Samakal:
2025-03-06@21:27:53 GMT

৯০ শতক জমি আসলে কার

Published: 1st, February 2025 GMT

৯০ শতক জমি আসলে কার

রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার পাহাড়ি তুলা গবেষণা উপকেন্দ্র কার্যালয়ের জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের অধীন এ কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় কিছু লোক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি দিয়েছেন। এ ঘটনায় তুলা উন্নয়ন বোর্ড  রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছে। 
তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৪-৮৫ সালে জেলা প্রশাসন কাউখালী উপজেলার কচুখালী মৌজায় তুলা উন্নয়ন বোর্ডকে ৮ একর জমির বন্দোবস্ত দেয়। সেখানে পাহাড়ি তুলা গবেষণার জন্য তুলা উন্নয়ন বোর্ডের উপকেন্দ্র ভবন নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে জেলা প্রশাসনকে খাজনা প্রদানের মাধ্যেম দখলে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এরপরও কিছু মানুষ জমির মালিকানা দাবি করে জোরপূর্বক খুঁটি গেড়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। 
সম্প্রতি রাঙামাটি গণপূর্ত বিভাগের উদ্যোগে টেন্ডারের মাধ্যমে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কচুখালী মৌজায় তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ওই ৮ একর জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু হয়। শ্রমিকরা কাজ করতে গেলে কিছু লোক বাধা দেন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনায় গত ১৩ জানুয়ারি তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কাউখালী উপজেলা কর্মকর্তা মো.

সেলিম বাদী হয়ে রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সীমান্তবর্তী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বাসিন্দা জুলফিকার হোসাইন, মোহাম্মদ জানে আলম, মো. শফি ও  কাউখালী উপজেলা কচুখালীর বাসিন্দা পাথর মনি চাকমা, তাদের স্ত্রী ও প্রকৃত জমির মালিকের ওয়ারিশ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।  
সূত্র আরও জানায়, স্থানীয় ও চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কয়েকজন ভূমিদস্যু জানতে পারে কাউখালী তুলা উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ৯০ শতক রেকর্ডীয় জমি রয়েছে। ওই জমি পাহাড়িদের নামে রয়েছে। পরে ভূমি কার্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র বের করা হয়। রাঙ্গুনিয়া ও কাউখালী উপজেলার চার ব্যক্তি প্রকৃত জমির মালিকের সব তথ্য ও কাগজপত্র সংগ্রহ করে। একপর্যায়ে ২০২২ সালে প্রকৃত জমি মালিকের ওয়ারিশ ৬ জনের কাছ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নেন।  পরে ওই জমি তাদের স্ত্রীদের নামে বন্দোবস্ত করে নেন তারা। 
তবে জমির প্রকৃত মালিক মৃত তেজেন্দ্র লাল চাকমার ছেলে আলোক কুসুম চাকমা জানান, তার কাছ থেকে কেউ জমির বন্দোবস্তের জন্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে স্বাক্ষর নেননি। অপর মালিক মৃত রাজেন্দ্র লাল চাকমা ছেলে তুনিয়া চাকমা জানান, তার কাছ থেকে ৩-৪ বছর আগে একটি স্বাক্ষর নেওয়া হলেও কী জন্য নেওয়া হয়েছে তা তিনি জানেন না। এ ছাড়া মৃত রাজেন্দ্র লাল চাকমার ছেলে মিঠু চাকমার নাম পাওয়ার অব অ্যাটর্নি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, তার বাবা জায়গাটি বিক্রি করেছেন শুনেছেন, কিন্তু দলিলপত্রে বিক্রি করে দিয়েছেন কিনা জানি না। তবে একসময় ওই জায়গায় আমাদের ঘরবাড়ি থাকলেও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বাবা অন্য স্থানে চলে যান।   
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জুলফিকার হোসাইন ও মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, ‘আমাদের স্ত্রীদের নামে রেকর্ডীয় ৯০ শতক জায়গা দখল করে নিয়েছে তুলা উন্নয়ন বোর্ড। প্রকৃতপক্ষে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের জায়গাটি রয়েছে পাহাড়ের টিলার ওপর। সীমানা প্রাচীর নির্মাণে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ বাধা দিয়েছে। আমরা কাউকে হুমকি বা বাধা দিইনি। উল্টো আমাদের নানাভাবে হয়রানি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যে জায়গাটি তুলা উন্নয়ন বোর্ড দাবি করছে সেটি রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় পড়েছে, কাউখালীতে নয়।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা ৩ থেকে ৪ বছর আগে ৬ জন পাহাড়ির কাছ থেকে ৯০ শত জমি কিনেছি। পরবর্তী সময়ে আমাদের স্ত্রীদের নামে বন্দোবস্ত করে নেওয়া হয়েছে। রাঙামাটি ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ৯০ শতক জমি আমাদের বলে চিহ্নিত করে দিয়েছে। এখন আমরা ক্রয়সূত্রে ওই জায়গার মালিক।’
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের রাঙামাটি কার্যালয়ের প্রধান মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘ভূমিদস্যু জুলফিকার হোসাইন, জানে আলমসহ বেশ কিছু ব্যক্তি কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর দেওয়া জমি নিজেদের বলে দাবি করছেন। তুলা উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এসব জমির ভোগদখল ও খাজনা দিয়ে আসছে। সম্প্রতি কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে কিছু লোক বাধা দেওয়ায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

জমি নিয়ে বিরোধে দুই চোখ তুলে ফেলার অভিযোগ

যশোরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে খালুর দুই চোখ তুলে ফেলার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে যশোর শহরের বকচর করিম পেট্রোল পাম্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

আহত ব্যক্তির নাম শহিদুল ইসলাম (৬০)। তিনি বকচর করিম পাম্প কবরস্থান রোডের বাসিন্দা। অভিযুক্ত সাদ্দাম (৩০) তার ভায়রাভাই শাহ জামালের ছেলে। 

যশোর জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হাসিব মোহাম্মদ আলী হাসান জানান, দুর্বৃত্তরা শহীদুলের দুই চোখই উৎপাটন করে ফেলেছে। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। 

শহিদুলের পরিবারের সদস্যরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সাদ্দাম স্থানীয় নয়ন প্লাস্টিক দোকানের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় আকস্মিকভাবে শহিদুলের ওপর হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার চোখে আঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

শহিদুলের মেয়ে মারুফা জানান, তার বাবা এবং প্রতিবেশী তৌহিদের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শত্রুতা চলছিল। বিভিন্ন সময়ে তৌহিদ হুমকি ও ভয়ভীতি দিচ্ছিল। তৌহিদের সঙ্গে সাদ্দামের সখ্যতা রয়েছে। তৌহিদের পরিকল্পনায় সাদ্দাম তার বাবার ওপর হামলা চালিয়েছে।

যশোর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী বাবুল জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং হামলাকারীদের ধরতে একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। তদন্ত চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ