নঙ্গলকোটে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত
Published: 1st, February 2025 GMT
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে হাজী সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া (৫০) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার (১ ফ্রেরুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার বাঙ্গড্ডা পশ্চিম বাজারে ঘটনাটি ঘটে।
নাঙ্গলকোট থানার ওসি একে ফজলুল হক বলেন, “সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া নামে একজন মারা গেছেন বলে শুনেছি।”
আরো পড়ুন:
মাদারীপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ
নাচোলে খাসজমি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু
নিহত সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া উপজেলার হেসাখাল ইউনিয়ন দায়েমছাতী গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। তিনি হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া সমর্থিত উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী সম্মেলন শনিবার বিকেল ৩টায় বাঙ্গড্ডা বাদশা মিয়া স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া। অপরদিকে, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখান থেকে তিনি গাড়ি বহর নিয়ে অন্য একটি প্রোগ্রামে পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলায় যাচ্ছিলেন।
আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার নেতাকর্মীদের অভিযোগ, গাড়ি বহর বাঙ্গড্ডা পশ্চিম বাজার পার হওয়ার সময় মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা পেছন থেকে হামলা চালায়। হামলায় পাঁচজন আহত হন। গুরুতর আহত সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে নাঙ্গলকোট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, “আমি আমার নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামে সামাজিক একটি অনুষ্ঠানে আজ যোগ দেই। সেখান থেকে পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলায় পূর্ব নির্ধারিত মতবিনিময় সভায় যাচ্ছিলাম। বাঙ্গড্ডা পশ্চিম বাজারে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার নেতাকর্মীরা আমার গাড়ি বহরের পেছনে হামলা চালায়। হামলায় পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনায় হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া নিহত হয়েছেন। আমি অবিলম্বে সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়ার হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাই।”
কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন, “এ ধরনের কোনো ঘটনা আমি জানি না। আমার একটি প্রোগ্রাম ছিল। শান্তিপূর্ণভাবে আমি সেই প্রোগ্রাম শেষ করে এসেছি। আমার প্রোগ্রামে কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি।”
নাঙ্গলকোট থানার ওসি একে ফজলুল হক বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ব এনপ ম ব শ ব র আলম ভ ন ঙ গলক ট ন ত কর ম উপজ ল র ব এনপ র স ঘর ষ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
হাসিনা ভালো হয়নি, ভারত থেকেও দুষ্টুমি করছেন: ফখরুল
শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর কারণে মানুষ দম ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছেন—মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘‘দেশে এখন আতঙ্ক নেই। ১৮ কোটি জনগণের বুকে পাথরের মতন বসে শাসন করেছে। হাসিনা আগেও ষড়যন্ত্র করেছে। দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে এখনো ভালো হয়নি। সেখানের আশ্রয়ে থেকে দেশ নিয়ে দুষ্টুমি করছে। হাসিনা অনেক মা-বাবার বুক খালি করেছে। এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই।’’
শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। উত্তরায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল এবং দরিদ্রদের শীতের কাপড় ও শাড়ি বিতরণ করা হয়।
ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিতে বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘পলাতক হাসিনা সরকারের রুগ্ন অর্থনীতির কারণে বাজারদর বৃদ্ধি হয়েছে। দক্ষিণখানের গুমের শিকার মুন্নার মা-বাবার কান্না দেখে আমি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছি। পলাতক হাসিনা দেশে ‘আয়নাঘর’ সৃষ্টি করে গুম-খুনের রামরাজত্ব কায়েম করেছিল। হাসিনা সরকারের উত্তরা এলাকার এমপি হাবিব হাসান এবং খসরু নিরীহ মানুষের জমি বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছিল।’’
আরো পড়ুন:
‘উপদেষ্টারা কেউ রাজনীতি করলে, সরকার থেকে বের হয়ে করবে’
অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ফখরুলের
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ছাত্ররা দল গঠন করলে স্বাগত জানাই। সরকারে কিছু থাকবেন, আবার কিছু লোক সরকারের সহায়তায় দল গঠন করবেন, এটা হতে পারে না। সরকারের লোকজন সংঘাতময় কোনো বক্তব্য দেবেন না। নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচন দিতে হবে। আর নয়তো জনগণ মেনে নেবেন না।’’
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আফাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, সদস্য সচিব মোস্তফা জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দক্ষিণখান থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন তালুকদার।
আমিনুল হক বলেন, ‘‘বিএনপি জনগণের দল। জনগণের পাশে থেকে কাজ করে। তারেক রহমানের নির্দেশে করোনাকালে আমরা জনগণের পাশে থেকে লাশ দাফন করাসহ দরিদ্রদের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আ.লীগের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে ছিল না।’’
তিনি বলেন, ‘‘এখন দেখা যায়, নব্য বিএনপি সেজে আ.লীগের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলদারি লুটতরাজসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে বিএনপির ওপর চাপিয়ে দেওয়া অপচেষ্টা করছে। এজন্য আমাদের সকলকে সর্তক থাকতে হবে।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী অতি দ্রুত সময়ের ভেতরে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করুন। কারণ, দেশের মানুষ গত ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারেননি। তারা ভোট দিতে চায়।’’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এম কফিল উদ্দিন আহমেদ, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, মাহাবুব আলম মন্টু প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে দরিদ্রের মধ্যে শীতবস্ত্র ও শাড়ি বিতরণ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঢাকা/নাজমুল