ভেনেজুয়েলার সঙ্গে আলোচনার পর ছয় মার্কিন নাগরিক মুক্ত
Published: 1st, February 2025 GMT
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের এক দূতের সাক্ষাৎ হয়েছে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ৬ বন্দিকে মুক্ত করে দিয়েছে দেশটি।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার বিশেষ দূত রিচার্ড গ্রেনেল সোশাল মিডিয়ায় তাদের মুক্তির খবর প্রকাশ করেছেন। বিশেষজ্ঞরা অপ্রত্যাশিত এ ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে জনবহুল এলাকায় বিমান বিধ্বস্ত, হতাহতের শঙ্কা
কুখ্যাত গুয়ানতানামো বন্দিশালা সম্প্রসারণে ট্রাম্পের নির্দেশ, টার্গেট অভিবাসী
গ্রেনেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তার অ্যাকাউন্টে বিমানের ভেতর থেকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন। যেখানে তাকে কারামুক্ত ৬ জন মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে দেখা যায়।
গ্রেনেল পোস্টে লেখেন, ‘আমরা এখন উড্ডয়ন করেছি এবং এই ৬ মার্কিন নাগরিককে নিয়ে দেশে ফিরছি। তারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং বারবার তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।’
ট্রাম্প নিজেও এ ঘটনাকে স্বাগত জানিয়ে এক্সে শেয়ার করা পোস্টে লিখেন, ‘গ্রেনেল ছয় জিম্মিকে ভেনেজুয়েলা থেকে মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনছেন।’
ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দূতের সঙ্গে সম্মানজনক আলোচনা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, এর আগে হোয়াইট হাউজের তরফে ‘মার্কিন জিম্মিদের’ মুক্তি দিতে ভেনেজুয়েলার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল। সেই সঙ্গে ভেনেজুয়েলার যেসব অপরাধীকে ওয়াশিংটন বিতাড়িত করবে, তাদের গ্রহণ করতে দেশটির সম্মতি চাওয়া হয়।
ভেনেজুয়েলার সরকার জানুয়ারিতে মার্কিনিসহ একদল ‘ভাড়াটে সৈনিক’ আটকের ঘোষণা দেয়।
রয়টার্সের খবর বলছে, ভেনেজুয়েলায় ঠিক কতজন মার্কিন নাগরিক আটক ছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে দেশটির কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে অন্তত ৯ জনের কথা বলেছেন। মাদুরোর প্রশাসন তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ এনেছে এবং কয়েকজনকে ‘ভাড়াটে সেনা’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, গ্রেনেলের সফরের মানে এই নয় যে- মাদুরোকে ভেনেজুয়েলার বৈধ নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
ভেনেজুয়েলার বিতর্কিত নির্বাচনের ছয় মাস পর গত মাসে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন মাদুরো। ওই নির্বাচনে মাদুরো পরাজিত হন বলে দাবি করেছে তার বিরোধীরা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
২০২৪ সালের জুলাই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’