দেশের সড়ক উপযোগী নকশায় আধুনিকায়নসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে বিআরটিএর লাইসেন্স ও যৌক্তিক রুট পারমিট দেওয়াসহ ১২ দফা দাবি আদায়ে জাতীয় সম্মেলন করতে যাচ্ছে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন। এই সম্মেলন আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে।

শনিবার পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নাদিম।

সম্মেলনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ১২ দফা দাবিতে আমরা দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলন করব আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি। দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন ২৪’র গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা। আমাদের সম্মেলনে ৬৩ জেলা সংগঠনের শ্রমিক সদস্যসহ সারাদেশের শ্রমিক জনতা অংশগ্রহণ করবেন। 

রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে; ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে; শ্রমিকদের ওপর সব জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি-হয়রানি বন্ধ করতে হবে; শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সড়ক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা কমিটি গঠন করতে হবে; সড়কের লেন পদ্ধতি সচল ও সার্ভিস লেন এবং চার্জিং স্টেশন নির্মাণ করতে হবে; শ্রমিক নেতাদের নামে মিথ্যা হয়রানিমূলক সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে; জীবিকা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও ব্যাটারিচালিত যানবাহন সংক্রান্ত সব রিট দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে; ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে গণপরিবহন ও শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে; অসৎ বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে রিকশা যন্ত্রাংশসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে হবে; শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক ও মানবিক বিবেচনায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের পুঁজিকে নিরাপদ করে পর্যায়ক্রমে প্যাডেলচালিত বাহনের অমানবিক শ্রম থেকে মানুষকে মুক্ত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল হাকিম মাইজভান্ডারি প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের পাহাড়

মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের একটি পাহাড়। বহু বছর পর এমন আইন প্রণয়ন করা হয়। এর মানে তারানাকি মাউঙ্গা (মাউন্ট তারানাকি) নিজের মালিকানা কার্যকরভাবে পাবে। এটি পরিচালনায় একসঙ্গে কাজ করবে স্থানীয় উপজাতি, ইউয়ি এবং সরকারের প্রতিনিধিরা। খবর বিবিসির

এই আইন প্রণয়নের লক্ষ্য উপনিবেশ আমলে তারানাকি অঞ্চলে ভূমি বাজেয়াপ্ত, অবিচারের শিকার হওয়া মাওরিরা ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

আলোচনার জন্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী পল গোল্ডস্মিথ বলেছেন, ‘অতীতের ভুলের কারণে যে বেদনা রয়ে গেছে, তা আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। যাতে ইউয়িদের নিজস্ব আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করে তাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আমরা সহায়তা করতে পারি।’

গত বৃহস্পতিবার জীবন্ত সত্তা ঘোষণার তারানাকি মাউঙ্গা কালেক্টিভ রিড্রেস বিলটি নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে পাস হয়। তাতে পর্বতটি একটি আইনি নাম পেয়েছে এবং এর আশপাশের চূড়া ও জমিকে দেওয়া হয়েছে সুরক্ষা।

পর্বত, পূর্বপুরুষ, জীবিত প্রাণীসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে যে মাওরি বিশ্বদর্শন রয়েছে, সেটির স্বীকৃতি মিলেছে বিলটি পাসের মধ্য দিয়ে।

রাজনৈতিক দল থে পাথি মাওরির (মাওরি পার্টি) সহ-নেতা ডেবি নারওয়ে-প্যাকা বলেন, ‘আমাদের মাউঙ্গা টুপুনা (পূর্বপুরুষের পর্বত) অবিচার, অজ্ঞতা ও ঘৃণার শৃঙ্খল থেকে আজ মুক্তি পেয়েছে।’

নারওয়ে প্যাকা নিউজিল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে আটজন তারানাকি ইউয়িদের মধ্যে একজন, যার কাছে পর্বতটি পবিত্র। এলাকাটির আরও শত শত মাওরি নাগরিক বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে উপস্থিত হয়েছিলেন বিলটির আইনি রূপান্তর দেখতে।

বিবিসি লিখেছে, পর্বতটি আর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এগমন্ট’ নামে পরিচিত হবে না, যে নামটি ১৮ শতকে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ পরিব্রাজক জেমস কুক। এখন এটি ‘তারানাকি মাউঙ্গা’ নামে পরিচিত হবে। আর চারপাশ ঘিরে থাকা জাতীয় উদ্যানটিও পাবে মাওরি নাম।

যে চুক্তির মাধ্যমে নিউজিল্যান্ড একটি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আদিবাসীরা জমি ও সম্পদের নির্দিষ্ট অধিকার পেয়েছিল; সেই ওয়েটাঙ্গি চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণের সর্বশেষ প্রয়াস তারানাকি মাউঙ্গা বন্দোবস্ত।

১৮৬০ এর দশকে তারানাকি পর্বত এবং স্থানীয় মাওরিদের কাছ থেকে ১০ লাখেরও বেশি একর জমি বাজেয়াপ্তের ঘটনায় সরকারের তরফে ক্ষমা প্রার্থনার অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে এই বন্দোবস্তকে।

পল গোল্ডস্মিথ স্বীকার করেছেন যে, ‘চুক্তি লঙ্ঘনের অর্থ হল হোয়ানু (বৃহত্তর পরিবার), হাপু (উপ-উপজাতি) এবং তারানাকির ইউয়ির ব্যাপক পরিসরের ক্ষতি; যা বহু দশক ধরে অপূরণীয় হয়ে দাঁড়ায়।’

তিনি আরও বলেন, পর্বতটিতে প্রবেশাধিকার আর পরিবর্তন হবে না এবং নিউজিল্যান্ডের সব বাসিন্দা এই জায়গাটি পরিদর্শন করতে পারবে এবং আগামী প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্দান্ত এ জায়গাটি উপভোগ করতে পারবে। 

নিউজিল্যান্ডে এর আগেও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের জীবন্ত সত্তার স্বীকৃতি পাওয়ার নজির রয়েছে। ২০১৪ সালে উরেওয়েরা বন প্রথম এই জাতীয় মর্যাদা অর্জন পায়। এরপর ২০১৭ সালে এমন স্বীকৃতি পায় হোয়াংগানুই নদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টাস্কফোর্সের সুপারিশ আমলে লউন
  • গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও আর্থসামাজিক সংস্কার
  • মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের পাহাড়