চাঁদা না দেওয়ায় বাস পুড়িয়ে দিল দুর্বৃত্তরা
Published: 1st, February 2025 GMT
পাবনার মালিগাছায় চাঁদা না পেয়ে তামিম ট্রাভেলসের বাস পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বাসমালিক এনামুল হকের কাছে মাসে ২০ হাজার টাকা দাবি করে না পেয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মালিগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সদর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
শনিবার ভোরে শংকরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বাসটি পাবনা-ঈশ্বরদী রুটে চলত। ইপিজেডের শ্রমিকও বহন করত। ভুক্তভোগী এনামুল শংকরপুর গ্রামের নায়েব আলী প্রামাণিকের ছেলে। রানু রূপপুরের বাসিন্দা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে বাসের মালিক এনামুলের কাছে রানু বিশ্বাস মাসিক ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাস চলাচল বন্ধ ও পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। শনিবার ভোরে তিনটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন এসে শংকরপুর গ্রামে রাখা বাসে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়।
এ সময় স্থানীয় লোকজন আগুন নেভাতে এগিয়ে আসেন। এতে ৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর থেকে রানু বিশ্বাসসহ কয়েকজন চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, মানুষকে জিম্মি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
তামিম ট্রাভেলসের মালিক এনামুল হক বলেন, ‘দুই দিন আগে রানু বিশ্বাস এসে আমার থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি বলি, কিসের জন্য চাঁদা দিতে হবে। সে আমাকে বলে, চাঁদা না দিলে বাস চলতে দেওয়া হবে না। পুড়িয়ে দেওয়া হবে। এরপর রাতে রানু বিশ্বাসের নেতৃত্বে আমার বাসটি পোড়ানো হয়েছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’
মালিগাছা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুন্তাজ আলী বলেন, বাসটি পেট্রোল ঢেলে এমনভাবে পোড়ানো হয়েছে, যা বলার ভাষা নেই। ওসি এবং ইউএনওকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। যারা এ অপকর্মে জড়িত, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার। এ চক্র এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এর থেকে পরিত্রাণ চান মানুষ।
মালিগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানু বিশ্বাসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার বলেন, কারা আগুন ধরিয়েছে, এখনও সেভাবে নাম পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ইউএনও নাহারুল ইসলাম বলেন, আগে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর সহায়তা দেওয়া যায় কিনা দেখা হবে।
বিষয়টি কোনো রাজনৈতিক ঘটনা নয় জানিয়ে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেহানুল ইসলাম বলেন, পুলিশ তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত ট্রাকে তরুণীকে ধর্ষণ: সেই চালকের আমৃত্যু কারাদণ্ড
চলন্ত ট্রাকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে (২০) ধর্ষণের অপরাধে ট্রাক চালক সোহেল রানাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-(২) এর বিচারক বেগম সালমা খাতুন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় দেন তিনি। দণ্ডপ্রাপ্ত ট্রাক চালক সোহেল রানা (৩২) বগুড়া সদর উপজেলার আশুখোলা গ্রামের মনসুর আলীর ছেলে।
মামলার বরাত দিয়ে আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান জানান, ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে লকডাউন চলছিল। স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এ অবস্থায় ঢাকার চন্দ্রা থেকে ভিকটিমসহ আরও দু’জন পুরুষ যাত্রী নিয়ে চালক সোহেল রানা এবং সহকারী ওহাব শেখ ট্রাক নিয়ে বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেয়। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর ট্রাকটি থামিয়ে পুরুষ যাত্রীদের জানানো হয় ট্রাক নষ্ট হয়ে গেছে। মেরামতে অনেক সময় লাগবে। এরপর দুই পুরুষ যাত্রী ট্রাক থেকে নেমে যান। তবে ওই তরুণী ট্রাকের কেবিনেই ছিলেন। এরপর চালক সোহেল রানা ওই তরুণীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ওই সময় ইউনুস আলী সুমন নামে এক ব্যক্তি ধর্ষণের ঘটনাটি তার মোবাইলে ভিডিও করেন। বিষয়টি টের পেয়ে চালক ও সহকারী দ্রুত ভিকটিমসহ ট্রাক নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। ইউনুস আলী সুমন জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানান বিষয়টি। এরপর সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় এলাকা থেকে চালক ও সহকারীসহ ট্রাকটি আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর চালক সোহেল রানা আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের সময় ২০২৩ সালের ১২ মে চালকের সহকারী ওহাব সেখ কারাগারে মারা যায়।