বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‍“জুলাই-আগস্টের বিপ্লবসহ দেশের সব গণহ্যাতার বিচার করতে হবে। যাদেরকে গুম করা হয়েছিল বা এখনো যাদের গুম করে রাখা হয়েছে, এই দুইটি অপরাধের বিচার করতে হবে। অন্য বিচার আস্তে আস্তে হোক, সেগুলো নিয়ে আমাদের অসুবিধা নেই। তবে অগ্রাধিকার দিয়ে এই দুইটি বিচার খুব দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে। এটা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য না, এই বিচার করতে হবে সমাজকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য।”

তিনি বলেন, “মেধাবীরা দেশ থেকে পড়ালেখার জন্য অন্য দেশে গেলে আর ফেরে না। দুই থেকে আড়াইশ বছর আগেও আমাদের দেশের ওপর মোগল, ব্রিটিশ ও পর্তুগীজরা ঝাপিয়ে পড়তো ভাগ্য গড়ার জন্য। এখন উল্টো রথ কেন? আমাদের দেশের নেতারা বলে, দেশের চেয়ে দল বড়। আমরা দেখি দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়।  ধোঁকাবাজির রাজনীতি যারা করবে, তাদের মাধ্যমে দেশের আমূল পরিবর্তন সম্ভব নয়।”  

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সরকারি জুবিলি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

আরো পড়ুন:

নির্বাচনের আগেই বিচার করতে হবে: সাদ্দাম

জামায়াত-বিএনপির মধ্যে কোনো সংঘাত নেই: দুদু

ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, “সারা দেশের কোথাও আমাদের নেতাকর্মীরা বালু মহাল, জল মহাল অথবা হাট-বাজার বা রাস্তাঘাটের ওপর ঝাপিয়ে পড়ছে না। এমন কোনো অভিযোগও নেই। আমাদের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি করছে না। আমাদের নেতারাও মামলা বাণিজ্য করছে না। তারা জানে এগুলো করা হারাম। আমি মনে করি, যারা রাজনীতি করে তারা এমন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হবেন না।” 

তিনি আরো বলেন, “সব ধর্মের মানুষের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। গত জালেম সরকার ১০ হাজার রাজাকারের তালিকা তৈরি করেছে। সেই তালিকায় ৮০ ভাগ লোকই আওয়ামী লীগের। আমরা যদি ক্ষমতায় যেতে পারি, তা হলে আমরা শিক্ষায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব। আমরা যে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলব সেই শিক্ষা হবে কর্মমুখী।”  

আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “তাদের অনেকেই আমাদের পাসপোর্ট-ভিসা ও টিকেট ছাড়াই অমুক দেশে তুমুক দেশে পাঠিয়ে দিতেন। তারাই এখন পালিয়ে গেছেন পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া। দুনিয়ার জেলকে আমরা পরোয়া করি না। আমাদের মাথার তাজ পাঁচজন নেতাকে একে একে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তারা অপশক্তির সঙ্গে আপস করেননি।” 

তিনি বলেন, “আমরা চাই আমাদের বেশি বেশি সমালোচনা করুন। সমালোচনা করলে আমাদের কাজের গতি আরও বাড়বে। আমরা যদি ভালো কাজ করতে না পারি, তাহলে আমাদেরকে ছেড়ে যাবেন। আমরা জনগণের সমথর্ন নিয়ে ক্ষমতায় যেতে পারলে সুনামগঞ্জকে উন্নয়নের গতিতে এগিয়ে নিয়ে আসা হবে। যদি আমরা ক্ষমতায় যেতে না পারি তাহলে দাবি আদায়ের জন্য আপনাদের সাথে আন্দোলন করে দাবি আদায় করবো উন্নয়নের জন্য।”

জামায়াতের আমির বলেন, “আমি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে ডাক্তার হিসেবে কাজ করেছি। সুনামগঞ্জ মাছের অভয়াশ্রম। আমাদের দেশের প্রায় ৭৮ শতাংশ মানুষ যে কোনো ভাবেই হোক না কেন কৃষির সঙ্গে জড়িত।” 

 

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক মো. আব্দল্লাহ ও জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট রেজাউল করিমের যৌথ সঞ্চালনায় এবং সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা তোফায়েল আহমদ খাঁনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট মহানগর উত্তরের আমির ফখরুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট জেলা শাখার আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, সিলেট মহানগর শিবির সভাপতি শাহীন আহমেদ। 

ঢাকা/মনোয়ার/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন মগঞ জ ব চ র করত ইসল ম র র জন য কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলাডেলফিয়ায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিধ্বস্তে নিহত ৬

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বিধ্বস্তের ঘটনায় ছয় আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। শনিবার ফিলাডেলফিয়ার মেয়র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিটে উত্তর-পূর্ব ফিলাডেলফিয়া বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করার পর লিয়ারজেট ৫৫ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানবন্দর থেকে চার মাইলেরও কম দূরে এটি বিধ্বস্ত হয়।

এফএএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে ফ্লাইটটি মিসৌরির স্প্রিংফিল্ড-ব্র্যানসন জাতীয় বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিল। ফিলাডেলফিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ অংশে অবস্থিত তিন তলা বিশিষ্ট শপিং সেন্টার রুজভেল্ট মলের কাছে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। যে এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেটি ছাদযুক্ত আবাসন এবং দোকানপাটে পরিপূর্ণ।

ফিলাডেলফিয়ার মেয়র চেরেল পার্কারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিধ্বস্ত বিমানটিতে থাকা ছয়জনের সবাই নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে এক শিশু ও তার মা, একজন ডাক্তার, প্যারামেডিক, পাইলট এবং কোপাইলট রয়েছেন।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ