নদীতে নিখোঁজ ৩ স্কুলছাত্রের একজনের মরদেহ উদ্ধার
Published: 1st, February 2025 GMT
সিরাজগঞ্জে বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে এসে ফুলজোড় নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ তিন স্কুলছাত্রের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে কামারখন্দ উপজেলার ঝাঁটিবেলাই গ্রামের ফুলজোড় নদী থেকে রাফি (১৫) নামে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরো দুই শিক্ষার্থী।
মারা যাওয়া রাফি উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ঝাঁটিবেলাই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে।
আরো পড়ুন:
সাভারে ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৪ জনের মরদেহ উত্তোলন
শিবচরে রেললাইনের পাশে মিলল যুবকের মরদেহ
আরো পড়ুন: সিরাজগঞ্জে নদীতে গোসলে নেমে ৩ স্কুলছাত্র নিখোঁজ
নিখোঁজ অন্য দুই শিক্ষার্থী হলেন- সিরাজগঞ্জ শহরের মাসুমপুর মহল্লার ইমরুল হাসান সোহেলের ছেলে সারজিল (১৬) ও বাহিরগোলা ঘোষপাড়া মহল্লার মৃত বিশ্বজিৎ নিয়োগীর ছেলে কৃষ্ণ নিয়োগী (১৫)। তারা সবাই সিরাজগঞ্জ কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ঝাঁটিবেলাই গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক রঞ্জুর নাতি জারিফের পাঁচ বন্ধু তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। আজ বিকেলের দিকে জারিফ ও বেড়াতে আসা তার পাঁচ বন্ধু বাড়ির পাশের ফুলজোড় নদীতে গোসলে নামে। একপর্যায়ে তিনজন নদীতে ডুবে যায়। অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠে আসে। খরব পেয়ে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। নদীর পানির গভীরতা ২৫ থেকে ৩০ ফুট হওয়ায় নিখোঁজদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাজশাহী থেকে ডুবুরি দল এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রাত সাড়ে ৭টার দিকে রাফির মরদেহ উদ্ধার করে তারা।
নদীতে গোসলে নেমে সাঁতরে বেঁচে ফেরা শিফাত শেখ বলে, “আমরা ছয় বন্ধু নদীতে গোসলে নামি। সাঁতরে নদীর এপার থেকে ওপারে যাওয়ার সময় তিনজন নিখোঁজ হয়। একপর্যায়ে সবাই তলিয়ে যাচ্ছিল, আমি খুব কষ্ট করে দুইজনকে টেনে তীরে তুলে নিয়ে এসেছি।”
কামারখন্দ থানার ওসি মোখলেসুর রহমান বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস টিমের সদস্য ছাড়াও নিখোঁজ স্কুলছাত্রদের আত্মীয়-স্বজন এবং স্থানীয় লোকজন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ দুই জনের সন্ধান পাওয়া যায়নি।”
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ স র জগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
বৈচিত্র্যময় প্রতিভার মরিস ল্যাংলো ওয়েস্ট
অস্ট্রেলিয়ান লেখকদের সর্বাধিক পরিচিত রচনাগুলোর অন্যতম ঔপন্যাসিক মরিস ল্যাংলো ওয়েস্টের ‘দ্য ডেভিলস অ্যাডভোকেট’ এবং ‘দ্য শুজ অব দ্য ফিশারম্যান’। বঞ্চিত বস্তির শিশুদের নিয়ে নন-ফিকশন গল্পের ‘চিলড্রেন অব দ্য শ্যাডোস’ তাঁর অনন্য সৃষ্টি। ওয়েস্টের বইগুলোকে ‘ধর্মীয় থ্রিলার’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ধর্ম এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রকে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করেন তিনি। আজ এই প্রতিভাধর লেখকের জন্মদিন। ১৯১৬ সালের ২৬ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের সেন্ট কিল্ডায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৯ সালের ৯ অক্টোবর সিডনিতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মরিস ওয়েস্ট তাঁর দীর্ঘ লেখালেখির জীবনে অনেক পুরস্কার, প্রশংসা ও মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। ৩০টি বই এবং অনেক নাটক লিখেছেন। তাঁর বেশ কয়েকটি উপন্যাস নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। তাঁর বইগুলো ২৮টি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল এবং বিশ্বব্যাপী ৬০ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছিল। একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক হওয়ার পর পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়। তাঁর প্রতিটি নতুন বই দশ লাখেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে।
লেখক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরুর আগে তিনি বৈচিত্র্যময় পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। চৌদ্দ বছর বয়সে শৈশব জীবন অতিবাহিত করতে আশ্রয়স্থল হিসেবে ক্রিশ্চিয়ান ব্রাদার্স সেমিনারিতে প্রবেশ করতে হয়েছিল তাঁকে। বেশ কয়েক বছর ছিলেন সেখানে। চূড়ান্ত শপথ নেওয়ার আগেই ক্রিশ্চিয়ান ব্রাদার্স ত্যাগ করে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং পরে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি একজন কোড-ব্রেকার হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিছু সময়ের জন্য তিনি অস্ট্রেলিয়ার সপ্তম প্রধানমন্ত্রী বিলি হিউজের একান্ত সচিব হিসেবে কাজ করেন। পরে সেনাবাহিনীতে যুক্ততার মধ্য দিয়ে তিনি নতুন অধ্যায়ের পরিকল্পনা করেন। সেনাবাহিনী থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি মেলবোর্নে দ্য হেরাল্ডের রেডিও নেটওয়ার্কে কাজ শুরু করেন। পরে অস্ট্রেলাসিয়ান রেডিও প্রোডাকশনে যুক্ত হন। স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করেন কিন্তু বছর দশেকের মধ্যে তিনি ভেঙে পড়েন এবং ব্যবসার তাঁর অংশ বিক্রি করে দিয়ে লেখক হিসেবে সিডনিতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে একজন লেখক হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার গড়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া ত্যাগ করে ইতালির সোরেন্টোতে গমন করেন। পরিবারের সঙ্গে তিনি অস্ট্রিয়া, ইতালি, ইংল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বসবাস করেন। এ যাত্রা পথে তিনি ব্রিটিশ সংবাদপত্র ডেইলি মেইলের ভ্যাটিকান সংবাদদাতা হিসেবেও কাজ করেছিলেন। ১৯৮২ সালে তিনি আবার অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন।
এ সময়ের মধ্য তিনি চিলড্রেন অব দ্য সান, দ্য ডেভিলস অ্যাডভোকেট, ডটার অব সাইলেন্স, দ্য জুস অব দ্য ফিশারম্যান, দ্য অ্যামবাসাডর, দ্য টাওয়ার অব ব্যাবেল, সামার অব দ্য রেড উলফ, দ্য নেভিগেটর, প্রোটিয়াস এবং দ্য ক্লাউনস অব গড-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস রচনা করেন।
১৯৯৬ সালে ‘আ ভিউ ফ্রম দ্য রিজ: দ্য টেস্টিমনি অব আ টোয়েন্টিথ-সেঞ্চুরি ক্রিশ্চিয়ান’ আত্মজীবনীর প্রকাশের মাধ্যমে ওয়েস্ট জীবনের নানা বাঁকের অনেক অজানা বিষয়ের অবতারণা করেন।