Samakal:
2025-04-10@12:14:16 GMT

৯০ শতক জমি আসলে কার

Published: 1st, February 2025 GMT

৯০ শতক জমি আসলে কার

রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার পাহাড়ি তুলা গবেষণা উপকেন্দ্র কার্যালয়ের জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের অধীন এ কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় কিছু লোক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি দিয়েছেন। এ ঘটনায় তুলা উন্নয়ন বোর্ড  রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছে। 
তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৪-৮৫ সালে জেলা প্রশাসন কাউখালী উপজেলার কচুখালী মৌজায় তুলা উন্নয়ন বোর্ডকে ৮ একর জমির বন্দোবস্ত দেয়। সেখানে পাহাড়ি তুলা গবেষণার জন্য তুলা উন্নয়ন বোর্ডের উপকেন্দ্র ভবন নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে জেলা প্রশাসনকে খাজনা প্রদানের মাধ্যেম দখলে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এরপরও কিছু মানুষ জমির মালিকানা দাবি করে জোরপূর্বক খুঁটি গেড়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। 
সম্প্রতি রাঙামাটি গণপূর্ত বিভাগের উদ্যোগে টেন্ডারের মাধ্যমে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কচুখালী মৌজায় তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ওই ৮ একর জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু হয়। শ্রমিকরা কাজ করতে গেলে কিছু লোক বাধা দেন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনায় গত ১৩ জানুয়ারি তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কাউখালী উপজেলা কর্মকর্তা মো.

সেলিম বাদী হয়ে রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সীমান্তবর্তী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বাসিন্দা জুলফিকার হোসাইন, মোহাম্মদ জানে আলম, মো. শফি ও  কাউখালী উপজেলা কচুখালীর বাসিন্দা পাথর মনি চাকমা, তাদের স্ত্রী ও প্রকৃত জমির মালিকের ওয়ারিশ ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।  
সূত্র আরও জানায়, স্থানীয় ও চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কয়েকজন ভূমিদস্যু জানতে পারে কাউখালী তুলা উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ৯০ শতক রেকর্ডীয় জমি রয়েছে। ওই জমি পাহাড়িদের নামে রয়েছে। পরে ভূমি কার্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র বের করা হয়। রাঙ্গুনিয়া ও কাউখালী উপজেলার চার ব্যক্তি প্রকৃত জমির মালিকের সব তথ্য ও কাগজপত্র সংগ্রহ করে। একপর্যায়ে ২০২২ সালে প্রকৃত জমি মালিকের ওয়ারিশ ৬ জনের কাছ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নেন।  পরে ওই জমি তাদের স্ত্রীদের নামে বন্দোবস্ত করে নেন তারা। 
তবে জমির প্রকৃত মালিক মৃত তেজেন্দ্র লাল চাকমার ছেলে আলোক কুসুম চাকমা জানান, তার কাছ থেকে কেউ জমির বন্দোবস্তের জন্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে স্বাক্ষর নেননি। অপর মালিক মৃত রাজেন্দ্র লাল চাকমা ছেলে তুনিয়া চাকমা জানান, তার কাছ থেকে ৩-৪ বছর আগে একটি স্বাক্ষর নেওয়া হলেও কী জন্য নেওয়া হয়েছে তা তিনি জানেন না। এ ছাড়া মৃত রাজেন্দ্র লাল চাকমার ছেলে মিঠু চাকমার নাম পাওয়ার অব অ্যাটর্নি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, তার বাবা জায়গাটি বিক্রি করেছেন শুনেছেন, কিন্তু দলিলপত্রে বিক্রি করে দিয়েছেন কিনা জানি না। তবে একসময় ওই জায়গায় আমাদের ঘরবাড়ি থাকলেও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বাবা অন্য স্থানে চলে যান।   
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জুলফিকার হোসাইন ও মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, ‘আমাদের স্ত্রীদের নামে রেকর্ডীয় ৯০ শতক জায়গা দখল করে নিয়েছে তুলা উন্নয়ন বোর্ড। প্রকৃতপক্ষে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের জায়গাটি রয়েছে পাহাড়ের টিলার ওপর। সীমানা প্রাচীর নির্মাণে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ বাধা দিয়েছে। আমরা কাউকে হুমকি বা বাধা দিইনি। উল্টো আমাদের নানাভাবে হয়রানি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যে জায়গাটি তুলা উন্নয়ন বোর্ড দাবি করছে সেটি রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় পড়েছে, কাউখালীতে নয়।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা ৩ থেকে ৪ বছর আগে ৬ জন পাহাড়ির কাছ থেকে ৯০ শত জমি কিনেছি। পরবর্তী সময়ে আমাদের স্ত্রীদের নামে বন্দোবস্ত করে নেওয়া হয়েছে। রাঙামাটি ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ৯০ শতক জমি আমাদের বলে চিহ্নিত করে দিয়েছে। এখন আমরা ক্রয়সূত্রে ওই জায়গার মালিক।’
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের রাঙামাটি কার্যালয়ের প্রধান মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘ভূমিদস্যু জুলফিকার হোসাইন, জানে আলমসহ বেশ কিছু ব্যক্তি কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর দেওয়া জমি নিজেদের বলে দাবি করছেন। তুলা উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এসব জমির ভোগদখল ও খাজনা দিয়ে আসছে। সম্প্রতি কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে কিছু লোক বাধা দেওয়ায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির ‘নামধারী সন্ত্রাসীদের’ হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় বিএনপি নেতা

রাজশাহীর রাজপাড়া থানা বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও মহানগর যুবদলের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন ও তাঁর পরিবার বিএনপির নামধারী সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নগরের লক্ষ্মীপুর বাকির মোড় এলাকায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে রুহুল আমিন এ অভিযোগ করে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে রুহুল আমিন বলেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবনে তিনি বিএনপির আদর্শ ছাড়া অন্য কোনো আদর্শে কখনোই জড়িত ছিলেন না। এ কারণে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় ৯টির বেশি মামলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ১০ বারের বেশি কারাবরণ করেছেন। এখনো নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। দল করতে গিয়ে পারিবারিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হলেও দমে যাননি।

তিনি বলেন, এত কিছুর পরও দলের বিপথগামী কিছু সদস্য, আওয়ামী লীগের এজেন্ট ও পতিত সরকারের সুবিধাভোগী অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি রাতে তাঁর বাসভবনে হামলার শিকার হয়েছেন।

রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, হামলায় নেতৃত্ব দেন রাজপাড়া বিএনপির বর্তমান সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ তৎকালীন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিন আহমেদ ও তাঁর ভাই তুহিন, কাশিয়াডাঙ্গা থানা বিএনপির সদস্য মুরাদ পারভেজ, আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী ক্যাডার খিচ্চু, নাইম, সবুজ ও হৃদয়সহ তাঁদের সহযোগীরা। তাঁরা তাঁর বাসভবনে ভাঙচুর করে পরিবারসহ তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুন দেন। এলোপাতাড়ি গুলি করে লুটতরাজ করেন। পুলিশ ইতিমধ্যে ঘটনার আলামত হিসেবে গুলির খোসাও উদ্ধার করেছে। কোনোমতে প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় বর্তমানে আতঙ্কিত ও চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছেন।

যুবদলের এই নেতা বলেন, মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটি, মহানগরের আওতাধীন রাজপাড়া থানা কমিটিসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের কমিটিগুলোতে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও সুবিধাভোগীদের সরাসরি সদস্য করা হয়েছে। এরপরও বিগত রমজানে ইফতার মাহফিল আয়োজন করে রাজপাড়া থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে একই ব্যক্তিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অর্থাৎ অভিযুক্ত সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমানকে সভাপতি ও সাবেক সদস্যসচিব আমিনুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে কাউন্সিল ও মতামত ছাড়াই কমিটি ঘোষণা করা হয়, যা প্রহসনের নামান্তর মাত্র বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এত অভিযোগ ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের আবার নতুন করে পদায়ন করা আর অপরাধীদের পুরস্কৃত করা একই কথা। এই কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে অপরাধীদের বিভিন্ন কমিটিতে পদায়ন করে পুনর্বাসন করার কারণে স্থানীয়ভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং পরীক্ষিত ত্যাগী নেতা-কর্মীরা দল থেকে বিমুখ হয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

রুহুল আমিন বলেন, শুধু দুর্নীতি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারণেই পরিবারসহ তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছে দলে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীরা। তিনি এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরও দৃশ্যমান কোনো ফলাফল এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি। প্রতিনিয়ত বিতর্কিত ব্যক্তি ও বিএনপির কথিত নেতাদের থেকে পরোক্ষভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি পাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে তাঁর স্ত্রী নাদিরা বেগম উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে রাজপাড়া থানা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘রুহুল আমিন আমার ঘনিষ্ঠ মানুষ। আমি তাঁর হেফাজতকারী। তাঁকে হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে হয়তো আমার বিরুদ্ধে এসব কথা বলেছেন। তাঁর যে ক্ষতি করা হয়েছে, সে ব্যাপারে আমি নিজেই তদন্তের দাবি করেছি।’ আওয়ামী লীগের লোকজনকে কমিটিতে রাখার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এ রকম যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে কেন্দ্র তাঁদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ