নাঙ্গলকোটে বিএনপি দু’পক্ষের সংঘর্ষে হাজী সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া নামে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত হয়েছেন। শনিবার আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

নিহত সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া (৫০) হেসাখাল ইউনিয়ন দায়েমছাতী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি হেসাখাল ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক।

জানা গেছে, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া সমর্থিত বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী সম্মেলন ছিল শনিবার। এ দিন বিকাল ৩টার দিকে বাঙ্গড্ডা বাদশা মিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে সম্মেলন হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া। এ সময় শোডাউন দেয় সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা। শোডাউনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া।

সম্মেলন শেষে আব্দুল গফুর ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেলে শোডাউন করে বাঙ্গড্ডা পশ্চিম বাজার পার হচ্ছিলেন। এ সময় পেছন থেকে তাদের ওপর হামলা চালায় মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা। হামলায় অন্তত ৫জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া নিহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিক বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাসাস যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম সায়েম মজুমদার শিপু বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়ন বাসন্ডা গ্রামে সামিজিক একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াত ছিল। দাওয়াত শেষে গফুর ভূঁইয়া তাকে (শিপু) বলেন কাকৈরতলা অফিসে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বিকেলে। মতবিনিময় সভায় আসার পথে বিএনপির অপরপক্ষ মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। হামলায় নিহত হয়েছেন হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া।

নাঙ্গলকোট উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম মনিরের ভাষ্য, বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী সম্মেলন ছিল। প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া। সম্মেলন সুন্দরভাবেই সফল হয়েছে। কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। সেলিম উদ্দিনের নিহতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি নিয়ে আগে কিছু হয়েছে কিনা জানি না।’

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একে ফজলুল হক জানান, সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া নামে একজনের মৃত্যুর কথা শুনেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ব এনপ ম ব শ ব র আলম ভ ন ত কর ম র সমর থ ত ব এনপ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ২ জন নিহত: বিএনপির ১৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুরে রায়পুর উপজেলায় খাসেরহাট এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুইজন নিহতের ঘটনায় ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংঘর্ষে নিহত স্বেছাসেবকদলের নেতা জসিম উদ্দিন ব্যাপারী হত্যা মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভোররাতে ঢাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আবুল খায়ের গাজী, খালিদ গাজী, জাকির হোসেন, আবদুল মান্নান গাজী, সিদ্দিক আলী, সোলায়ানমান দেওয়ান, নেসার উদ্দিন, ইমাম হোসেন, মিজান সরদার, শাহদাত হোসেন, খিজির আহমেদ, তসলিম উদ্দিন, হানিফ দেওয়ান ও হারুন।

এর আগে বিএনপিকর্মী সাইজ উদ্দিন হত্যা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে একই ঘটনায় দুটি হত্যা মামলায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাররা সবাই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।

আরো পড়ুন:

বিএনপি কারচুপির নির্বাচন সমর্থন করে না: রুমিন ফারহানা

৩১ দফা ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে: তারেক রহমান

বিষয়টি নিশ্চিত করেন রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি জানান, গত ৭ এপ্রিল সংঘর্ষে বিএনপির দুইজন মারা যায়। এ ঘটনায় দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই দুই মামলায় ৭৪ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো ২৩০ জনকে আসামি করা হয়। 

অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

গত ৭ এপ্রিল আধিপত্যা বিস্তার নিয়ে  রায়পুর উপজেলার ২নং চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজ ও উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব শামীম গাজী গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় বিএনপিকর্মী সাইজ উদ্দিন মারা যায়। এর সাত দিন পর আহত স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা জসিম উদ্দিন ব্যাপারী ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

ঘটনার তিনদিন পর নিহত সাইজ উদ্দিনের ভাই হানিফ দেওয়ান বাদী হয়ে বিএনপি নেতা ফারুক কবিররাজকে প্রধান করে ২৬ জনের নাম উল্লেখ ও ১৮৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। 

ঘটনার ৮ দিন পর জসিম উদ্দিন ব্যাপারী নিহতের ঘটনায় তার বাবা হজল করিম ব্যাপারী বাদী হয়ে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ এবং আরো ৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে রায়পুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

এ সব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও কৃষকদলসহ অঙ্গসংগঠনের ১৬ নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে রায়পুর উপজেলা বিএনপি। 

ঢাকা/লিটন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ২ জন নিহত: বিএনপির ১৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার