শেষ পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদকেই পেল ম্যানচেস্টার সিটি। তবে বুধবার প্লে-অফ নিশ্চিত করার পর সিটি বস পেপ গার্দিওলা বলেছিলেন, সামনে যে দলই আসুক, তাদেরই হারাতে প্রস্তুত তাঁর দল। তবে গতকাল ড্রয়ের পর স্প্যানিশ এ কোচের সুর কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগের ঠাসাঠাসি সূচির কারণে নাকি রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে তাঁর দল ভালো কিছু নাও করতে পারে।

১১ বা ১২ ফেব্রুয়ারি ১৫ বারের শিরোপাজয়ী রিয়ালকে আতিথ্য দেবে সিটি। পরের সপ্তাহ মাদ্রিদে যাবে সিটি। তবে এই দুই লেগের মাঝে লিগেও বিগ ম্যাচ রয়েছে তাদের। রোববার আর্সেনালের বিপক্ষে লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হবে তারা। ৮ ফেব্রুয়ারি এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ড খেলেই রিয়ালের বিপক্ষে প্রস্তুতি শুরু করবে তারা। রিয়ালের বিপক্ষে প্লে-অফের প্রথম লেগ খেলে ১৫ ফেব্রুয়ারি লিগে নিউক্যাসলের মুখোমুখি হবে সিটি। ফিরতি লেগের পরই আবার লিভারপুলের বিপক্ষে ম্যাচ তাদের। 

এ বিষয়টিই ভাবাচ্ছে গার্দিওলাকে, ‘টানা চার বছর রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবো আমরা। এটা আমার কাছে ডার্বির মতো মনে হচ্ছে। রিয়াল কিংবা বায়ার্ন দুই দলই ভীষণ কঠিন প্রতিপক্ষ। কিন্তু প্লে-অফের মাঝে নিউক্যাসল ম্যাচ আছে, এর পর লিভারপুলের বিপক্ষে খেলতে হবে। তাই আমি খেলোয়াড়দের ক্লান্তি নিয়ে চিন্তিত।’

তবে ইউরোপের অন্য দেশগুলো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তাদের দেশের দলগুলোর ভালো প্রস্তুতির জন্য ঘরোয়া ফুটবল সূচিতে পরিবর্তন আনে। কিন্তু ইংল্যান্ডে তেমনটা হয় না বলে জানান গার্দিওলা, ‘অনেক বছর ধরে ইংল্যান্ডে এমনটা হয়ে আসছে। আমার মনে আছে, এ বিষয়টি নিয়ে অ্যালেক্স ফার্গুসন, হোসে মরিনহো ও আর্সেন ওয়েঙ্গারও অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু কিছুই হয়নি। এটা নির্ধারণ করে সম্প্রচারকরা। আমি এটা নিয়ে অভিযোগ করছি না। কারণ এ সূচিতে খেলেই আমরা ট্রেবল জিতেছি। তবে প্লে-অফের জন্য একটু বেশি সময় পেলে আমার ভালো লাগত।’ 

সিটি বস কার্লো আনচেলত্তি অবশ্য আগের অবস্থানেই আছেন। গতকালও তিনি বলেছেন, সিটিকে এড়াতে চেয়েছিলেন তারা, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল তাদের বিপক্ষে না খেলা। কিন্তু আমরা শীর্ষ আটে থাকতে পারিনি।’ আনচেলত্তি অবশ্য সূচি নিয়ে চিন্তিত নন। বেশি ম্যাচ খেলার মতো যথেষ্ট খেলোয়াড় তাঁর হাতে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা

সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’

সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।

গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।

গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’

হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।

সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।

সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।

আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।

সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিব

যেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।

দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।

সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী

সম্পর্কিত নিবন্ধ