নড়াইলের লোহাগড়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা উদ্ধার করেছে। এ সময় চোর চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় লোহাগড়া পৌরসভার মাইট কুমড়া (আশ্রয় প্রকল্প) এলাকা থেকে রিকশাসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায় নড়াইল জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাগুরা জেলার ঘোড়ামারা গ্রামের আবদুল গনি মোল্যার ছেলে মফিজ মোল্যা (৪৮), একই জেলার পাল্লা (খালকুল পাড়া) গ্রামের মুরাদ মোল্যার ছেলে আকাশ মোল্যা (২৮) ও পাল্লা (শেখপাড়া) গ্রামের তরিকুল শেখের ছেলে ইসমাইল শেখ (২৫)।

লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আশিকুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় লোহাগড়া পৌরসভার মাইট কুমড়া (আশ্রয় প্রকল্প) এলাকার শামীম শেখের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় লোহাগড়া থানায় একটি মামলা হয়েছে।

ঢাকা/শরিফুল/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আটকের পর যুবদল নেতার মৃত্যু: সরকারের তদন্তের নির্দেশ

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের (৪৫) মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বরাত দিয়ে প্রেস উইং জানায়, যেকোনো ধরনের হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যা কঠোরভাবে নিন্দনীয়।

বর্তমান সরকারে দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা রয়েছেন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় জীবনের প্রতিটি স্তরে মানবাধিকার রক্ষা করা আমাদের সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

দেশের বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে, যাদের বেশিরভাগই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলেও জানায় প্রেস উইং।

এর আগে শুক্রবার যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর হাসপাতালে তৌহিদুল ইসলাম (৪৫) নামে এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়। নিহত তৌহিদুল জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে এবং ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন।

ওই যুবদল নেতার ভাই আবুল কালাম আজাদ টিপু সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাবা চার দিন আগে মারা গেছেন। শুক্রবার ছিল তার কুলখানি। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি আমাদের বাড়ি আসে। এ সময় পোশাক ও সিভিলে থাকা কয়েকজন আমার ভাইয়ের কাছে অস্ত্র আছে– এমন অভিযোগে রুমে রুমে তল্লাশি করে। তার কাছে অস্ত্র নেই– আমরা বারবার বলার পরও তারা তৌহিদকে ধরে নিয়ে যায়। সকাল থেকে আমরা থানায় ভাইয়ের খোঁজ নিয়েও পাইনি।

তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মোরশেদ মোবাইল ফোনে আমাদের জানান, শহরতলির গোমতীপারের গোমতী বিলাস নামক স্থান থেকে আমার ভাইকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েছেন। আমরা হাসপাতালে গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ দেখতে পাই। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

হাসপাতালের সামনে আহাজারি করে আজাদ বলেন, রাজনীতির জন্য আমার ভাই কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছেন। তাকে কেন এভাবে মারা হলো? এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন তিনি।

এসআই মোরশেদ বলেন, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোমতীপারের ঝাকুনিপাড়ার গোমতী বিলাসে গিয়ে যখন সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে তৌহিদকে গাড়িতে ওঠাই, তখনও তার প্রাণ ছিল। হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তানভীর আহমেদ বলেন, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ তৌহিদুল ইসলামকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দেখা যায়, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার সময় সে অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তিনি বলেন, পরিবার থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ না পেলেও পুরো বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানায় একটি মামলা আছে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনোয়ারুল হক বলেন, যুবদল নেতা তৌহিদ তাদের দলের একজন সৎ ও নিবেদিত নেতা ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি সে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তার দুই মেয়ে রয়েছে। সে অস্ত্রধারী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তার মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তের দাবি করছি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ