ভোটার তালিকা হালনাগাদে ছুটির দিনেও খোলা থাকবে ইসি অফিস
Published: 1st, February 2025 GMT
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনেও অফিস চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের জনবল ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
২০২৫ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২০ জানুয়ারি, চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে নিবন্ধন কার্যক্রম।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে (রাজস্ব, আউটসোর্সিং, সংযুক্ত ও দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত) ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনসহ অফিস সময়ের পরেও দায়িত্ব পালন করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রটোকল টিমের সদস্য, দেহরক্ষী, গানম্যান, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদেরও নির্ধারিত সময় পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ইতোমধ্যে এনআইডি মহাপরিচালক, চিফ একাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসারসহ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নারীরা ঝুঁকছেন কৃষিশ্রমে মজুরি নিয়ে অসন্তোষ
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় কৃষিকাজে স্থানীয় নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে বহুগুণ।
পরিবারের চাহিদা মেটানো, নিম্ন আয়ের পরিবারে বাড়তি আয়ের উৎস সৃষ্টির পাশাপাশি স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে অনেক নারী উদ্যোক্তা হিসেবেও কৃষি কাজে ঝুঁকছেন।
এসব নারীর মধ্যে একটি বড় অংশ দরিদ্র পরিবারের। যারা পারিবারিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের আশায় স্থানীয় কৃষকের ফসলি জমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। বাড়তি অর্থ আয়ের উপায় হিসেবে এ কাজে এখন যুক্ত হচ্ছেন স্থানীয় অনেক নারী। পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি সমান তালে কাজ করে গেলেও মজুরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছেন তারা।
উপজেলার ৫টি চা বাগানে বসবাসকারী নারী ও কিশোরীরা স্থানীয় কৃষকদের ফসলি জমিতে শ্রমিক হিসেবে বেশি কাজ করেন। তারা জানান, সমপরিমাণ কাজ করলেও মজুরি বৈষম্যের শিকার নারীরা। এ ধরনের কাজ করা হয় ব্যক্তি মালিকানাধীন ফসলের জমিতে। মজুরির কোনো নির্ধারিত নীতিমালা না থাকায় এভাবেই কাজ
করতে হচ্ছে তাদের। কৃষিজমিতে শ্রমিক হিসেবে নিয়মিত কাজ করেন এমন নারী শ্রমিকরা জানান, মাধবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে বছরব্যাপী মৌসুমি সবজি ও বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়। যে কারণে পুরুষের পাশাপাশি নারীরও এসব জমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজের সুযোগ থাকে প্রায় সারাবছরই। বিশেষ করে চা বাগানে যেসব নারী কাজ পান না, তারা পরিবারের চাহিদা পূরণে বাড়তি আয়ের আশায় কৃষিজমিতে কাজ করেন। চা বাগান ছাড়াও অন্যান্য এলাকার দরিদ্র পরিবারের নারীরাও এ কাজ করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী কৃষিশ্রমিক জানান, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জমিতে পরিশ্রম করতে হয় তাদের। কাজের ক্ষেত্রে পুরুষদের
সঙ্গে সমান তালে কাজ করলেও মজুরির ক্ষেত্রে সমতা নেই। সুরমা চা বাগানের মালতি ভুমিজ
নামে এক নারী কৃষিশ্রমিক জানান, কৃষিজমিতে কাজের জন্য একজন পুরুষ শ্রমিক যেখানে দৈনিক ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা মজুরি পান; সেখানে একজন নারী শ্রমিককে দেওয়া হয় মাত্র ২০০ টাকা। মজুরি নিয়ে কথা বলতে গেলে কাজ থেকে বাদ পড়ার ভয় থাকে। তাই নারী শ্রমিকরা অল্প টাকাতেই কাজ করেন।
পরমানন্দপুর গ্রামের সুফিয়া নামে আরেক নারী কৃষিশ্রমিক কৃষকের জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ কাজ করার পাশাপাশি মৌসুমে ধান রোপণ, ধান কাটাসহ বছরজুড়ে শত শত শ্রমিক কৃষিজমিতে কাজ করেন। তবে কম পারিশ্রমিকে তাদের পরিবার চালানো কষ্টসাধ্য।
আমজাদ মিয়া নামে একজন কৃষক জানান, সার, বীজসহ কৃষি যন্ত্রপাতির দাম অনেক বেশি। এতে ফসলের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। তারপরেও তারা চেষ্টা করেন শ্রমিকদের সর্বোচ্চ সম্মান করতে। তাছাড়া সব কৃষক এক পর্যায়ের নন। যাদের পুঁজি কম, জমি কম তাদের ক্ষেত্রে সেভাবে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দেওয়া সম্ভব হয় না। সবাই মিলে এক্ষেত্রে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিলে শ্রমিক-মালিক উভয়পক্ষের মঙ্গল হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব সরকার জানান, কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় অনেক নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। মাধবপুরের নারী-পুরুষ একযোগে কৃষিকাজ করেন। এক্ষেত্রে উভয়ের অবদান সমান। নারী শ্রমিকরা যারা কৃষিজমিতে কাজ করেন তাদের পারশ্রমিকের ক্ষেত্রে কৃষক ও জমির মালিকরা সচেতন হলে এ সমস্যার সমাধান খুঁজে নেওয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে যৌক্তিক কোনো সহায়তা চাওয়া হলে তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করবেন পরামর্শ দেওয়ার।