সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণাসহ সাত দফা দাবি পূরণে সময় বেধে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল ও সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। 

শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে  শিক্ষার্থীরা বলেন, “শনিবার বিকেল ৪টার মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য 'বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি' কর্মসূচি পালন করা হবে।”

তারা আরো বলেন, “রেল ও সড়ক পথ এই কর্মসূচি আওতাভুক্ত থাকবে। বিশ্ব ইজতেমার জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের কথা বিবেচনা করে ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ব্যারিকেড শিথিল থাকবে।”

সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল ইসলাম মুক্তার বলেন, “বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যদি রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা না হয় তাহলে উত্তর নর্থ সিটিকে ব্লক করে দিতে আমরা বাধ্য হবো এবং এর জন্য দায়ী থাকবে রাষ্ট্রের অকার্যকর প্রসাশন।”

তিনি আরো বলেন, “গত ১৮ নভেম্বর কর্মসূচি পালনের সময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে প্রতিনিধিদলকে আলোচনায় বসতে বলা হয়। সেখানে আমাদের দাবি যৌক্তিক বলে সম্মোধন করে ৭ দিনের মধ্যে একটি কমিটি গঠন ও এক মাসের মধ্যে ফলাফল জানানোর কথা বললেও ২ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও আমরা কোনো বার্তা পাইনি। রাষ্ট্রের এমন দ্বিচারিতাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধিক্কার জানাই।” 

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ; তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা; অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীদের আবাসিক খরচ বহন; ২০২৪-২৫ সেশন শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্মত ন্যূনতম দুটি বিষয় আইন এবং সাংবাদিকতা বিষয় সংযোজন; একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ; শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে আসনসংখ্যা সীমিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাদানের লক্ষ্যে গবেষণাগার বিনির্মাণের জন্য জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃত আদায়ে শুক্রবার তৃতীয় দিনের মতো  আমরণ অনশন করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। অনশনরত অবস্থায় দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে সন্ধ্যার দিকে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

অন্যদিকে, একই দাবিতে রাত ১০টার দিকে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী রাজধানীর গুলশানে সড়ক অবরোধ করেন এবং রাত ১১টার দিকে কলেজের আবাসিক হলের নারী শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে রাস্তায় অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রধান ফটকে অবস্থান নেন।

ঢাকা/হাফছা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আমরণ অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে এবার আমরণ অনশনে বসেছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার পর থেকে কলেজটির মূল ফটকের সামনে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন।

এ সময় সাত দফা দাবি জানান তারা। শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম তিতুমীর ঐক্যের দাবিগুলো হলো– তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ; তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা; শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ বা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন এবং চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুটি বিষয় আইন ও সাংবাদিকতা বিষয় সংযোজন।
এ ছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ।

এর আগে এ কলেজে তারা ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামফলক টানিয়ে দিয়েছিলেন। এর পর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। এ দাবিতে এখন তারা আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

‘শাটডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি শুরু করে শিক্ষার্থীরা দাবি না মানলে আজ বৃহস্পতিবার থেকে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে গতকাল এ কর্মসূচি থেকে সরে এসে তারা আমরণ অনশন শুরু করেন। 

অনশনে অংশ নেওয়া কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী এফ রায়হান সমকালকে বলেন, তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে স্বেচ্ছায় আমরণ অনশনে যোগ দিয়েছি। তিতুমীর কলেজের ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিত করা ও ঢাকা উত্তরে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ আন্দোলন আজ সময়ের দাবি। আমাদের এই সংগ্রাম শুধু তিতুমীরের নয়, বরং সমগ্র জাতির উচ্চশিক্ষার উন্নয়নের জন্য।

বেল্লাল হাসান নামের বাংলা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি করার পর আমরা অর্জনের চেয়ে হারিয়েছি বেশি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান। ২০১৭ সালে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনে নেমে পুলিশের টিয়ার গ্যাসে চিরতরে হারিয়েছিলেন তাঁর দুই চোখ। সেদিনই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, দেশে শিক্ষার জন্য আর কোনো সিদ্দিক চোখ হারাবে না। শিক্ষা হবে সবার জন্য উন্মুক্ত। 

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় ‘তিতুমীর ঐক্য’। এ জোটের সংগঠক গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম গতকাল সমকালকে বলেন, তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ সাত দফা দাবি পূরণের সরকারি ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রেল ও সড়কপথ অবরোধের ডাক শিক্ষার্থীদের
  • ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের
  • তিতুমীরে অনশনরত আরো ২ শিক্ষার্থী অসুস্থ
  • তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের অনশন চলছে
  • ৮ ঘণ্টায়ও সড়ক ছাড়েনি তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, দুর্ভোগ
  • এবার যুক্তরাজ্য থেকে কোকা-কোলা প্রত্যাহার
  • বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে অনশনে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা, রাস্তা অবরোধ
  • আমরণ অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
  • ৭ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে ‘তিতুমীর ঐক্য’