‘আমার ভাই এর রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ - শুরু হলো রক্তে রাঙানো ভাষা আন্দোলনের মাস। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।
এ মাসের সবচেয়ে বড় আয়োজন বাংলা একাডেমি চত্বরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। এবার ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ প্রতিপাদ্যে শুরু হচ্ছে এই গ্রন্থমেলা। বিকেল ৩ টায় গ্রন্থমেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.
এ ছাড়া ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকেই শুরু হচ্ছে নানা কর্মসূচি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার আবার হয়ে উঠবে জমজমাট। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ মাসে আয়োজন করবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের।
ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও অন্যদিকে গৌরবোজ্জ্বল । পৃথিবীর একমাত্র জাতি বাঙালি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছিল। যা এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও স্বীকৃত। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারির সেই আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেরণা। তারই পথ ধরে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
শুরুটা ১৯৪৭ সালের পর থেকেই। পাকিস্তান কৌশলে বাঙালি জনগোষ্ঠীর ভাষার ওপর প্রথম আঘাত হানে। মায়ের ভাষায় কথার বলাও তারা বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করে। কিন্তু বাংলার মানুষ সেই ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে একবিন্দু পিছু হঠেনি। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অনেক চড়াই-উৎরাই পার করে চূড়ান্ত রূপ লাভ করেছিল ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। বায়ান্নর আগুনঝরা সে দিনগুলো বিশ্বের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে, থাকবে।
বায়ান্নর পয়লা ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক তার স্মৃতিকথনে লেখেন, ‘সে বছর ঢাকায় মাঘের শীতটা বেশি মাত্রায় এসেছিল। মাঘের সে শীত বাঘের গায়ে লাগতে পারে, কিন্তু ঢাকার ছাত্রদের গায়ে তেমন লাগেনি। কারণ একটাই -সাতাশে জানুয়ারি পল্টন ময়দানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন তার দীর্ঘ বক্তৃতায় রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গে বলেন যে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দুই হতে যাচ্ছে। এটুকু বলেই তিনি থামেননি। প্রসঙ্গক্রমে তাদের কায়েদে আজমের ভাষা বিষয়ক মতামত, প্রাদেশিকতা, এক রাষ্ট্রে এক রাষ্ট্রভাষা ইত্যাদি বিষয়েও কথা বলেন তিনি এবং উর্দু বিরোধীদের ‘পাকিস্তানের দুশমন’ বলে ঘোষণা করেন। যেমনটা করেছিলেন, পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ মার্চে ঢাকা সফরে এসে।’
তিনি লেখেন, ‘বায়ান্ন ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনটি এই মাতৃভাষা রাষ্ট্রভাষার ধারাবাহিকতার ফসল। সে দিনটিতে ছিল ছাত্রাবাসের বাসিন্দাদের মনে ধিকিধিকি জ্বলা ক্ষোভ।’
ঢাকা/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচিত সরকারকে হাসিনার বিচার করার সুযোগ দিন: জালাল
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব ড. মো. জালাল উদ্দিন বলেছেন, “একটি নির্বাচিত সরকারের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিন এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার করার সুযোগ দিন। আর সময় ক্ষেপণ না করে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ নিজের ভোট নিজে দিয়ে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।”
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে চাঁদপুরের মতলব নিউ হোস্টেল মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. মো. জালাল উদ্দিন বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র সংস্কারে যে ৩১ দফা দিয়েছেন, সে দফাগুলো বাস্তবায়নে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ফ্যাসিবাদ সরকারের নিপীড়ন, নির্যাতন, হামলা, মামলার কারণে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা গত ১৭ বছর বাড়িতে থাকতে পারেনি। এখন সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়াবার।”
আরো পড়ুন:
ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের বিএনপিতে স্থান নেই: ফরিদ আহমেদ
গাজীপুরে যুবদলের শীতবস্ত্র বিতরণ
তিনি আরো বলেন, “পাশের দেশ ভারত থেকে নানা ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে হাসিনাসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা। তাই ষড়যন্ত্র ঠেকাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন দেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।”
মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক বাদলের সভাপতিত্বে ও পৌর বিএনপির সভাপতি শোয়েব আহমেদ সরকারের পরিচালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপি নেত্রী ইঞ্জিনিয়ার শাহনাজ শারমিন রিতু, মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সাগর, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রধান (ভিপি জাকির), জেলা যুবদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমদাদ হোসেন খান, ছেংগারচর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর প্রধান।
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ