বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রাতিষ্ঠিকীকরণে স্বতন্ত্র প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠন ও সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় স্থাপনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

শনিবার সকালে রাজশাহীর গ্র্যান্ড রিভার ভিউ হোটেলে জুডিশিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশে’ শীর্ষক এক আঞ্চলিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করে সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ।

সেমিনারে নিজের ভাষণে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিতে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি। এ সময় তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরেন। বিশেষ করে সম্প্রতি উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে জারিকৃত অধ্যাদেশের কথা উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি।

সেমিনারে একটি স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস চালু করা এবং সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, দুর্বল তদন্ত ও অপেশাদার প্রসিকিউশন বাংলাদেশে ন্যায়বিচারের অন্যতম অন্তরায়। এ সময় প্রসিকিউটরদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব প্রদান করেন ড.

রেফাত।

বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, পৃথক সচিবালয় বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। প্রস্তাবিত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় বিচারিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।

বিচারপতি আরও বলেন, ইতোমধ্যে সরকারের নিকট পৃথক সচিবালয় গঠনের জন্য একটি বিশদ প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে এটি সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণসহ বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয় সম্পর্কে আয়োজিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম। সেমিনারে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের প্রশিক্ষণ শাখা থেকে গত ১৬ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত সরকারি আদেশ জারি হয়।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্সিয়াল রিপ্রেজেনটেটিভ স্টেফান লিলার দেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন এবং উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের বিভাগের জন্য ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস প্রদান করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউএনড প

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ