নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) শাখার নেতা সালমান ফারসি শোভনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তিনি পাবিপ্রবির জীব ও ভূবিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সভাপতি। 

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠ থেকে তাকে আটক করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্রকাশনা উৎসব চলছিল। ওই ছাত্রলীগ নেতা বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে এডওয়ার্ড কলেজে ঘুরতে যান। এ সময় কিছু ছেলে তাকে চিনতে পেরে আটক করেন। তারা জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ কল করে জানান যে, নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে শোভনকে আটক করে।

সালমান ফারসি শোভনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে তিনি সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ঘুরতে যান৷ এ সময় ছাত্র শিবিরের এক নেতা তাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন। এ সময় পেছন থেকে ১৫-২০ জন ছেলে এসে শোভনকে এলোপাথারি মারতে থাকেন। এরপর তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ সময় তারা শোভনের দুটি মোবাইল ফোন এবং মোটরসাইকেল রেখে দেন।

এ বিষয়ে পাবনা শহর ছাত্র শিবিরের সভাপতি ফিরোজ হোসেন বলেছেন, “এডওয়ার্ড কলেজে আমাদের প্রকাশনা উৎসব চলছিল। এ সময় মাঠে আমরা ঝামেলা দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় শিবিরের কেউ জড়িত নন। আমাদের প্রোগ্রামে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্যই পুলিশকে ফোন দেওয়া হয়। উনার ফোন, বাইক কে নিয়ে গেছে, সে বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না।”

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস ছালাম বলেছেন, “যাকে আটক করা হয়েছে, সে পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের পদধারী নেতা। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। যদি ওর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে মামলা হবে। কোনো অভিযোগ না পাওয়া গেলে, আমরা অন্য ব্যবস্থা নেব। ওর ফোন আর বাইকের বিষয়টা আমরা দেখছি। যারা আমাদের ফোন দিয়েছে, তাদের দুই জনকে ডেকেছি। আমরা তাদের সাথে এ বিষয় কথা বলব।”

ঢাকা/আতিক/রফিক 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ টাকায় মিলছে বোমা পিঠা

রকমারি পিঠার বাহারি সাজে টেবিল যেন রঙিন এক উৎসবের আঙিনা। সুস্বাদু পিঠার মোহময় ঘ্রাণে মুখরিত চারপাশ। আর ভোজন রসিকদের কৌতূহলী দৃষ্টি প্রতিটি স্তূপে।

তবে সবার নজর কেড়েছে কিছু ব্যতিক্রমী নামের পিঠায়। এর মধ্যে রয়েছে- বোমা, ছেলেদের মন, হাসু আপার কুমড়ানি, হাইভোল্টেজ পায়েশ, আখেরি পাস্তা অন্যতম। নামের ভিন্নতা যেমন আকর্ষণ জাগাচ্ছে, তেমনি স্বাদের রহস্য উন্মোচনেও আগ্রহ বাড়িয়ে তুলছে।

এসব দেখা মিলেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) পিঠা উৎসবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ উৎসবকে ঘিরে পিঠার রাজত্ব দখল করতে দুর্দান্ত এক মধুর লড়াইয়ে নেমেছে। নিজেদের হাতের গুণে, মনের জোরে তারা সাজিয়েছে এক মহারণ; পিঠার মহাযজ্ঞ।

বাঙালিয়ানার জেদ আর ঐতিহ্যের ধুলো ঝেড়ে তারা তুলে এনেছে ২ শতাধিক পিঠার বাহার। ২৫টি স্টল জুড়ে তাদের এ দাপুটে আয়োজন যে কাউকে তাক লাগিয়ে দেবে। বাহারি আকার, রঙ, স্বাদ আর নামের নতুনত্বে পিঠা উৎসব হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত।

এছাড়া পাটিসাপটা, ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, মাংস পুলি, দুধ পুলি, মাংস-ঝাল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা পিঠা, জামাই পিঠা, মিষ্টি কুমড়া পিঠা, তক্তি পিঠা, কদম ফুল, গোলাপ পিঠা, ডাবের পুডিং, অরেঞ্জ জেলিসহ পরিচিত সব পিঠা তো আছেই। এদের একেকটির স্বাদ একেক রকম। তবে মেলায় আগতদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে বোমা পিঠা ২০ টাকা, হাসু আপার কুমড়ানি ও ছেলেদের মন।

সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিভাগের ‘সামাজিক পিঠাঘর’ স্টলে সাজানো ‘বোমা’ পিঠা দেখতে ভীড় করছেন উৎসুক দর্শকরা।

অন্যদিকে, ভেটেরিনারি অনুষদের স্টলে শিক্ষার্থীরা সাম্প্রতিক সময়ের কলকাতার সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষের জনপ্রিয় ডায়ালগকে অনুসরণ করে ঝুলিয়ে দিয়েছে এক অভিনব ফেস্টুন— ‘থাকবে না, থাকবে না! একটি পিঠাও থাকবে না!’ উৎসবে আসা পিঠাপ্রেমীদের চোখে পড়তেই এটি হয়ে উঠেছে আলোচনার বিষয়, যেন মুহূর্তেই সব পিঠা উধাও হয়ে যাবে!

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিনভর উৎসবের আমেজে মুখর হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ। বাহারি পিঠার প্রদর্শনীতে যেন মিশে গেছে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যের স্বাদ। গ্রামীণ খেলাধুলার উচ্ছ্বাসে ফিরেছে শৈশবের স্মৃতি। অপরদিকে, ডিবেটিং সোসাইটির আয়োজনে রম্য বিতর্ক যেন বুদ্ধির খেলা জমিয়ে তুলেছে প্রাণবন্ত এক পরিবেশ।

উৎসব উদ্বোধনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে প্রতিবছর ন্যায় এবারও শিক্ষার্থীরা পিঠা উৎসব আয়োজন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস একটি পবিত্র জায়গা। আশাকরি আমরা সবাই মিলে সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ও পরিবেশ মোকাবিলা করে সফলভাবে অনুষ্ঠানটি শেষ করতে পারব।”

উৎসবের রঙ আরও গাঢ় করেছে রাফেল ড্রয়ের রোমাঞ্চ, যেখানে প্রত্যেকেই অপেক্ষায় আকর্ষণীয় পুরস্কারের। এরই মাঝে নাচ ও লোকগানের সুরে মেতে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও মিউজিক সোসাইটি, যেন সময় ফিরে গেছে হারানো বাংলার গ্রাম্য উৎসবে।

এছাড়া স্বরূপ ও হাইওয়ে ব্যান্ডের প্রাণবন্ত পরিবেশনা যেন রাতের আকাশে এক উচ্ছ্বাসের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে; ছড়িয়ে দিয়েছে সুর আর উন্মাদনার ঝংকার।

উৎসবের আয়োজক কমিটির সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান ড. আলী আজম খান বলেন, “আবহমান বাংলায় পিঠা উৎসব চমৎকার এক নিদর্শন। আমাদের শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশজ সংস্কৃতিকে অন্তরে লালন-পালন করে। পিঠা উৎসবের মধ্য দিয়ে তারা দেশজ সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত রাখছে, এটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। প্রতিবারে দেশজ সংস্কৃতির এ ধারাকে অব্যাহত রেখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পিঠা উৎসব আয়োজনের সুযোগ করে দেন। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাবনায় শুরু হলো একুশে বইমেলা
  • বোমান ইরানির ‘দ্য মেহতা বয়েজ’
  • কাঁকড়াসদৃশ মঞ্চে বর্ণিল পরিবেশনা
  • হিলিতে গ্রামীণ পিঠা উৎসব
  • রাতভর গানের আয়োজন, গাইবেন করিম শাহাবুদ্দিন, অসিত কুমার ও ফেরদৌস আরা
  • রাতভর গানের আয়োজন
  • তারুণ্যের উৎসবে পিঠাপুলির স্বাদ
  • ঢাকা দক্ষিণে তারুণ্যের উৎসব 
  • গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ টাকায় মিলছে বোমা পিঠা