অস্তিত্বহীন দেশের নামে দূতাবাস, গ্রেপ্তার স্বঘোষিত রাষ্ট্রদূত