কানাডা, মেক্সিকো আর চীনের মাথায় শুল্কের বজ্রপাত শুরু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই তিন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি করা সব ধরনের পণ্যের ওপর শুল্কের তুফান ছুটিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর তাতে মাথা নষ্ট অবস্থা কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের। অবশ্য এই তিন দেশ বলেছে, তারা ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে। যথাসময়েই সেই অস্ত্র প্রয়োগ করবেন তারা। 

যে কথা সেই কাজ। নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্প ওয়াদা করেছিলেন, আবার প্রেসিডেন্ট হলে প্রতিবেশীসহ চীনের ওপর শুল্কের বোঝা চাপাবেন। করলেনও তাই। ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে উচ্চহারে শুল্ক আদায় শুরুর নির্দেশ দিয়ে দিলেন ট্রাম্প।

কোন দেশের ওপর কত শতাংশ শুল্ক চাপালেন ট্রাম্পর? বিবিসি লিখেছে, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ করে এবং চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন ট্রাম্প। প্রথম মেয়াদেই চীনের জিনিসপত্র আমদানিতে ‘শুল্কের সামুরাই’ চালিয়েছিলেন তিনি। ফলে এবারের ১০ শতাংশ কম মনে হলেও আসলে মোট মিলে তা ২৫ শতাংশের বেশিই হয়ে গেল।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট কেন এই বিপুল পরিমাণ শুল্ক চাপানো হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দেন।

ক্যারোলিন লেভিট বলেন, এই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে ভয়ংকর মাদক ‘ফেন্টানিল’ পাচার করার কারণে। এই ফেন্টানিলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। হেরোইনের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি শক্তিশালী মাদক হলো ফেন্টালিন।

বিবিসি লিখেছে, অবশ্য প্রেসিডেন্টি ট্রাম্প বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বলেছিলেন, চরম মাত্রায় শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্ত মার্কিন সীমানা পেরিয়ে আসা প্রচুর পরিমাণে অবৈধ অভিবাসীর কারণে। পাশাপাশি তিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবিলার কথাও বলেছিলেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি লেভিট বলেছেন, শুল্ক আরোপের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

নির্বাচনি প্রচারে ট্রাম্প যদিও বলেছিলেন, চীনের মালামালের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপাবেন তিনি। অবশ্য সেটি করার আগে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।

ঢাকা/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ