সাঈদীর মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি মেডিকেল কিলিং জানাতে হবে: মিজানুর রহমান আজহারী
Published: 1st, February 2025 GMT
ইসলামী বক্তা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল নাকি মেডিকেল কিলিং তা জানাসোর দাবি জানিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কোরআন ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী শিরক-বিদআতের আস্তানা তছনছ করে দিয়েছিলেন। আজীবন ইসলামকে বিজয়ী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তার মৃত্যুতে গোটা বিশ্ব কেঁদেছে। তার মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল নাকি মেডিক্যাল কিলিং ছিল, তা আমরা এখনও জানি না। এখন বিষয়টি তদন্ত করে জাতির সামনে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।’
শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক প্যারেড ময়দানে ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত পাঁচদিন ব্যাপী ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের পঞ্চম দিনে প্রধান মুফাসসিরের আলোচনায় তিনি এই কথা বলেন।
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে স্মরণ করে মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে বিনা অপরাধে জেলে বন্দি রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ উনাকে জান্নাতবাসী করুক।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড.
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা শামীম সাঈদী বলেন, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ১৩ বছর জেলে জালেম শাসকেরা শান্তিতে থাকতে দেয়নি। তারা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। আমরা সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি।’
ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মাওলানা শামীম সাঈদী, বক্তব্য রাখেন মাওলানা বিএম মফিজুর রহমান, মাওলানা মুনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুজাহিদুল ইসলাম, বিআইএ জামে মসজিদের খতিব সাফওয়ান বিন হারুন আজহারী, অলি খাঁ মসজিদের খতিব মাওলানা মাহমুদুল হাসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক তাওহীদুল হক মিজবাহ।
মাহফিলে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা সাইয়্যেদ আনোয়ার হোসেন তাহের জাবিরী আল মাদানী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন আজহ র র রহম ন ন আজহ র আল ল ম ক রআন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ নির্বাচনে পিআর সিস্টেমে ভোট চান জামায়াত আমীর
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি, সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে মূল কর্তৃত্ব থাকবে নিম্নকক্ষের হাতে। এটি হবে বর্তমান পদ্ধতিতে, আর উচ্চকক্ষ হবে পিআর সিস্টেমে। উচ্চকক্ষ যদি পিআর সিস্টেমে হয় তাহলে নিম্নকক্ষ কেন হতে পারবে না। একই দেশে দুই পদ্ধতির প্রয়োজন কী। পৃথিবীর ৬২টি দেশ পিআর সিস্টেমে নির্বাচন করে। ইউরোপের ২৬টি দেশের মধ্যে ১৬টি পিআর সিস্টেমে নির্বাচন করে। এই সুফল যদি তারা যুগ যুগ ধরে পেয়ে থাকে, তাহলে এ সুবিধা থেকে জাতিকে বঞ্চিত করার কে। এটা যারা মানবেন না মনে করতে হবে, তারা হলো বিচার মানি; কিন্তু তালগাছটা আমার।
আজ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর সার্কিট হাউস মাঠে জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি আরও বলেন, নারী অধিকার সংস্কারের নামে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট জমা হয়েছে। সেই রিপোর্টের বেশ কিছু জায়গায় কোরআন ও সুন্নাহর সম্পূর্ণ খেলাপ কিছু সুপারিশ জমা হয়েছে। কিন্তু যারা এই সুপারিশ পেশ করেছেন; তারা এ দেশের সাড়ে ৯ কোটি মায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তারা যে জায়গায় সমাজকে নিতে চান; সেটা হতে দেওয়া হবে না। প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই এটি বাতিলের জন্য আহ্বান জানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ইউরোপ সফরকালে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষকে বলেছি, বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতিবাজরা ২৮ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। এই টাকা আমাদের জনগণের। পাচার হওয়া টাকা আমাদের ফেরত দিতে হবে। সেইসঙ্গে যেসব দুর্নীতিবাজরা আপনাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছেন তাদেরকেও বাংলাদেশের ফেরত পাঠাতে হবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই; যেখানে কোনো শোষণ, জুলুম ও মানুষে মানুষে বৈষম্য থাকবে না। এমন একটি বাংলাদেশ চাই; যেখানে আর আমরা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হবো না। একই বাংলাদেশে সবার একই অধিকার থাকবে।
প্রায় অর্থ লাখ জনতার উপস্থিতিতে জামায়াতের আমির বলেন, ইসলামের প্রশ্নে আমরা সবাই এক আছি। কোনো বাধার মুখে আমরা থেমে যাবো না। আমরা একমাত্র আল্লার ওপর ভরসা করি। তার শক্তিতে বিজয় আসবেই। এই বিজয়ের মাধ্যমে কোনো দলকে ক্ষমতায় বসানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা সবার জন্য এক ধরনের বিচারব্যবস্থা চাই। বিচার ব্যবস্থা প্রভাবশালীদের জন্য একরকম আর সাধারণত এর জন্য আরেক রকম, এটা আমরা চাই না।
দ্রব্যমূল্য রমজানে থাকলেও বাজার এখন আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে। আমরা সরকারকে বলব, সেদিকে নজর দেন। সমাজের শৃঙ্খলা বিনষ্টের যারা কারণ তাদেরকে পাকড়াও করুন। যারা সাড়ে ১৫ বছর এবং শেষ মুহূর্তে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালিয়েছে তাদের কাউকেই আইনের বাইরে রাখবেন না।
মহানগর জামায়েতের আমীর মাওলানা কামরুল আহসান এমরুলের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দের সঞ্চালনায় কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী মিডিয়া ও প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দসহ অন্যরা।
সম্মেলনটি সকাল ৯টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৮টা থেকে জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীরা মিছিলে মিছিলে সার্কিট হাউস মাঠে জড়ো হন। সম্মেলনে ময়মনসিংহ বিভাগের সব জেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।