পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা টানা চারদিন ধরে ৯ থেকে ১০ এর মধ্যেই ওঠানামা করছে। চারদিন ধরে বয়ে চলেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে গোটা এলাকা। সকাল ১০টা ১১টার পর সূর্যের দেখা গেলে স্বস্তি ফেরে জনজীবনে। বিকাল থেকে হালকা কুয়াশার সঙ্গে শুরু হয় তীব্র শীত।

শনিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে তেতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।

আগের দিন শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ২৩ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রতিদিন ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। এতে দিনমজুর, পাথর শ্রমিক, বালু শ্রমিক, রিকশা ভ্যানচালক, কৃষি শ্রমিকসহ সকালে কাজে যোগ দেওয়া খেটে খাওয়া মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায়।

উপজেলা সদরের জগদলহাট এলাকার ইজিবাইক চালক জমিরুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন ধরেই খুব কুয়াশা আর বাতাস। এই বাতাসের জন্য খুব ঠান্ডা লাগছে। সকালে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কোনও যাত্রী নেই, আমাদের আয় ইনকাম নেই। দুপুরের রোদ উঠলে কিছুটা ভালো লাগে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। এরপর ১০ এর নিচেই উঠানামা করছে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। শনিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে তেতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স লস য় স ৯ দশম ক র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ‘ডাকাত’ সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ছনখোলা এলাকায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছে। ডাকাত সন্দেহ করে মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেওয়া হলে তাদের পিটুনি দেওয়া হয়। এ সময় আক্রান্তরা পাল্টা গুলি চালালে স্থানীয় চারজন এলাকাবাসী গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ছনখোলা (পশ্চিম পাড়া) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, গণপিটুনিতে নিহত দুজনের মরদেহ থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গুলিবিদ্ধ অন্তত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত রেজা বলেন, রাত ১০টার দিকে ইওছিয়া ইউনিয়নের চানখোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। প্রকৃত কারণ জানতে আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী আমাকে জানায় যে, ডাকাতরা যখন ডাকাতির চেষ্টা করে, তখন গ্রামবাসী মসজিদের লাউড স্পিকার ব্যবহার করে তাদের উপস্থিতি ঘোষণা করে। এ সময় ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করলে দুজনকে ধরে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।’

সাতানিয়া থানার ডিউটি অফিসার আমজাদ হোসেন জানান, এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে দুজন মারা গেছে। তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এ সময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিবিদ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। তবে কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে সেটা তিনি জানাতে পারেননি। ঘটনাস্থলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অন্যান্য অফিসার আছেন বলে জানান তিনি।
 
স্থানীয়রা জানান, কাঞ্চনার নেজাম নামের এক রাজনৈতিক কর্মী ৫ আগস্টের পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফেরেন। ফিরেই তিনি এলাকায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি শুরু করেন। নেজাম গ্রুপের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। সোমবার নেজাম আরও কয়েকজনকে নিয়ে ছনখোলা এলাকায় গেলে তারাবি নামাজ পড়ে বের হওয়া মুসল্লিরা নেজাম গ্রুপকে ঘিরে ফেলে। মসজিদের মাইক থেকেও তখন ঘোষণা দেওয়া হয় এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নেজাম এলাকাবাসীর ওপর গুলি চালায়। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে পরে নেজাম ও তার সঙ্গীদের গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নেজাম ও ছালেক নামে দুজন মারা যায়। 

একটি পিস্তল, ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার: পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সুদীপ্ত রেজা র বরাত দিয়ে সাতকানিয়া প্রতিনিধি সুকান্ত বিকাশ ধর জানান, গণপিটুনিতে নিহত এক ব্যক্তির কাছে থাকা একটি পিস্তল এবং ৮ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় পুলিশ জানাতে পারেনি। 

এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন, মো. ওবায়দুল্লাহ (২২), মো. নাসির(৩৮), মো. আব্বাস (৩৮) ও মো. মামুন সওদাগর (৪৮)। তাদের হাসপাতালে  চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শান্তু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ