গোপালগঞ্জ সদর ও কোটালীপাড়া উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে দেয়ালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত পোস্টার টানানো হয়েছে। করা হয়েছে দেয়াল লিখনও।

আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে জেলা ও কোটালীপাড়া উপজেলা সদরের বিভিন্ন দেয়ালে এ পোস্টার ও দেয়াল লিখন দেখা যায়। তবে পুলিশ বলছে, বিষযটি তাদের জানা নেই।

বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, জেলা ও উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। পোস্টারে উপরে লেখা, ‘আগেই ভালো ছিলাম’। মাঝে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। এরপরে লেখা, ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’। পোস্টারের একেবারে নিচের অংশে লেখা, ‘বঙ্গবন্ধু রিজার্ভ ফোর্স, গোপালগঞ্জ জেলা’। ধারণা করা হচ্ছে, এ সংগঠন থেকে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে এ পোস্টার ও দেয়াল লিখন করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

বাবার হত্যাকারীদের শেখ হাসিনা রক্ষা করেছেন: রেজা কিবরিয়া

ন্যায়বিচারের স্বার্থে ভারত হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে, আশা ক্যাডম্যানের

বিশেষ করে, কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের বাউন্ডারি দেয়াল, পৌরসভার দেয়াল, আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়সহ বিভিন্ন অফিসের দেয়াল ছেয়ে গেছে এ পোস্টারে। এমন পোস্টারে জেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পথচারীসহ উৎসুক মানুষ এ পোস্টার দেখছেন। 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকা বা গোপালগঞ্জে বিগত দিনে ‘বঙ্গবন্ধু রিজার্ভ ফোর্স’ নামে কোনো সংগঠন চোখে পড়েনি। নতুন এ সংগঠন সম্পর্কে জানার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আবুল কালাম আজাদ জানান, পোস্টার লাগানোর বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তারা খতিয়ে দেখছেন।

ঢাকা/বাদল/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ গ প লগঞ জ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে মামলার রায় শুনে আদালত চত্বরে বিক্ষোভের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ

পঞ্চগড়ে হত্যা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে বাদীপক্ষের লোকজনের বিক্ষোভ, আদালতের বিষয়ে সম্মানহানি ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মিথ্যা তথ্য দেওয়ার বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. আদম সুফি তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রতিবাদ জানান।

এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার সকালে আইনজীবী সমিতির জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছিল। মো. আদম সুফির সভাপতিত্বে ওই সভায় জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আইবুল আলম আঙ্গুরকে প্রধান করে চারজন আইনজীবীর সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা জজ আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) খলিলুর রহমান, পঞ্চগড় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজলসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে মো. আদম সুফি বলেন, গত ২০ মার্চ পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলার রায় প্রকাশের পর উচ্ছৃঙ্খল কিছু ব্যক্তি আদালতের বিষয়ে সম্মানহানিকর ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যে পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতি দুঃখ প্রকাশসহ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি বস্তুনিষ্ঠ নয়। কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি আদালত ও আইনজীবীদের সম্মান ক্ষুণ্ন করার হীন উদ্দেশ্যে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।

গত রোববার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা জজ আদালত চত্বরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনায় পক্ষে-বিপক্ষে করা দুটি মামলার আসামিদের বেকসুর খালাসের রায় শুনে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন হত্যা মামলার বাদীপক্ষের লোকজন। বিক্ষোভে হত্যা মামলার বাদীপক্ষের লোকজন ন্যায়বিচার পাননি দাবি করে আদালতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আদালতে আসা উৎসুক লোকজন সেখানে ভিড় করেন। বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংবাদ সম্মেলনে মো. আদম সুফি আরও বলেন, রায় ঘোষণার পর আদালতের উদ্দেশে বিক্ষোভকারী যে ধরনের স্লোগান দিয়েছেন, তা আদালতকে অসম্মান করার শামিল। এ ছাড়া বিভিন্ন সাংবাদিকদের কাছে যেভাবে টাকাপয়সা লেনদেনের কথা বলছিলেন, তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পঞ্চগড়ে বিচারকেরা সুশৃঙ্খল পরিবেশে তাঁদের বিচারকার্য পরিচালনা করবেন এবং জেলার মানুষ ন্যায়বিচার পাবেন এমনটাই তাঁদের কামনা। কিন্তু কেউ যদি এই সম্মান আর আস্থার জায়গাটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তা খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদেরও সহায়তা চান।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ৩০ মার্চ জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের ঝালিঙ্গিগছ এলাকায় কসির উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী সামসুল হকের পরিবারের লোকজনের জমি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন সকালে কসির উদ্দিনের ছেলে মো. এরশাদ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই দিনই রাতে এরশাদের বাবা কসির উদ্দিন বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া থানায় ওই ঘটনায় সামসুল হক পক্ষের ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পর ২০১১ সালের ১৪ জুন অপর পক্ষ সামসুল হকের স্ত্রী রনজিনা বেগম পঞ্চগড় আদালতে কসির উদ্দিন পক্ষের ১৯ জনকে আসামি করে একই ঘটনায় একটি পাল্টা মামলা করেন। দুটি মামলার কার্যক্রম একই আদালতে চলছিল। দীর্ঘদিন আইনি প্রক্রিয়া শেষে কোনো পক্ষই অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় গত রোববার দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম রেজাউল বারী দুটি মামলার সব আসামিকেই বেকসুর খালাসের রায় দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ