শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর কারণে মানুষ দম ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছেন—মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘‘দেশে এখন আতঙ্ক নেই। ১৮ কোটি জনগণের বুকে পাথরের মতন বসে শাসন করেছে। হাসিনা আগেও ষড়যন্ত্র করেছে। দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে এখনো ভালো হয়নি। সেখানের আশ্রয়ে থেকে দেশ নিয়ে দুষ্টুমি করছে। হাসিনা অনেক মা-বাবার বুক খালি করেছে। এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই।’’  

শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। উত্তরায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল এবং দরিদ্রদের শীতের কাপড় ও শাড়ি বিতরণ করা হয়। 

ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিতে বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘পলাতক হাসিনা সরকারের রুগ্ন অর্থনীতির কারণে বাজারদর বৃদ্ধি হয়েছে। দক্ষিণখানের গুমের শিকার মুন্নার মা-বাবার কান্না দেখে আমি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছি। পলাতক হাসিনা দেশে ‘আয়নাঘর’ সৃষ্টি করে গুম-খুনের রামরাজত্ব কায়েম করেছিল। হাসিনা সরকারের উত্তরা এলাকার এমপি হাবিব হাসান এবং খসরু নিরীহ মানুষের জমি বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছিল।’’ 

আরো পড়ুন:

‘উপদেষ্টারা কেউ রাজনীতি করলে, সরকার থেকে বের হয়ে করবে’

অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ফখরুলের

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ছাত্ররা দল গঠন করলে স্বাগত জানাই। সরকারে কিছু থাকবেন, আবার কিছু লোক সরকারের সহায়তায় দল গঠন করবেন, এটা হতে পারে না। সরকারের লোকজন সংঘাতময় কোনো বক্তব্য দেবেন না। নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচন দিতে হবে। আর নয়তো জনগণ মেনে নেবেন না।’’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আফাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, সদস্য সচিব মোস্তফা জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দক্ষিণখান থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন তালুকদার।

আমিনুল হক বলেন, ‘‘বিএনপি জনগণের দল। জনগণের পাশে থেকে কাজ করে। তারেক রহমানের নির্দেশে করোনাকালে আমরা জনগণের পাশে থেকে লাশ দাফন করাসহ দরিদ্রদের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আ.

লীগের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে ছিল না।’’  

তিনি বলেন, ‘‘এখন দেখা যায়, নব্য বিএনপি সেজে আ.লীগের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলদারি লুটতরাজসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে বিএনপির ওপর চাপিয়ে দেওয়া অপচেষ্টা করছে। এজন্য আমাদের সকলকে সর্তক থাকতে হবে।’’ 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী অতি দ্রুত সময়ের ভেতরে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করুন। কারণ, দেশের মানুষ গত ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারেননি। তারা ভোট দিতে চায়।’’ 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এম কফিল উদ্দিন আহমেদ, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, মাহাবুব আলম মন্টু প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে দরিদ্রের মধ্যে শীতবস্ত্র ও শাড়ি বিতরণ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকা/নাজমুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ জনগণ র প ব এনপ র সরক র র ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

অভ্যুত্থানের মর্ম ধারণ করতে ব্যর্থ সরকার

সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের মর্ম ধারণ করতে ক্রমাগত ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদের সই করা এক বিবৃতিতে রোববার এ কথা বলা হয়।

সারাদেশে খুন, ধর্ষণ, সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড বেড়েছে। বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক তৎপরতা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, নারীর চলাফেরা, খেলা ইত্যাদির ওপর আক্রমণ হচ্ছে। অস্বীকারের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে দায়িত্বশীল ও সক্রিয় ভূমিকা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমিটি।

কয়েকজন লেখক–শিক্ষককে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়ে তা প্রচার করার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আবরার হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তসহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধীদের জেল থেকে পালানোর খবর পাওয়া যাচ্ছে। কক্সবাজারের সমিতি পাড়ায় নিরস্ত্র জনগণের ওপর বিমানবাহিনীর গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। এ সব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টার জবাবদিহি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আনু মুহাম্মদ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার প্রতিবাদ করায় ৯ নারী শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং তাঁদের প্রতি প্রক্টরের ঘৃণ্য আচরণ কার্যত যৌন নিপীড়নের পক্ষে প্রশাসনের অবস্থান নির্দেশ করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর নামে রাখায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। তারা দ্রুত প্রক্টর পরিবর্তন এবং নামকরণ ও ছাত্রী বহিষ্কারের এসব অন্যায় সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে। এ ছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ভবন থেকে গুণিজনদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। সত্যেন বসু, জগদীশ চন্দ্র বসু, জীবনানন্দ দাশ, লালন সাঁই, প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, জি সি দেব, ডা. আলীম চৌধুরী, তাজউদ্দীন আহমদ প্রমুখ ব্যক্তির প্রতি সম্মান জানানোর জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবস্থা নিতে হবে।

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলেছে, সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি কিংবা যৌথ বাহিনীর অভিযান জনগণের নিরাপত্তার বদলে হয়রানি ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বৃদ্ধি করেছে।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইইউ বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন করে: হাদজা লাহবিব
  • বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচিকে সমর্থন করে ইইউ: হাদজা লাহবিব
  • আপনারা সীমাবদ্ধ সুশীল, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানো পছন্দ নয়
  • শেকৃবিতে শাখা ছাত্রদল সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
  • হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল
  • বাংলাদেশ নিয়ে অমর্ত্য সেনের বক্তব্য নিয়ে যা বলছেন জামায়াতের আমির
  • অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল
  • সাবেক আইনমন্ত্রীর সিটিজেনস ব্যাংককে ঢেলে সাজানো হচ্ছে
  • গণহত্যার দোসর ৬ মাস পর ‘বীর’
  • অভ্যুত্থানের মর্ম ধারণ করতে ব্যর্থ সরকার