বই প্রকাশের আগে পাণ্ডুলিপি যাচাইয়ের অনুরোধ হাস্যকর: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
Published: 1st, February 2025 GMT
বইমেলায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়াতে বই প্রকাশের আগে ডিএমপির পাণ্ডুলিপি যাচাইয়ের অনুরোধকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে একটা সংবাদ ভুল-বোঝাবুঝি সৃষ্টি করছে। পুলিশের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, বই ছাপানোর আগে বাংলা একাডেমি বা পুলিশকে পড়তে দেওয়া উচিত। এটা অবিশ্বাস্য, এটা হাস্যকর। আমাদের সরকারের নীতিমালার আশপাশেই নেই।’ শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। সেটা যদি আমাকে গালাগালি করেও হয়, এতে কিছু যায় আসে না। আর বই প্রকাশ সেন্সর করব, এটা হাস্যকর। এই ভুল–বোঝাবুঝি এখানেই দূর করতে চাই। অন্তর্বর্তী সরকারের বই সেন্সরের পরিকল্পনা নেই। ওই পুলিশ কর্মকর্তা যদি বলে থাকেন, সেটা তিনি তাঁর ব্যক্তিগত ভাবনার কথা বলেছেন। এটার সঙ্গে আমরা একমত নই।
এর আগে শুক্রবার মেলায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এড়াতে বই প্রকাশের আগে পাণ্ডুলিপি যাচাই করতে বাংলা একাডেমিকে অনুরোধ জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তারা চাইছে, ২০২৬ সালের বইমেলা থেকে এ ব্যবস্থা চালু করা হোক। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.
এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এবার বাংলা একাডেমিকে পরামর্শ দিয়েছি। তবে তারা এবার পারবে না। আগামীতে নতুন যে বইগুলো প্রকাশিত হবে, তার পাণ্ডুলিপি আগে যেন বাংলা একাডেমিতে জমা দেওয়া হয়। তারা এটা যাচাই-বাছাই করবে, পড়ে দেখবে যে এমন কোনো লেখা যেন ছাপানো না হয়, যেটা আমাদের সোশ্যাল, কমিউনাল হারমনিকে (সামাজিক সম্প্রীতি) ডিজরাপ্ট (বিঘ্ন) করে এবং দেশদ্রোহী কোনো বক্তব্য বা প্রকাশনা বা সরকারকে ডিস্টাবিলাইজ (অস্থির) করে– এ রকম কোনো ধরনের প্রকাশনা যেন মেলায় না আসে। এটা আমরা অনুরোধ করেছি বাংলা একাডেমিকে।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা তারা নোট নিয়েছেন। আশা করি, আগামী বছর বাংলা একাডেমিকে দিয়ে এটা করাতে পারব। বই প্রকাশনার আগে পাণ্ডুলিপি তাদেরকে দিতে হবে। তারা অনুমতি দিলে সেটা শুধু প্রকাশ হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অমর একুশে বইমেলার সদস্য সচিব সরকার আমিন সমকালকে বলেন, ‘আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো চিঠি পাইনি। একটা নীতিমালা রয়েছে, সে অনুযায়ী বইমেলা পরিচালিত হয়।’
এ নিয়ে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি ওসমান গণি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার নিয়ন্ত্রণ প্রথার পক্ষে নয়। তাহলে বইয়ের ক্ষেত্রে কেন এমন হবে? মেলায় নীতিমালা মেনে বই বিক্রি হবে। কোনো বইয়ের ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে সেটার বিক্রি বন্ধ করতে পারে কর্তৃপক্ষ। বাস্তবতা হলো, দেশে বই প্রকাশের ক্ষেত্রে এমন কোনো বোর্ড বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা নেই, যারা পাণ্ডুলিপি যাচাই করবে। এটা বাংলা একাডেমির কাজ নয়, তারা গবেষণা প্রতিষ্ঠান।’
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘প্রতিবছর প্রায় সাড়ে চার হাজার বই প্রকাশ হয়। এত বই যাচাই-বাছাই করার সামর্থ্য বাংলা একাডেমি বা অন্য কোনো দপ্তরের আছে? তা ছাড়া এটা একটা অদ্ভুত-আজগুবি বক্তব্য। পৃথিবী যখন সামনে এগোচ্ছে, তখন আমাদের প্রকাশনা শিল্পকে পেছনে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আশা করছি, বাস্তবতার নিরিখে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে পুলিশ।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বইম ল ড এমপ এক ড ম ক হ স যকর সরক র বইম ল ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে মাঠে থাকবে বিএনপি: ওয়াহাব আকন্দ
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের যে কোনো কর্মসূচি প্রতিহত করতে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে প্রতিদিন বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির ঘোষণার প্রতিবাদে মহানগর বিএনপি সহযোগী সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ওয়াহাব আকন্দ বলেন, “ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির বিগত ১৭ বছরের আন্দোলন সফল হয়েছে। বিগত সময়ে মাঠে থেকে দলের সব কর্মসূচি সফল করেছি। এখন আওয়ামী লীগ পালিয়ে থেকে হুঙ্কার দিচ্ছে। এই দলের নেতাকর্মীরা মাঠে আসলে শক্ত হাতে তাদের প্রতিরোধ করা হবে।”
আরো পড়ুন:
বালিয়াডাঙ্গীতে বিএনপির মহাসচিবের আশ্বাসে হরতাল প্রত্যাহার
নির্বাচিত সরকারকে হাসিনার বিচার করার সুযোগ দিন: জালাল
এসময় কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি খন্দকার মাসুদুল হক, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির সদস্য আব্দুর রব আকন্দ রতন, দক্ষিণ জেলা যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক গোলাম মসিউর সোহাগ, মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি রুহুল আমিন খান, সহ-সভাপতি মিনহাজুল আবেদীন রাসু, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রানা, সাধারণ সম্পাদক দাউদ রায়হান, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ রবিন, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি খালেদা আতিক, সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাহবুবা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুজ্জামান চাঁন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রতিবাদ মিছিল ময়মনসিংহ নগরীর নতুন বাজারস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়। সেটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এতে জেলা ও মহানগর বিএনপির সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী অংশ নেন।
ঢাকা/মিলন/মাসুদ