ব্লাড ট্রান্সফিউশন সোসাইটির সভাপতি ডা. আতিয়ার, সম্পাদক ডা. খায়রুল
Published: 1st, February 2025 GMT
ব্লাড ট্রান্সফিউশন সোসাইটি অফ বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহযোগী অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমানকে সভাপতি এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. খায়রুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এছাড়াও কমিটির কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা.
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) মুন্সিগঞ্জের ঢালী'স আম্বার রিসোর্টে সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নবগঠিত ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি পরবর্তী কার্যকাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সোসাইটি অফ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে।
এর আগে সমিতির এজিএম উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল ইসলাম।
সভায় সংগঠনের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, গবেষণা কার্যক্রম এবং চিকিৎসা উন্নয়নে বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এতে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় দুই শতাধিক রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করেন।
সভায় আলোচনার ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। নবগঠিত ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি পরবর্তী কার্যকাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন সোসাইটি অফ বাংলাদেশের নেতৃত্ব প্রদান করবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ১৯৯৫ সালে ব্লাড ট্রান্সফিউশন সোসাইটি অফ বাংলাদেশ গঠিত হয়। সংগঠনটি রক্ত পরিসঞ্চালন সংক্রান্ত গবেষণা, উন্নয়ন এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে সমন্বয় সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
কমিটিতে সহ-সভাপতি করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. ফারহানা ইসলাম, ডা. এফ. এম. এ. মো. মুসা চৌধুরী, ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম, ডা. জেরিন মোসফেকা রহমান ও অধ্যাপক ডা. তাশমিম ফারহানা দীপ্ত। যুগ্ম সম্পাদক হলেন ডা. দানিশ আরেফীন বিশ্বাস, ডা. কাশফিয়া ইসলাম ও ডা. ফারহানা জামান।
এছাড়াও কমিটির সংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন ডা. খান আনিসুল ইসলাম, বৈজ্ঞানিক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আবদুল কাদের, প্রকাশনা সম্পাদক ডা. সোনিয়া শরমিন মিয়া, অফিস সম্পাদক ডা. এ.বি.এম. আল-মামুন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ডা. জান্নাতুন নূর স্বর্ণা, গণমাধ্যম ও প্রচার সম্পাদক ডা. জিয়া উদ্দিন আহমেদ ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ডা. তামান্না আফরোজ।
সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির হলেন- ডা. মুরাদ সুলতান, ডা. কাজী নওশাদ হোসেন, ডা. মাঞ্জুমা রহমান, ডা. সাবরিনা ইয়াসমিন বিন্নী, ডা. জোবাইদা জান্নাত খুশী, ডা. তানজিন আরা করিম, ডা. তানজিলা তাবিব চৌধুরী, ডা. জেরিনা ফেরদৌস, ডা. হাসিবা আক্তার ভূঁইয়া, ডা. মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন মিয়া, ডা. জিনাত ঈশিতা আনসারি, ডা. নাদিয়া শারমিন তৃষা ও ডা. শারমিন ডালিয়া ইসলাম।
ব্লাড ট্রান্সফিউশন সোসাইটির ২০২৫ সালের কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টা হলেন অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল ইসলাম। উপদেষ্টামণ্ডলীতে আরও যারা আছেন অধ্যাপক ডা. জলি বিশ্বাস, অধ্যাপক ডা. হুসনে আরা বেগম, অধ্যাপক ডা. এম. এ. গফুর, অধ্যাপক ডা. মুনশি মো. হাবিবুল্লাহ, অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম ও অধ্যাপক ডা. আয়েশা খাতুন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন দলের পরবর্তী কর্মকাণ্ডের দিকে দৃষ্টি সব দলের
ছাত্র-তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) রাজনীতিতে স্বাগত জানিয়েছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। সংশ্লিষ্ট নেতাদের কারও কারও মতে, জুলাই-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের গড়া নতুন দলটি রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত হলো। এখন দলটি কী কর্মকাণ্ড করে, সেদিকেই সবার দৃষ্টি থাকবে। দলটি কী ধরনের ভূমিকা রাখে, তার ওপর নির্ভর করবে এর ভবিষ্যৎ।
গতকাল শুক্রবার এনসিপির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্তত ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন দল প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদের রাজনীতিতে আসা দেশের জন্য ইতিবাচক। ছাত্রদের এই যাত্রাকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। আমরা নতুন দলের সাফল্য কামনা করছি।’
তবে বিএনপির এই নেতা নতুন দলটির আত্মপ্রকাশ ঘিরে কিছু প্রত্যাশার কথাও জানান। তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, আমাদের কোনো ভুল পদক্ষেপ, বহু সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সাফল্যকে বিনষ্ট করতে পারে। আমরা আশা করি, সব রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে এবং গণতন্ত্রের প্রশ্নে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।’
এনসিপির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ দলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার দুই আমিরও অংশ নেন। ছাত্রদের সঙ্গে শুরু থেকেই জামায়াতের একটা সুসম্পর্কের কথা সব মহলে আলোচনায় ছিল।
নতুন দল সম্পর্কে জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে দলটির আত্মপ্রকাশ হলো, যারা জুলাই-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদেরই অংশ। বিগত ৫৩ বছরে দেশে সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত সুস্থ রাজনীতির সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। সেখানে তারা যদি জুলাই-অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্য নিয়ে এগোতে পারে, আমাদের রাজনীতির যে তিক্ত অতীত, পরস্পর শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য, অসত্য তথ্য নিয়ে ঘায়েল করার চেষ্টা—এসব ক্ষেত্রে সুস্থ রাজনীতির চর্চায় অবদান রাখতে পারে; তাহলে জাতি উপকৃত হবে, দেশের রাজনীতির পরিবেশও সমৃদ্ধ হবে।’
এনসিপির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিও।
মাহমুদুর রহমান মান্না প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনীতির চর্চা এবং এর বিকাশ ও বিস্তার যত বেশি হয়, ততই ভালো। তাদের আত্মপ্রকাশে খুশি হয়েছি, আশাবাদীও হতে চাই। কারণ, তারা সেই শক্তি, যারা চব্বিশে অসাধ্যকে সাধন করেছে।’
তবে ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না নতুন দলের নেতৃত্ব সম্পর্কে নিজের কিছু পর্যবেক্ষণও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সরকার উৎখাতের আন্দোলন ও দেশকে বদলে দেওয়ার আন্দোলন এক জিনিস নয়। এটা অনেক বেশি পরিমাণে জ্ঞানের, অভিজ্ঞতার লড়াই। দেশ বদলে দেওয়ার জন্য সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ১৫টি সংস্কার কমিশন হয়েছে। ছয়টি কমিশন রিপোর্টও জমা দিয়েছে। এই রিপোর্টগুলো পড়লে বোঝা যায়, কতখানি জানতে হবে, কত জ্ঞান দরকার। তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা দল করার আগে তাদের গভীর চিন্তার মনে হয়েছিল, এখন অ্যাংগরি ইয়াং ম্যান মনে হয়েছে।’
ছাত্র-তরুণেরা যে ধরনের ঘোষণা দিয়ে সামনে এসেছে, সেটা রক্ষা করতে পারলে তারা একটা গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘তবে, তারা আগামী দিনগুলোতে কী ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করবে, নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণে ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় ন্যূনতম যে জাতীয় ঐক্য দরকার, সে ক্ষেত্রে কী ভূমিকা রাখবে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।’
এদিকে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর থেকে জামায়াতের ক্ষমতামুখী রাজনৈতিক তৎপরতা, অন্যদিকে জুলাই-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী ছাত্র-তরুণদের নতুন দল; সব মিলিয়ে রাজনীতি ও নির্বাচনে বিএনপির নতুন প্রতিদ্বন্দ্বীর উত্থানের ইঙ্গিত মিলছে। যদিও বিষয়টিকে খুবই স্বাভাবিক বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুধু তারা (জাতীয় নাগরিক পার্টি) কেন, আরও দলও তো আছে। নির্বাচনে-রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী তো থাকবেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে তো শেখ হাসিনার (একতরফা) রাজনীতিই হয়ে গেল। যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে সবার অধিকার আছে যার যার দাবি-অঙ্গীকার নিয়ে ম্যান্ডেটের জন্য জনগণের কাছে যাওয়ার। জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’