অর্ধশত বছরের নির্বাচনী ঐতিহ্য নষ্ট করার অভিযোগ
Published: 1st, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে সমমনা পরিষদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে না দিয়ে একটি পক্ষকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিষদের সমন্বয়ক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু। তিনি বলেন, ‘বহিরাগত নিয়ে নামধারী গুটিকয়েক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বৃহত্তম সংগঠন সমমনা পরিষদের কোনো সদস্যকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে দিচ্ছে না। এর মাধ্যমে তারা পেশিশক্তি প্রদর্শনের ন্যক্কারজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। পাশাপাশি ২ হাজার ৮০০ সিঅ্যান্ডএফ সদস্যের ৫০ বছরের ধারাবাহিক সুষ্ঠু নির্বাচনের ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত করারও পাঁয়তারা করছে।’ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরের আগ্রাবাদে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে সমন্বয়ক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, ‘চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ৫০ বছরের ধারাবাহিক সুষ্ঠু নির্বাচনের ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত করে গত ২৭, ২৯ জানুয়ারি ও ৩০ জানুয়ারি সারাদিন বিপুলসংখ্যক বহিরাগত নিয়ে ‘বৃহত্তর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ঐক্য পরিষদ’ নামধারী গুটিকয়েক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সমমনা পরিষদের কোনো সদস্যকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে দেয়নি। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন তাদের হাতে হেনস্তারও শিকার হয়েছেন। সিঅ্যান্ডএফ টাওয়ারের সব সিসিটিভি ক্যামেরায় কালো টেপ লাগিয়ে বাঁধা দেওয়াসহ অবৈধ কর্মকাণ্ডের সব অপকর্মের প্রমাণ ঢাকতেও অপচেষ্টা করেছে তারা।’
বিলু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এসব ঘটনার পর নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য পুনরায় সময় নির্ধারণ করেন। তবে এতেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে বাধা দেওয়ার মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা চলমান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের অস্বাভাবিক নীরবতায় এ ধরনের ঘটনা নির্বিঘ্নে ঘটতে দেওয়ায় সাধারণ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট তথা ব্যবসায়ী সমাজ আজ আতঙ্কিত, শঙ্কিত। সদস্যদের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ন করার এই ধারাকে ব্যবসায়ী সমাজের জন্য অশনিসংকেত এবং এটি সদস্যদের জীবন-জীবিকা পেশাগত মর্যাদার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।’ হেনস্তার শিকার পার্থ প্রতীম বড়ুয়া বলেন, ‘মনোনয়নপত্র নিতে গেলে কয়েকজন দুর্বৃত্ত আমাকে জোর করে বের দেয়। মারতে তেড়ে আসে। পরে দেওয়া হয় নানা হুমকি-ধমকি।’
অবিলম্বে নির্বাচনের পরিবেশ সুনিশ্চিত করার জন্য পরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রম অধিদপ্তর ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানান নেতারা। একতরফা নির্বাচনের এই প্রহসন প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনী তফসিল ঘোষণারও দাবি জানান বিক্ষুব্ধরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন– সমমনা পরিষদের উপদেষ্টা এমএ সাত্তার, আবদুল গণি, এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন, মিচ্ছু সাহা, ফয়েজুল্লাহ মজুমদার প্রমুখ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইল বার সমিতিতে বিএনপি-জামায়াত প্যানেল নির্বাচিত
টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে (২০২৫-২০২৬) আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল এবং আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্যানেলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ জন্য বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের সকল প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে এ নির্বাচন পরিচালনার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মোনায়েম হোসেন খান (আলম) বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন। নির্বাচনে মোট ১৪টি পদে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের কথা ছিল।
বিএনপি-জামায়ত সমর্থিত প্যানেল থেকে এবার সভাপতি নির্বাচিত হলেন জহুর আজহার খান, আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন এ কে এম রফিকুল ইসলাম (রতন)।
আরো পড়ুন:
ফ্লিকের মাইলফলক স্পর্শের রাতে দুমাস পর জয়ের ধারায় বার্সালোনা
‘৯’ গোলের মহারণে জয়ী বার্সা, চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে
এ বছর বার সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হলে নির্বাচনে মোহাম্মদ শামস্ উদ্দিনের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্যানেল মনোনয়নপত্র কিনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা চাপের মুখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে এ বিদ্রোহী প্যানেলের প্রার্থীরাও একই পথে হাঁটেন। ফলে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক বার সমিতিতে এসে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আপত্তি তুলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিতে বলেন। এ নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে আওয়ামী প্যানেলের সকল প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। আওয়ামী প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন ওয়ারেজ আলী মিয়া (নান্নু) ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন মীর মাহফুজুল ইসলাম শামীম।
আওয়ামী বিদ্রোহী প্যানেল থেকে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন মোহাম্মদ শামস্ উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন মোহাম্মদ মহি উদ্দিন মিয়া (মামুন)। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দরখাস্তে উদ্ভুত পরিস্থিতি, অসুস্থতা এবং পারিবারিক সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোনায়েম হোসেন খান (আলম) বলেন, যে সকল প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেছিলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সেই আবেদনগুলো গ্রহণ করা হয়েছে। এতে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিধিমোতাবেক বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের সকল প্রার্থীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে বার সমিতির সভাপতি ও আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ নেতা অ্যাডভোকেট এ কে এম শামীমুল আক্তার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঢাকা/কাওছার/বকুল