তৌহিদুরের মৃত্যুর ঘটনায় ক্যাম্প কমান্ডার প্রত্যাহার ও তদন্ত কমিটি
Published: 1st, February 2025 GMT
কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক তৌহিদুরের (৪০) মৃত্যুর ঘটনায় সেনা ক্যাম্পের কমান্ডারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে ঘটনা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
অভিযানে আটক তৌহিদুরের (৪০) মৃত্যুর ঘটনাটি দুঃখজনক বলেছে সংস্থাটি।
আইএসপিআর আরও জানায়, ঘটনা তদন্তে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তৌহিদুর নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়। তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।
ওই যুবদল নেতার ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাবা চার দিন আগে মারা গেছেন। শুক্রবার ছিল তার কুলখানি। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি আমাদের বাড়ি আসে। এ সময় পোশাক ও সিভিলে থাকা কয়েকজন আমার ভাইয়ের কাছে অস্ত্র আছে– এমন অভিযোগে রুমে রুমে তল্লাশি করে। তার কাছে অস্ত্র নেই– আমরা বারবার বলার পরও তারা তৌহিদকে ধরে নিয়ে যায়। সকাল থেকে আমরা থানায় ভাইয়ের খোঁজ নিয়েও পাইনি।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মোরশেদ মোবাইল ফোনে আমাদের জানান, শহরতলির গোমতীপারের গোমতী বিলাস নামক স্থান থেকে আমার ভাইকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েছেন। আমরা হাসপাতালে গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
হাসপাতালের সামনে আহাজারি করে আজাদ বলেন, রাজনীতির জন্য আমার ভাই কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। তাকে কেন এভাবে মারা হলো? এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন তিনি।
এসআই মোরশেদ বলেন, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোমতীপারের ঝাকুনিপাড়ার গোমতী বিলাসে গিয়ে যখন সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে তৌহিদকে গাড়িতে ওঠাই, তখনও তার প্রাণ ছিল। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তানভীর আহমেদ বলেন, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তৌহিদুল ইসলামকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেখা যায়, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার সময় সে অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তিনি বলেন, পরিবার থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ না পেলেও পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় একটি মামলা আছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ারুল হক বলেন, যুবদল নেতা তৌহিদ তাদের দলের একজন সৎ ও নিবেদিত নেতা ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি সে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তার দুই মেয়ে রয়েছে। সে অস্ত্রধারী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তার মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তের দাবি করছি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বদল ন ত য বদল তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকার শেষ দেখতে মাঠে শাকিব খান
চলমান বিপিএলকে ঘিরে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান বেশ আলোচনায় ছিলেন। ঢাকা ক্যাপিটালসের মালিকানা নিয়ে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন পর শিরোপার স্বপ্ন দেখেছিল রাজধানীবাসী, তবে সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। প্রথম ম্যাচেই পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন শাকিব খান, আর তার দল পুরো আসরেই ছন্দ খুঁজে পায়নি।
টানা ব্যর্থতার কারণে আগেই প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে ঢাকা ক্যাপিটালস। ১১ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৩টি জিতেছে তারা। আজ নিজেদের শেষ ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে দলটি, আর সেই ম্যাচ দেখতে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছেন ঢাকার মালিক শাকিব খান।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা ক্যাপিটালস। ইনিংসের মাঝপথে স্টেডিয়ামে পৌঁছান শাকিব খান। নির্ধারিত আসনে বসে দলের শেষ ম্যাচ উপভোগ করেন তিনি।
তবে খুলনার বোলারদের দাপটে বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি ঢাকা। তানজিদ হাসান তামিমের হাফসেঞ্চুরির ওপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ১২২ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো সূচনা করে ঢাকার দুই ওপেনার তামিম ও লিটন দাস। ২.৪ ওভারে উদ্বোধনী জুটিতে আসে ২৯ রান। তবে ১০ রান করেই বিদায় নেন লিটন দাস। এরপর ঢাকার হয়ে লড়াই করেন কেবল তামিম।
দলীয় ৫৩ রানের মাথায় হাবিবুর রহমান সোহান ফিরলে চাপ আরও বাড়ে ঢাকার ওপর। ফরমানউল্লাহ ২০ বলে ৭ রান করে বিদায় নিলে ব্যাটিং ধুঁকতে থাকে দলটি। তামিম একাই রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেন। ৩৭ বলে ৭ ছক্কা ও ১ চারে ৫৩ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। তার বিদায়ের পর ব্যাটিং লাইনআপ পুরোপুরি ভেঙে পড়ে।
সাব্বির রহমান কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। ১৭ বলে ২০ রান করে তিনিও ফিরলে ২০ ওভার শেষে ঢাকার ইনিংস থামে ১২২ রানে, ৯ উইকেট হারিয়ে। এখন খুলনা টাইগার্সের সামনে প্লে-অফে ওঠার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে সহজ লক্ষ্য মাত্র ১২৩ রান।