চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে সমমনা পরিষদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে না দিয়ে একটি পক্ষকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিষদের সমন্বয়ক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু। তিনি বলেন, ‘বহিরাগত নিয়ে নামধারী গুটিকয়েক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বৃহত্তম সংগঠন সমমনা পরিষদের কোনো সদস্যকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে দিচ্ছে না। এর মাধ্যমে তারা পেশিশক্তি প্রদর্শনের ন্যক্কারজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। পাশাপাশি ২ হাজার ৮০০ সিঅ্যান্ডএফ সদস্যের ৫০ বছরের ধারাবাহিক সুষ্ঠু নির্বাচনের ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত করারও পাঁয়তারা করছে।’ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের আগ্রাবাদে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে সমন্বয়ক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, ‘চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ৫০ বছরের ধারাবাহিক সুষ্ঠু নির্বাচনের ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত করে গত ২৭, ২৯ জানুয়ারি ও ৩০ জানুয়ারি সারাদিন বিপুলসংখ্যক বহিরাগত নিয়ে ‘বৃহত্তর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ঐক্য পরিষদ’ নামধারী গুটিকয়েক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সমমনা পরিষদের কোনো সদস্যকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে দেয়নি। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন তাদের হাতে হেনস্তারও শিকার হয়েছেন। সিঅ্যান্ডএফ টাওয়ারের সব সিসিটিভি ক্যামেরায় কালো টেপ লাগিয়ে বাঁধা দেওয়াসহ অবৈধ কর্মকাণ্ডের সব অপকর্মের প্রমাণ ঢাকতেও অপচেষ্টা করেছে তারা।’ 
বিলু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এসব ঘটনার পর নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য পুনরায় সময় নির্ধারণ করেন। তবে এতেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে বাধা দেওয়ার মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা চলমান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের অস্বাভাবিক নীরবতায় এ ধরনের ঘটনা নির্বিঘ্নে ঘটতে দেওয়ায় সাধারণ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট তথা ব্যবসায়ী সমাজ আজ আতঙ্কিত, শঙ্কিত। সদস্যদের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ন করার এই ধারাকে ব্যবসায়ী সমাজের জন্য অশনিসংকেত এবং এটি সদস্যদের জীবন-জীবিকা পেশাগত মর্যাদার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।’ হেনস্তার শিকার পার্থ প্রতীম বড়ুয়া বলেন, ‘মনোনয়নপত্র নিতে গেলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত আমাকে জোর করে বের দেয়। মারতে তেড়ে আসে। পরে দেওয়া হয় নানা হুমকি-ধমকি।’  
অবিলম্বে নির্বাচনের পরিবেশ সুনিশ্চিত করার জন্য পরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রম অধিদপ্তর ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানান নেতারা। একতরফা নির্বাচনের এই প্রহসন প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনী তফসিল ঘোষণারও দাবি জানান বিক্ষুব্ধরা। 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন– সমমনা পরিষদের উপদেষ্টা এমএ সাত্তার, আবদুল গণি, এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন, মিচ্ছু সাহা, ফয়েজুল্লাহ মজুমদার প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত কর র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘এক বাক্সে ভোট পাঠাতে’ সমমনা ৫ ইসলামি দলের ঐকমত্য

‘একটি বাক্সে ভোট পাঠাতে’ সমমনা পাঁচ ইসলামি রাজনৈতিক দলের নেতারা একমত হয়েছেন। আজ বুধবার সমমনা দলের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংলাপে এ বিষয়ে নেতারা একমত হন।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা। এতে নেতৃত্ব দেন দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংস্কার, নির্বাচন ও চলমান পরিস্থিতি নিয়ে এই সংলাপ করে ইসলামী আন্দোলন।

বেলা সোয়া একটায় সংলাপ বৈঠক শেষ করে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, ‘আমরা সমমনা পাঁচটি ইসলামী রাজনৈতিক দল একত্র হয়ে কতগুলো মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পেরেছি। সামনে জাতীয় নির্বাচন, আমরা যেন ইসলামি দলগুলো একটি বাক্সে ভোট পাঠাতে পারি, বিষয়টি নিয়ে কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। অনেকের আন্তরিকতা প্রকাশ পেয়েছে। আলোচনায় আমরা সন্তুষ্ট।’

প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো শেষ হওয়ার পরই যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘বিদেশিরা যাতে বাংলাদেশকে নিয়ে টালবাহানা না করতে পারে, এর প্রতিবাদ করার বিষয়ে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। ইসলামি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায়ও আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি।’

নারী সংস্কারবিষয়ক কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়ে রেজাউল করীম বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে। আমরা এ বিষয়ে একমত হয়েছি। তা না করলে প্রতিবাদে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট, খুনি ও টাকা পাচারকারীদের বিচার ও টাকা ফেরত আনার বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি সম্পন্ন করতে হবে।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটি শেষ সংলাপ নয়, জানিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, এই আনুষ্ঠানিকতা আজই শেষ নয়। লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য ধারাবাহিকভাবে এই কার্যক্রম (সংলাপ) চলবে।

সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য যৌক্তিক সময় কত দিন, এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘সংস্কারের বিষয়ে নির্ধারিত সময় বলা যায় না। তবে সংস্কার যাতে দ্রুত হয় এটাই আমাদের চাওয়া।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই সংলাপ ধারাবাহিকভাবে চলবে বলে জানান উপস্থিত রাজনৈতিক দলের নেতারা।

ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আজকের সংলাপে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি ও খেলাফত মজলিস অংশ নেয়।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, ইসলামী আন্দোলন সংস্কারকে মুখ্য বিবেচনা করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে। নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের আসনভিত্তিক একক প্রার্থী দেয়া এবং নারী কমিশনের বিতর্কিত সুপারিশ নিয়ে করণীয় নির্ধারণ বিষয়ে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংলাপে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, সহসভাপতি মাওলানা আবদুল কুদ্দুস কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ।

আরও উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা সাখাওয়াত হুসাইন, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, সহসভাপতি মাওলানা আবদুল মাজেদ আতহারি, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করীম আবরার প্রমুখ।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে দলটির মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মুসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একক প্রার্থী দিয়ে ভোটে লড়তে চায় ৫ ইসলামপন্থী দল, জামায়াতের সিদ্ধান্ত পরে
  • বাংলাদেশ ইয়ার্ণ মার্চেন্টস নির্বাচনে সম্ভাব্য ২৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
  • ‘এক বাক্সে ভোট পাঠাতে’ সমমনা ৫ ইসলামি দলের ঐকমত্য