চাকরি ফেরত চাইলেন দেড় হাজার পুলিশ সদস্যের
Published: 1st, February 2025 GMT
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা কারণে চাকরিচ্যুত ১ হাজার ৫২২ পুলিশ সদস্য চাকরি ফিরে পেতে পুলিশ সদরদপ্তরে আবেদন করেছেন। ইতোমধ্যে এসব আবেদন পুলিশ সদরদপ্তরে গৃহীত হয়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে কনস্টেবল ১ হাজার ২৫ জন, নায়েক ৭৯ জন, এএসআই ও এটিএসআই ১৮০ জন, এসআই-সার্জেন্ট ও টিএসআই ২০০ জন, পরিদর্শক ১০ জন ও সিভিল স্টাফ ২৮ জন রয়েছেন। শুক্রবার পুলিশ সদরদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আবেদনগুলো পর্যালোচনার জন্য একজন ডিআইজির নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কাজ করছে। এগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ফৌজদারি অপরাধ, আর্থিক দুর্নীতি, নৈতিক স্খলনজনিত, আচরণগত ও বিভাগীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে চাকরিচ্যুত হয়েছেন বা অনেকের আবেদন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ও প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের অধীনে বিচারাধীন রয়েছে, এমন বিষয়গুলো দেখবে গঠিত কমিটি।
চাকরি হারানো এসব পুলিশ সদস্য চাকরি ফিরে পেতে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করছেন। তাদের ‘জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী’ কর্মসূচি থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১৪ বছর আগের ঘটনায় ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বর্তমান এএসপি মো. মিজানুর রহমান এবং একই থানার সাবেক এসআই মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৪ বছর আগের একটি ঘটনায় করা মামলা জুডিশিয়াল (বিচার বিভাগীয়) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার বিকেলে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এ.কে.এম ছিফাতুল্লাহ্ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম। মামলার তদন্ত করবেন ৭ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসাইন।
আদালত সূত্র জানায়, ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি মো. মিজানুর রহমান ও একই থানার সাবেক এসআই মো. মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মরিচারচর গ্রামের মৃত শাহেদ আলীর ছেলে। পরে বিচারকের নির্দেশে আবেদনটি আমলে নিয়ে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।
জানা যায়, মো. মিজানুর রহমান পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হয়েছেন। তিনি বর্তমানে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত। আর মো. মাজহারুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ পরিদর্শক হয়েছেন।
নিহত শফিকুল ইসলামের ছেলে সুমন বলেন, আমার বাবাকে কয়েকজন মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এর মধ্যে এক নম্বর আসামি ছিলেন নজরুল ইসলাম। তার নাম কেটে দিয়ে অন্যজনের নাম লেখা হয়। এরই মধ্যে চার্জশিট হয়ে গেছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নজরুল ইসলামের নাম সরিয়ে দিয়েছেন।
মামলার আইনজীবী শাহজাহান কবির সাজু সমকালকে বলেন, গিয়াস উদ্দিন যে মামলাটি করেছেন, তাতে এক নম্বর আসামির নাম কেটে দেন সাবেক ওসি ও এসআই। তারা আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন।
মামলা ও বাদী সূত্রে জানা যায়, গিয়াস উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী নজরুল ইসলামের পরিবারের বিরোধ ছিল। ২০১০ সালের ২৭ নভেম্বর দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল ইসলামের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। দীর্ঘদিন ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। পরে ২০১৫ সালের ২ জানুয়ারি মারা যান শফিকুল। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মো. মিজানুর রহমান মামলা নেননি।
অপরদিকে ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ করলে থানায় এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারক।
বাদীর পরিবারের অভিযোগ, ওসি মো. মিজানুর রহমান এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ না করে এসআই মো. মাজরুল ইসলামের মাধ্যমে বাদী গিয়াস উদ্দিনকে বলেন, মামলাটি থানায় এসেছে, বাদীর টিপসই লাগবে। পরে ভুল বুঝিয়ে তার টিপসই নেওয়া হয়। পরে আদালত থেকে বাদী মামলার কপি তুলে দেখেন, নালিশি মামলার ১ নম্বর আসামি নজরুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে বাদীর ভাতিজা আবদুর রশিদের নাম লিখে আদালতে পাঠানো হয়েছে।