আওয়ামী দোসরদের অপসারণসহ ৯ দাবি ইবি ছাত্রদলের
Published: 1st, February 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) স্বৈরাচার আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে অপসারণসহ ৯ দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শাখা ছাত্রদল।
শনিবার (১ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপি প্রদানকালে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, আনারুল ইসলাম, সদস্য রাফিজ আহমেদ ও নুর উদ্দিনসহ অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃদ্ধি করা ফি কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করতে হবে; হলে মেধার ভিত্তিতে সিট প্রদান করতে হবে; গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব স্থাপনার নাম দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে; স্বৈরাচারীর দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে দ্রুত অপসারণ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিরোধীতাকারী সব শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে সব নিয়োগের সুষ্ঠু তদন্ত করে অবৈধ নিয়োগ বাতিল করা; সব ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ ও নির্মাণ সরঞ্জাম ক্রয়ের সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে; শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে; পশ্চিম পার্শ্বে প্রধান ফটক নির্মাণ ও সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করতে হবে।
শাখা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্র সংগঠন। আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তির দাবির সঙ্গে আছি। শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। সে জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষে দাবিগুলো উপাচার্যের কাছে পেশ করা হয়েছে।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম রকল প ছ ত রদল
এছাড়াও পড়ুন:
রানা প্লাজা ধসের ১২ বছর: স্বজনদের আহাজারি থামেনি, সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের দাবি
তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের পদচারণে মুখর হয়ে থাকত স্থানটি। সেই জায়গা এখন পরিত্যক্ত। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেখানে উপস্থিত হতে শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ নানা পেশাজীবি মানুষ। আজকের দিনটি তাঁদের কাছে ভীষণ যন্ত্রণা আর কষ্টের। ২০১৩ সালের এই দিনে ঢাকার সাভার বাসস্ট্যান্ডের অদূরে রানা প্লাজা ধসে নিহত হন ১ হাজার ১৩৮ জন। আহত হন অনেকে।
আজ রানা প্লাজা ধসের ১২ বছর। ওই দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণসহ নানা দাবিতে সকাল সাড়ে সাতটার পর থেকে ধসে পরা রানা প্লাজার পরিত্যক্ত জায়গার সামনের দিকের একটি অংশে জড়ো হতে শুরু করেন নিহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে ওই জায়গায় অস্থায়ী প্রতিবাদ-প্রতিরোধ শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তাঁরা।
সকাল সোয়া আটটার দিকে ভবন ধসে পরা জায়গাটির এক পাশে দাঁড়িয়ে ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে থাকতে দেখা যায় জোসনা বেগমকে। কাছে যেতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবাক (ছেলে) তোমরা আইনা দিবার পারবা? আমার বাবাক তোমরা বাইর কইরা দাও।’
জোসনা বেগম জানান, রানা প্লাজা ধসের দিন সকালে ভাত খেতে বসেছিলেন। এ সময় ছোট ছেলে সুরুজ মিয়া কারখানায় ফাটল দেখা দেওয়ায় বেতন দিয়ে ছুটি দিলেই বাসায় চলে আসবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে সুরুজ আর ফেরেননি। পরে শুনেছেন মারা গেছেন। তাঁর লাশের খোঁজ পাননি তিনি।
রানা প্লাজার ষষ্ঠ তলার একটি কারখানায় সহকারী (হেলপার) হিসেবে কাজ করতেন ইয়ানুর বেগম। তাঁর দাবি ন্যায্য ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের। ইয়ানুর বেগম বলেন, ‘গত ১১ বছরে যদি আমরা ক্ষতিপূরণ পাইতাম, তাহলে কেউ আন্দোলন করত না। কেউ রাস্তায় নেমে বলত না, আমাদের এক দফা এক দাবি ক্ষতিপূরণ চাই। বর্তমান সরকার (অন্তর্বর্তীকালীন) বলছিল, ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কিন্তু এখনো সেটি দেওয়া হয়নি।’
আরও পড়ুনরানা প্লাজা ধসের এক যুগ: এক হাজারের বেশি শ্রমিক হত্যার বিচার শেষ হয়নি ৪ ঘণ্টা আগেশ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও নানা দাবি জানাচ্ছেন। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় এখনো আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হয়নি। রানা প্লাজার আহত শ্রমিকেরা চিকিৎসার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কনভেনশন ১২১ অনুসারে নিহত ও আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার করতে হবে।
বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অরবিন্দ ব্যাপারী বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের ১২ বছরে দোষীদের বিচার দেখতে পাইনি। আগের সরকার বিচারের আশ্বাস দিয়েছিল; কিন্তু বিচার হয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের দাবি, দোষীদের দ্রুত বিচার করতে হবে। শ্রমিকদের ন্যয্য দাবিগুলো পূরণ করতে হবে।’
সকাল ১০টা পর্যন্ত বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আনন্দোলন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল-গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশ, গার্মেন্টস শ্রমিক টেক্সটাইল ফেডারেশন, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রসহ নানা শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ নিহত ব্যক্তিদের স্বজন ও আহত শ্রমিকেরা অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।