সাতক্ষীরায় বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল
Published: 1st, February 2025 GMT
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া ও কুলিয়া ইউনিয়ন এবং ৪৫টি ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দেবহাটা উপজেলা বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে পারুলিয়া বাজার থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দেবহাটা উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির পল্টু, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাবিব মন্টু, উপজেলা বিএনপির সাবেক কোষাধক্ষ্য রেজাউল করিম, পারুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।
আরো পড়ুন:
হাসিনা ভালো হয়নি, ভারত থেকেও দুষ্টুমি করছেন: ফখরুল
ধান ক্ষেতে বিএনপি নেতার মরদেহ, স্ট্রোকে মৃত্যু ধারণা পুলিশের
সমাবেশে বক্তরা বলেন, ‘‘ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে জেল, জুলুম, হয়রানি ও নির্যাতন সহ্য করেছি। তখন আমরা দলের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। অথচ এই কমিটিতে এমন অনেককেই রাখা হয়েছে, যারা গত ১৭ বছরে আমাদের পাশে ছিল না এবং আন্দোলনে তাদের কোন ভূমিকা ছিল না।’’
বক্তারা আরো বলেন, ‘‘দলের সংকটের সময় একবারের জন্যও মাঠে আসেনি, তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে আমাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিএনপির আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে আমরা মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। আমাদের অনেক নেতাকর্মী এখনো বিভিন্ন মামলায় হাজিরা দিচ্ছে। অথচ এসব ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি।’’
তারা বলেন, তারা এ কমিটি মানেন না। এটি বাতিল করতে হবে। তাদের দাবি না মানা হলে ভবিষ্যতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও তারা হুঁশিয়ারি দেন।
তবে নওয়াপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির নবগঠিত কমিটির সভাপতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘‘আমরা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী নিয়ে কমিটি করেছি, এটা সঠিক না। প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে সবাইকে নিয়ে কর্মী সম্মেলন করে কমিটি গঠন করেছি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘যারা কমিটি বাতিল করার জন্য মশাল মিছিল করছেন, তারা আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছেন।’’
ঢাকা/শাহীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র আওয় ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সেতু ভেঙে দুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ
নদীভাঙনের কবলে পড়ে সেতু ভেঙে খালে পড়েছে। ঘটনাটি এক মাস আগে ঘটলেও সেতু মেরামত বা পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। এতে দুর্ভোগে পড়েছে ১০ গ্রামের মানুষ।
জানা যায়, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় লেবুতলা-ডুমরিয়া বাজার সড়কের চিথলিয়া গ্রামের কাটা খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ৩৪ দিন আগে ভেঙে পড়ে। এতে সেতুর পাশে স্থাপিত পানি সরবরাহ লাইন ঝুঁকিতে পড়েছে। ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন, মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। ২১ দিন আগে স্থানীয়রা ভাঙা সেতুর ৫শ মিটার পূর্ব পাশে খালের স্লুইস গেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনো রকমে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে। এতে মানুষ ও মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহন চলাচল করলেও বড় যানবাহন বা উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন করা যচ্ছে না। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন কৃষিনির্ভর এলাকার কৃষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। গ্রামবাসী দ্রুত সেতুটি মেরামত করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান দাবি করেছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, গত বছর ৩০ ডিসেম্বর শৈলদহ নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে সেতুটি ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে গেছে। তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়েছেন। বিকল্প পথে চলাচলের ব্যবস্থা করতে তারা গত ১৬ জানুয়ারি এলজিইডি’র গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে কিছু কাজ করার জন্য অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে তারা ওই সেতুর বিকল্প ও স্থায়ী চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
চিথলিয়া গ্রামের গৃহবধূ সুবর্ণা মজুমদার বলেন, ডুমরিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এ এলাকায় একটি হাইস্কুল, দুটি প্রাইমারি স্কুল, একটি বাজার, পানির ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ধর্মীয় উপাসনালয়, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেতুর পাশে স্থাপিত ইউনিয়ন পানি সরবরাহ পাইপলাইনও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। গত ১০ জানুয়ারি স্থানীয়রা ওই খালের স্লুইস গেটের ওপর কাঠ বিছিয়ে কোনো রকম যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। তাও খালের এপার ওপার দিয়ে অন্তত ১ কিলোমিটার পথ ঘুরে কাঁচা রাস্তার ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এমনকি কৃষিপণ্য, মাছ, পশুখাদ্যসহ অনেক পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে না। তারা সেতু সংস্কার করে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী সরদারপাড়া গ্রামের গৃহবধূ সুখি বেগম জানান, তিনি নিয়মিত এ পথে যাতায়াত করেন। সেতু ভেঙে যাওয়ায় তাদের অনেকটা পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে তাদের অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে। তারা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান।
ভ্যানচালক ইয়াকুব তালুকদার বলেন, সেতু ভাঙার পর ১০ দিনের মতো এখানে গাড়ি চালাতে পারেননি। পরে স্লুইস গেটে কাঠ বিছিয়ে দিয়ে স্থানীয়রা যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছেন। তারা চান এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হোক।
এলজিইডির গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই জনগণের চলাচল ও পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হবে।