ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সম্প্রতি একটি বাড়ির কেয়ারটেকারকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ডাকাতির জের না কাটতেই এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। 

উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামে আসাদুল ইসলাম নামের এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে  বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় তাঁর মা ও চার শিশু-কিশোরকে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে সবাইকে রশি দিয়ে বেঁধে পুরো বাড়িতে তাণ্ডব চালায় ডাকাত দল। আসাদুল গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি পাশের গ্রাম আলেখারকান্দায় ফাঁকা বাড়িতে এক কেয়ারটেকারকে নৃশংসভাবে হত্যার রেশ না কাটতেই পুলিশ সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটল। পুরো উপজেলায় চুরি-ডাকাতির ঘটনা বাড়ছে। পুলিশের বাড়িতে ডাকাতির আগে ওই রাতেই আশপাশের কয়েকজনের বাড়িতে গ্রিল কেটে বসতঘরে ঢোকার চেষ্টা চালায় ডাকাতরা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেন, ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। 

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, রাত তখন ৩টা ২০ মিনিট। হঠাৎ অস্ত্র নিয়ে কয়েকজন মুখোশধারী বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করছে। এ সময় একজন দেয়াল বেয়ে উঠে সিসিটিভির তার ছিঁড়ে ফেলে। অন্য আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, বাড়ির মূল ফটক দিয়ে অস্ত্র নিয়ে ঢুকছে তিনজন মুখোশধারী। কিছুক্ষণ পর একজন লোহার পাইপ হাতে নিয়ে দরজার সামনে থাকা সিসিটিভিও ভেঙে ফেলে। এরপর ঘরে ঢোকে ডাকাতরা। 

পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘরের আলমারিতে রাখা নগদ সোয়া ২ লাখ টাকা ও প্রায় ১২ ভরি স্বর্ণ লুট করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। 

আসাদুলের স্ত্রী সায়লা ইসলাম সমকালকে জানান, গত রাতে ডাকাতির ঘটনার পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। হঠাৎ এমন ঘটনা তারা মানতে পারছেন না। শিশু-কিশোরদের ভয় ও আতঙ্ক এখনও কাটেনি। 

থানার ওসি মোকছেদুর রহমান সমকালকে জানান, এক পুলিশ সদস্যের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ কয়েকটি সিসিটিভির ফুটেজসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। পুলিশের তদন্ত চলছে।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য র ব ড় ত ড ক ত র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

সন্ত্রাসীদের হাত থেকে তরুণকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ইয়াছিন আরাফাত ওরফে শাকিল (২৮) নামের এক যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার রাত আনুমানিক পৌনে আটটার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের গঙ্গাবর বাজারে ওই ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসীরা এক তরুণকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিয়েছিলেন ইয়াছিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে গুলি করে। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় ইয়াছিনের ছোট ভাই মোজাম্মেল হোসেনও (২৫) আহত হয়েছেন। তাঁকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার পর এলাকাবাসী ধাওয়া করে হামলাকারীদের মধ্যে তিনজনকে ধরে ফেলেন। পরে তাদের পিটুনি দিয়ে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ তাদের আহত অবস্থায় আটক করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াছিনের চাচাতো ভাই আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, রাত আনুমানিক আটটার দিকে তিনি, ইয়াছিনসহ কয়েকজন গঙ্গাবর বাজারের একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। তখন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় একদল সন্ত্রাসী সেখানে আসে। তারা মো. লাবিব নামের এক তরুণকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ইয়াছিন এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীদের একজন ইয়াছিনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। একই সময় কাছে থাকা ইয়াছিনের ছোট ভাই মোজাম্মেল হক এগিয়ে গেলে তাঁর ওপরও হামলা চলায় দুর্বৃত্তরা।

আবদুল হাকিম জানান, ঘটনার পরপরই তাঁরা গুরুতর আহত অবস্থায় ইয়াছিনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া একই ঘটনায় আহত মোজাম্মেলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জানান, দুর্বৃত্তরা কাছে থেকে ইয়াছিনের বুকে ও পেটে গুলি করেছে।

হাসপাতালে উপস্থিত গঙ্গাবর এলাকার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী খালিদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ইয়াছিন যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি আরেকজনকে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। নিহত ইয়াছিন পেশায় থাই অ্যালুমিনিয়ামের মিস্ত্রি ছিলেন বলে জানান খালিদ।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রাজীব আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাত সোয়া আটটার দিকে গুলিতে নিহত ইয়াছিন আরাফাত নামের এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন কয়েকজন লোক। তাঁর বুকে গুলির দাগ দেখা গেছে। লাশ মর্গে আছে। একই ঘটনায় আহত এক ব্যক্তিকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লা আল ফারুক দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, একটি ছেলেকে তুলে নিতে এলে বাধা দেওয়ায় ওই যুবককে গুলি করা হয়। ওই ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন দুর্বৃত্তদের তিনজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আহত ব্যক্তিদের একজনের অবস্থা গুরুতর।

পুলিশ সুপার জানান, গুলির ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি দুর্বৃত্তরা ঘটনার পর পাশের একটি পুকুরে ফেলে দিয়েছে। পুকুর সেচ দিয়ে সেটি উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হবে। তা ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এ বিষয়ে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শুনেছি আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিল সেই বাদী থানায় আটক আছে’
  • ঈদগাঁওয়ে বজ্রপাতে লবণ শ্রমিকের মৃত্যু
  • এনসিসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হলেন আবদুস সালাম
  • ৩৬ বছর পর মায়ের খুনি বাবার মুখোমুখি ছেলে
  • রাষ্ট্র ও পুলিশ নয়, আমাকে হয়রানি করিয়েছে কাছের বন্ধুরা: জয়
  • পদ্মায় মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, একজন গ্রেপ্তার
  • গাজীপুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় আরো ১ জনের মৃত্যু
  • নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ কর্মীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে থানা ঘেরাও
  • বজ্রপাতে ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের মৃত্যু
  • সন্ত্রাসীদের হাত থেকে তরুণকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী