কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হেফাজতে যুবদলনেতার মৃত্যুর ঘটনায় জরুরি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেকোনো ধরনের হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে যুবদলনেতার মৃত্যুর বিষয়ে জরুরি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুলিশ কুমিল্লায় তরুণ তৌহিদুর রহমানকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, যিনি নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা আহত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরের দিকে অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বাড়ি থেকে আটক করা হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার মৃত্যুর বিষয়ে জরুরি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যেকোনো ধরনের হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন, উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকার রক্ষা করা এই সরকারের মূল লক্ষ্য, যেখানে দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। সরকার ইতোমধ্যে দেশের বিচারব্যবস্থা সংস্কারের জন্য একাধিক কমিশন গঠন করেছে। অধিকাংশ কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, অপরাধ তদন্ত, অপরাধ ব্যবস্থাপনা এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব সুযোগ নির্মূল করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অর্থবহ সংলাপ চালাবে। এই সংস্কার বাস্তবায়নে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।              

এদিকে, কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে যুবদলনেতা মো.

তৌহিদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের কমান্ডারকে প্রত্যাহার করেছে সেনাবাহিনী। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এছাড়া, মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্‌ঘাটনে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছে আইএসপিআর।

গত ৩১ জানুয়ারি আনুমানিক রাত ৩টায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে আটক হন মো. তৌহিদুর রহমান (৪০)। দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।

ঢাকা/হাসান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত র ন র দ শ সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

কাজ নাকি কাজের ‘রেজাল্ট’কে প্রাধান্য দেবেন?

একটি দিন সবার জন্যই ২৪ ঘণ্টা সময় প্রদান করে। একথা সত্য যে বেশিরভাগ মানুষের সময়ের সমস্যা নেই। তাদের সমস্যা সময়কে প্রায়োরিটি বা প্রাধান্য দেওয়াতে। একটি পার্থক্য মানুষের জীবনে অনেক বড় ব্যবধান তৈরি করে দেয়। জীবন আপনাকে একটি দর্শন দেয়। এখানে প্রধান এবং অপ্রধান অনেক কিছু আছে। সারাদিন ব্যস্ত থাকা সহজ। কিছু মানুষ একের পর এক কাজ করে যান। আর যারা সফল হতে চান, তারা শুধু কাজকে প্রাধান্য দেন না, কাজের ফলাফলকে বেশি প্রাধান্য দেন। সফল হতে চাওয়া মানুষেরা শুধু সময়কে প্রাধান্য দেন না, সময় কীভাবে কাজে লাগাবেন তার ওপর গুরুত্ব দেন।

‘‘আমেরিকান উদ্যোক্তা, লেখক এবং মোটিভেশনাল স্পিকার জিম রবিন বলেন, বিলিয়নিয়ার, লেখক, নেতা কিংবা যেকোনো স্বপ্নবাজ মানুষ প্রত্যেকেই একটি দিনে ২৪ ঘণ্টা সময় পেয়ে থাকেন। কোনো মানুষ এক দিনে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পান না। পার্থক্য তৈরি হয়, কে কীভাবে এই সময় ব্যবহার করছে তার ওপর।’’ 

আরো পড়ুন:

৮ মিনিটের ‘পাওয়ার ন্যাপ’ শরীরে যা ঘটায়

আড়িয়াল বিলের প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় চেষ্টা চলছে: উপদেষ্টা

জিম রবিন

সাফল্য নির্মাণ করতে হয় সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দিনে দিনে একটু একটু করে এগোতে হয়।

জিম রবিনের ভাষায়, ‘‘সাফল্য এমন নয় যে আপনি একবার হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন আর উঠে দাঁড়ালেন। সাফল্য নির্মাণ করতে হয় প্রত্যেক ঘণ্টায়। প্রত্যেক সিদ্ধান্তে। এখানে আমার একটি প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি আপনার ২৪ ঘণ্টাকে কীভাবে কাজে লাগান? ’’

বেশির ভাগ মানুষ সকালে জেগে ওঠেন। তারপর তাদের ফোন চেক করেন। চারপাশের ঘটনা জেনে বুঝে তারা তাদের ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেন। এই প্রভাব পরে তাদের মনে ও কাজে। আশাবাদী মানুষ রাতে ঘুমানোর আগে পরের দিন কি করবেন, কীভাবে করবেন সেই পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেন। এজন্য ১০ মিনিট সময় নিয়ে থাকেন তারা। তারপর সারাদিনের কাজগুলো গুরুত্বেরভিত্তিতে সম্পাদন করার পরিকল্পনা করেন।

জিম রবিন বলেন, ‘‘যারা দিনের শুরুটা দেরিতে করেন, তারা শুরুতেই পিছিয়ে যান। সকালে আপনার দুইটি পছন্দকে প্রাধান্য দিন কোনো অ্যালার্ম সেট করা ছাড়াই সকালে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। এরপর আপনার আপনার নিজের কাজ ও সম্পর্কগুলো প্রাধান্য দিন।– সকালটা সুশৃঙ্খলভাবে শুরু করুন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আপনার মনে রাখার ক্ষমতা বাড়বে। ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠুন। শুধু জেগে উঠতে হবে এই জন্য নয়, আপনি একটি লক্ষ্য পূরনের উদ্দেশ্যে দিনটি শুরু করুন। সকালের শুরুটা আপনার দিন বদলে দিতে পারে। আপনি নিজের জন্য পরিকল্পনা সাজান, এবং নিজেই নিজের বস হয়ে উঠুন।’’

আপনি যখন ঘুম থেকে ওঠেন, তখন আপনার দিনটি শুরু হয়। সুতরাং ভোরে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। সারাদিনে শুধুমাত্র কাজের ওপর গুরুত্ব দেবেন না, গুরুত্বের ভিত্তিতে কাজকে প্রাধান্য দিন। 

জিম রবিন আরও বলেন, ‘‘অনেক মানুষ সারাদিন ব্যস্ত থাকেন। কিছু ব্যস্ত মানুষ জানেন না, কীভাবে দ্রুত এগোতে হয়। কারণ তারা জানেন না দিনের শুরুটা কোন কাজ দিয়ে করবেন। ‘কনফিউজ মুভমেন্ট’ তাদের এগোতে দেয় না।’’ 

সূত্র: জন রবিনের বক্তব্য থেকে অনূদিত

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ