‘পরিবর্তন স্থায়ী করতে নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন’
Published: 1st, February 2025 GMT
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগের বর্বরতার জন্যই জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। এ অভ্যুত্থানের জন্য অনেক তরুণ প্রাণ দিয়েছেন। তাদের প্রাণের বিনিময়ে দেশে পরিবর্তন এসেছে। এ পরিবর্তন স্থায়ী করার জন্য নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন।
আজ শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভা মাঠে এক আলাচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনআকাঙ্ক্ষার রাজনীতি’ শীর্ষক সভা আয়োজন করে সোনারগাঁ উপজেলা গণঅধিকার পরিষদ।
নুরুল হক নুর বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছরে বিচারবর্হিভূতভাবে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। স্বৈরাচার সরকারের বিপক্ষে কথা বলতে গিয়ে গুম, হত্যা, হামলা ও মামলার শিকার হতে হয়েছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান এভাবে আসেনি। গণতান্ত্রিক মুক্তিকামী মানুষ, ছাত্র, জনতা একত্র হয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটানোর জন্য দেড় বছর লড়াই করতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আশা করি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে দেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করবে। এ নির্বাচনে চাঁদাবাজ, মাফিয়া ও ডনদের ভোট দেওয়া যাবে না। নতুন নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে, না হলে গণঅভ্যুত্থান বেহাত হবে।
গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহসভাপতি ওয়াহিদুর রহমান মিল্কির সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও মুখপাত্র ফারুক হাসান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গণঅভ য ত থ ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
প্রকৃত জাতীয় ঐক্য করতে হলে শ্রমিকের ঐক্য দরকার: আনু মুহাম্মদ
প্রকৃত জাতীয় ঐক্য করতে হলে শ্রমিকের ঐক্য দরকার বলে মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আসলে মজুরের দেশ। এদেশের ১০ ভাগ জনগণ কৃষক, গার্মেন্টস শ্রমিক, কারখানার শ্রমিক, গৃহ শ্রমিক, দোকান শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, আউটসোর্সিং শ্রমিক। একটি দেশ কেমন চলছে তা বোঝা যায় সে দেশের শ্রমজীবী মানুষ কেমন আছে কিংবা কতটা সম্মানজনক জীবন যাপন করছে। এই শ্রমিকের ভেতর নারী, পুরুষ, আদিবাসী, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ রয়েছে। তাই প্রকৃত জাতীয় ঐক্য করতে হলে শ্রমিকের ঐক্য দরকার।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন অধ্যাপক তিনি। বন্ধ কারখানা চালু, বকেয়া মজুরি পরিশোধ, শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিতকরণ ও মিথ্যা মামলায় শ্রমিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, গত ১৬ বছর ধরে শ্রমিকদেরকে বিভিন্নভাবে অপমান করে বাংলাদেশে এক ভয়ংকর রকম স্বৈরশাসন কায়েম করা হয়েছে। প্রতিটি গণঅভ্যুত্থানের দিকে তাকালে শ্রমিকের আন্দোলনের শক্তি বুঝা যায়। থ্রি জিরো তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনুস এখন সরকারের দায়িত্বে। তিন শূন্যের এই তত্ত্বে রয়েছে কার্বন শূন্য, বেকারত্ব শূন্য এবং দারিদ্র শূন্য। অথচ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন কারখানা বন্ধ হয়ে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছে। তাদের বকেয়া মজুরি এখনো পরিশোধ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আইএমএফ, এডিবির মতো প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বৈশ্বিক সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ। আইএমএফের তিন বছরে যে চার বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য সরকার যে জনবিরোধী শর্ত পূরণ করছে, সেই একই পরিমাণের ডলার প্রবাসী শ্রমিকরা এই দেশে প্রতি দুই মাসে প্রেরণ করে। হাশেম ফুড কারখানায় শ্রমিক হত্যার গণতদন্তে শিল্প পুলিশ বাতিল করার যে প্রস্তাব রাখা হয়েছিল, তা এখনও মানা হয়নি বলে জানান তিনি।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য লেখক ও গবেষক মাহতাব উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় এবং অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের সভাপতিত্বে উক্ত সভায় বক্তব্য প্রদান করেন গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম, গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নে সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস, গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি, আ ক ম জহিরুল ইসলাম, গার্মেন্টস টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাসুম রেজা, শ্রমজীবী আন্দোলনের আহ্বায়ক হারুন আর রশীদ ভূঁইয়া এবং চলচ্চিত্রকর্মী আকরাম খান। সভায় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি, পাটকল শ্রমিক, লেদার শ্রমিক, জণগণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক কর্মী, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক এবং অধিকারকর্মীরা সংহতি প্রকাশ করেছেন।