গনঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন,  ফ্যসিবাদী সরকার গত ১৬ বছরে ধরে ক্ষমতায় থেকেছে। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষকে বিচার বর্হিভূত ভাবে হত্যা করেছে। প্রায় ৬০০ মানুষকে গুম করেছে।একটি গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিনত করেছে।

এদেশে একর পর এক ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে কিন্তু মানুষের জন আকাঙ্খা আজো পূরণ হয়নি। যারাই ক্ষমতা গিয়েছে তারাই দখলবাজী চাঁদাবাজী জনগনকে জিম্মি করা লুটপাট করা রাষ্ট্র যন্ত্রকে দলীয়করন করা নিজেরদের মতো পরিচালনা করা এটা আমরা গত ৩৩ বছর ধরে দেখেছি।

তিনি জনগনকে উদ্ধেশ্য করে বলেন আসুন এসব ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বাদ দিয়ে নতুন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আমরা নতুন করে এ রাষ্ট্রকে পরিচালনা করি। যেখানে কোন ফ্যাসিবাদের ঠাই হবে না।

এদেশের মানুষ বারবার প্রতারিত হয়েছে ধোকা খেয়েছে কিন্তু এ অভ্যুত্থানের পর নতুন করে দেশ বির্নিমান করতে হবে। এদেশের মানুষ নতুন নেতৃত্ব বরন করে নিতে প্রস্তুত। তিনি সকল রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে বলেন আওয়ামীলীগ থেকে শিক্ষা নিন।

গত ৬ মাসে বর্তমান সরকার অনেকাংশেই আমাদের আকাঙ্খা পূরণ করতে পারেনি। নানা শক্তির উত্থান ও অস্থিরতার কারণে হয়তো সরকার কিছূটা প্রতিবন্ধকতায় পরেছে আমরা সরকারকে কিছূটা সময় দিতে চাই। তবে সরকারকে বলবো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতি, বিমান ভাড়া বৃদ্ধি এগুলো নিয়ন্ত্রনে ব্যবস্থা নিন।

শনিবার বিকেলে সোনারগাঁও পৌরসভা মাঠে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে গন আকাঙ্খার রাজনীতি শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান তিথির বক্তব্যে  তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যে বিজয় আমরা অর্জন করেছি তার অংশিদার সবাই । অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রয়োজন। পুরনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দিয়ে দেশ কার্যকর ভাবে চলতে পারে না।

তিনি সোনারগাঁবাসীকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন সোনারগাঁয়ের মেঘনা নদীর দুই তীরে গড়ে ওঠা অসংখ্য শিল্পকারখানা রয়েছে এতদিন সেগুলোতে দখলবাজী চাদাবাজি করেছে আওয়ামীলীগ এখন আওয়ামীলীগ দেশে নাই কাপড় চোপর রেখে পালাইছে তাহলে এখন সে চাদাবাজী দখলবাজী মাফিয়াগিরি করছে কারা? আপনারা এসব চাদাবাজ সন্ত্রাসীদেরকে ভোট দেবেন না?

আওয়ামীলীগ নাকি আন্দোলন করবে ফেব্রুয়ারিতে হরতাল করবে। রাস্তায় নেমে দেখেন আপনাদের কি অবস্থা হয়। এখন মাস্ক পরে মাঙ্কি টুপি পরে দুই তিনজন মিছিল করে। বলেছিলাম গুলিস্তানে মুজিবকোট কেনার লোক থাকবে না। তাই হয়েছে।

তিনি বলেন, আশা করি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে। তাই জুলাই অভ্যুত্থানের যে ঐক্য সেটা ধরে রাখতে হবে না হলে আমাদের অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।

সভায় সোনারগাঁ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান মিল্কীর সভপতিত্বে এবং সোনারগাঁ শাখার সদস্য সচিব একেএম সাইদুজ্জামান ও সোনারগাঁ পৌরসভা গণ অধিকার পরিষদের নেতা উলফাত কবির মাস্টারের সঞ্চালনায়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, গনঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র ও সিনিয়র সহ সভাপতি ফারুক হাসান, সহ সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলী, গনঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আনিসুর রহমান মুন্না, নারায়ণগঞ্জ জেলা গণ অধিকার পরিষদের জেলা মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আরিফ হোসেন প্রমূখ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: সরক র র জন ত ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ র জন ত ক ক ষমত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দখলবাজরাই ভোলাগঞ্জ বন্দর প্রকল্পে বাধা

ধলাই নদীতীরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে বছরের পর বছর পাথর ডাম্পিং ও ক্রাশিং করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। সরকারি জায়গা দখল করে তারা সেখানে গড়ে তোলেন ক্রাশিং মেশিন ও স্থাপনা। হঠাৎ ঘটে ছন্দপতন। ২০১৯ সালে ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনকে দেশের ২৪তম স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করার পর উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। অধিগ্রহণ শেষে গত বছর কাজও শুরু করে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের নির্মাণ সামগ্রী লুটপাট হয়। ভেঙে ফেলা হয় পাশের পর্যটনের জায়গার সীমানা প্রাচীর। 

সম্প্রতি ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের কাজ শুরু হলেও পর্যটনের জায়গাটি থেকে গেছে উন্মুক্ত। বারবার বাধাগ্রস্ত হওয়ার পরও কাজ যখন এগিয়ে চলছে, তখন বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধে বিরোধিতা করে মাঠে নামেন ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের কয়েক সদস্য। গত ২২ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে তারা স্থলবন্দরের অবকাঠামো বন্ধসহ শ্রমিক-ব্যবসায়ীর ক্ষতিপূরণ দাবি করে জানান, বাংলাদেশ অংশে স্থলবন্দর হলেও ভারত অংশে স্থাপনা নেই। একপেশে বন্দর হতে পারে না। লুটপাটের জন্যই আওয়ামী লীগ সরকার ১৭৫ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়।

তথ্য বলছে, স্থলবন্দর ঘোষণার আগে শুল্ক স্টেশন ও পর্যটনের জায়গা উন্মুক্ত থাকা অবস্থায় যারা জায়গা দখল করে ব্যবসা করে আসছিলেন, উচ্ছেদ হওয়ার পর তারাই এখন বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জায়গা থেকে উচ্ছেদ ও অধিগ্রহণের পর সেসব ব্যবসায়ী ও শ্রমিক-মালিকরা এখন চাচ্ছেন না স্থলবন্দর হোক। তারা শুল্ক স্টেশন হিসেবে দেখতে চাচ্ছেন ভোলাগঞ্জকে। যদিও বন্দর নির্মাণকাজে সরাসরি কোনো বাধা তারা দিচ্ছেন না। এর নেপথ্যে রয়েছেন ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপ ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি গত ২৯ জানুয়ারি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন ছাড়াও ২২ ফেব্রুয়ারি সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বাবুলসহ কয়েকজন।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের জমিসহ ১১২ একর সরকারি জায়গা সেখানে ছিল। বন্দর নির্মাণের কাজ শুরুর আগে সেই জায়গা বিএনপি নেতা শাহাব উদ্দিনসহ কয়েকজন ব্যবসায়ীর দখলে ছিল। তারা পাথর ব্যবসায়ীর কাছে ভাড়া দিয়ে আসছিলেন। উচ্ছেদের পর সেখানকার ৫২ একর জায়গাজুড়ে স্থলবন্দর নির্মাণে কাজ শুরু হলে তারা সেই আয় থেকে বঞ্চিত হন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন স্থলবন্দরের নির্মাণসামগ্রী লুটসহ রাস্তার অন্য পাশে পর্যটনের জায়গার সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়। অভিযোগ ওঠে, লুটপাট-ভাঙচুরের সঙ্গে আগে সুবিধা পাওয়া পাথর ব্যবসায়ী ও আমদানিকারক নেতাদের হাত ছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোলাগঞ্জ-১০ নম্বর ঘাটের এক পর্যটন ব্যবসায়ী জানান, সরকার পতনের পর ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের জায়গা দখল না করতে পারলেও পাশের পর্যটন কেন্দ্রের ৫০-৬০ একর জায়গা দখল করে পাথর ব্যবসা করা হচ্ছে, যাদের দখলে আগেও ওই জায়গা ছিল। তিনি জানান, অতীতে যারা সরকারি জায়গা দখল করে ব্যবসা ও ভাড়া খেয়েছেন, তারাই এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও ৫ আগস্ট স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পসহ নানা স্থাপনার ক্ষতিসাধন ও লুটপাটকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা কার্যকর হয়নি। 

অভিযোগ বিষয়ে বিএনপি সভাপতি শাহাব উদ্দিন বলেন, সেখানে আমার ব্যক্তিগত কোনো লাভ নেই। শুল্ক স্টেশন দিয়ে যে কাজ পরিচালনা করা যেত, সেখানে একপেশে স্থলবন্দর করে সরকারের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি করা হচ্ছে। আমরা সে বিষয়টি তুলে ধরেছি। জায়গা দখল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু আমার নয়; অনেকে জায়গা সেখানে ছিল। সরকারি জায়গাও ছিল। উচ্ছেদ করে স্থলবন্দর করা হচ্ছে। আমরা বাধা দিচ্ছি না; দাবি করেছি। মানা-না মানা সরকারের বিষয়। 

এ ব্যাপারে ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দরের প্রকল্প পরিচালক সারোয়ার আলম বলেন, এখন চুনাপাথর আমদানি হলেও ভবিষ্যতে রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কাজ চলছে; নির্মাণকাজ বন্ধের সুযোগ নেই। কাজ শেষ হলে শুধু রাজস্ব বাড়বে না; এলাকার পরিবেশও বদলে যাবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দখলবাজরাই ভোলাগঞ্জ বন্দর প্রকল্পে বাধা
  • কর্ণফুলী নদীতে দখলবাজি